কল্যাণপুর পোড়াবস্তিতে আগুন দিয়েছে ‘লালপট্টি’ বাহিনী

রাজধানীর কল্যাণপুর পোড়াবস্তিতে আগুন লাগিয়েছে বহিরাগত ‘লালপট্টি’ বাহিনী। এমন অভিযোগই করেছেন পোড়াবস্তির অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা। তারা বলেছেন, বৃহস্পতিবার যখন গণপূর্তের পক্ষ থেকে উচ্ছেদ অভিযান চলছিল তখন থেকেই মাথায় ‘লালপট্টি’ বেঁধে প্রায় দুই থেকে আড়াইশো লোক পুরো বস্তিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে অবস্থান করছিল।

হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার কারণে বস্তি উচ্ছেদ বন্ধ হওয়ার পর তাদের তোড়জোড় আরো বেড়ে যায়। সারা রাত তারা সুযোগ খুঁজতে থাকে বস্তিতে যে কোনো ধরনের নাশকতা ঘটানোর। বিষয়টি বুঝতে পারে বস্তিবাসী। কিন্তু ভয়ে কিছুই করতে পারেনি। তবে সারা রাত সজাগ থেকে নাশকতা এড়ানোর চেষ্টা করেছে তারা। কিন্তু শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কোনো এক ফাঁকে বস্তির ৮ নম্বর ব্লকে হঠাৎ করে আগুন লাগিয়ে দেয় ‘লালপট্টি’ বাহিনী। আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ওই বাহিনীর কয়েকজনকে ধাওয়া দিয়েও ধরতে পারেনি বস্তির লোকজন।

আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসী মোহাম্মদ শাহেদ, সেলিনা, নুর নাহার, আলামিন, মোহাম্মদ ফারুক, মর্জিনা জানান, ওই লালপট্টি বাহিনীর উদ্দেশ্য প্রথম থেকে বুঝতে পারছিলেন তারা। সকালে আগুন লাগানোর পর বস্তিতে ফায়ার সার্ভিস প্রবেশের প্রত্যেকটা পথ বন্ধ করে রেখেছিল ওই লালপট্টি বাহিনীর লোকজনই। বিশেষ করে মিরপুর বাংলা কলেজের দিকে পথে অহেতুক বিশৃঙ্খলা তৈরি করে ফায়ার সার্ভিসকে বস্তির ভেতরে ঢুকতে বাধা দিয়েছে তারা। এমনকি লালপট্টি বাহিনীর লোকজন ফায়ারসার্ভিসের লোকজনের সঙ্গে বিবাদেও জড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ এসে নিরাপত্তা দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটকে আগুন নেভানোর জন্য ভেতরে নিয়ে আসে। এরইমধ্যে বস্তির লোকজন নিজেদের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, বৃহস্পতিবার বস্তির ১,২,৩, ৬ ও ৭ নম্বর ব্লক উচ্ছেদ হয়েছে। এতে প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার লোক গৃহহারা হয়েছেন। তারা শীতের দিনে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

ক্ষুব্ধ বস্তিবাসী জানিয়েছেন, লালপট্টি পরা বহিরাগতরা মূলত স্থানীয় সাংসদ আসলামুল হকের লোক।