ওমানে প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য দুঃসংবাদ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য খারাপ খবর দিলো ওমান। দেশটিতে বেসরকারি খাতে নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে এখন থেকে আর প্রবাসী শ্রমিকরা কাজ করতে পারবেন না। করোনা মহামারির কারণে দেশজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়ায় ওমান কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থনীতিকে গতিশীল করতে নিজ দেশের নাগরিকদের জন্য কাজের ক্ষেত্র আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে ওমান। এরই অংশ হিসেবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এখন থেকে প্রবাসী শ্রমিকদের বদলে নিজ দেশের নাগরিকদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

উপসাগরীয় দেশটিতে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০ ভাগই প্রবাসী। দেশটিতে বর্তমানে ৪৫ লাখ প্রবাসী শ্রমিকের বসবাস। বেসরকারি খাতের বেশ কিছু ক্ষেত্র জাতীয়করণ করা হবে বলে রোববার এক টুইট বার্তায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে।

ওই টুইট বার্তায় বলা হয়েছে যে, জাতীয়করণের আওতায় থাকা ক্ষেত্রগুলোতে কোনো বিদেশি শ্রমিকের কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তিনি আর তা পুণরায় নবায়ন করতে পারবেন না। কাজের মেয়াদ শেষের পরেই তাকে সেখান থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে।

বিভিন্ন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, দোকান এবং গাড়ির ডিলারশিপ, অর্থনীতি, বাণিজ্যিক এবং প্রশাসনিক ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ওমানের নাগরিকরাই কাজ করতে পারবেন। এখন থেকে এসব ক্ষেত্রে বিদেশি কোনো নাগরিক কাজের সুযোগ পাবেন না।

সেখানে বলা হয়েছে, গাড়ির ডিলারশিপসহ উল্লেখিত এসব সেক্টরের কাজের ক্ষেত্র শুধু ওমানি নাগরিকদের জন্যই সংরক্ষিত থাকবে। যে কোনো ধরনের যানবাহনের চালকের পদও ওমানি নাগরিকর জন্য সংরক্ষিত থাকবে।

এর আগে ২০২০ সালের এপ্রিলে নতুন নির্দেশনা জারি করেছিল ওমান কর্তৃপক্ষ। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন কোম্পানিকে ওমান সরকার নির্দেশ দিয়েছে যে, কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন সেক্টরে বিদেশি কর্মীদের বদলে ওমানি নাগরিকদের নিয়োগ দিতে হবে। বিশেষ করে প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পর্যায়ে অবশ্যই ওমানি নাগরিকদের সুযোগ দিতে হবে। ওমানের নাগরিকদের নতুন কাজের ক্ষেত্র তৈরি করতেই এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

সে সময় অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছিল যে, বিপুল সংখ্যক প্রবাসী এখনও সরকারি সংস্থাগুলোতে পরিচালনা পর্ষদের বিভিন্ন পদ দখল করে রেখেছেন।

করোনা মহামারির কারণে ওমানের অর্থনীতিতে ভয়াবহ ধস নেমে এসেছে। বিশেষ করে তেলের মূল্য হ্রাস পাওয়ায় দেশটির অর্থনীতির গতিশীলতা একেবারেই নেই বললেই চলে।

২০২০ সালে ওমানের অর্থনীতি প্রায় ১০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। ওমান ছাড়াও বাহরাইন, কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব এবং আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোও সরকারি এবং বেসরকারি উভয়ক্ষেত্রেই বিদেশি নাগরিকদের চেয়ে নিজ দেশের নাগরিকদের প্রাধান্য দিচ্ছে।