আলুর কেজি ৫ টাকা, দিশেহারা চাষিরা

আলুর কেজি ৫ টাকা, দিশেহারা চাষিরা

জয়পুরহাট সংবাদাদাতা: প্রতিদিনই কমছে আলুর দাম। ভালো ফলন হলেও বাজারে দাম না থাকায় লোকসানের মুখে পড়ছেন জয়পুরহাট জেলার আলুচাষিরা। বর্তমানে স্থানীয়ভাবে প্রতি কেজি আলু পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৫-১০ টাকা। ফলে খরচের তুলনায় লোকসান বেড়ে যাওয়ায় দিশেহারা তারা।

জেলা শহরের নতুনহাটে আলু বিক্রি করতে আসা চাষিরা জানান, গতকাল যে আলু প্রতি মণ ছিল ৪৫০ টাকা তা আজ বাজারে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ২৫০ টাকার আলু ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এভাবে দিন দিন আলুর দাম কমে যাচ্ছে। রোমানা পাইকারি (লাল) বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা মণ। আর প্রতি কেজি ১০ টাকা। বট পাইকারি (লাল) মিউজিকা আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৬০ টাকা মণ। গ্রেনোলা আলু প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা।

আলুর পাইকারি ক্রেতা জুয়েল ও সুলতান আহম্মেদ বলেন, আলুর বাজার এক দিন আগে যা ছিল পরের দিন তা থাকছে না। দাম হুহু করে কমে যাচ্ছে। আমরা যেসব আলু কিনছি এসব আলু ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা, চট্টগ্রাম, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের মোকামে সরবরাহ করা হচ্ছে। কাঁচাবাজারের মূল্য সঠিকভাবে বলা যায় না। কিন্তু আলুর বাজার একেবারেই উঠছে না।
বাজারে গ্রানোলা আলু বিক্রি করতে আসা চাষিরা বলেন, প্রতি বিঘায় আলুর ফলন হচ্ছে ৫৮-৬০ মণ। আলু চাষে জমিতে ১৮-২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু বর্তমান বাজার হিসেবে আলু বিক্রি করলে ১২-১৫ হাজার টাকার বেশি বিক্রি করা সম্ভব নয়। এতে আমাদের কয়েক হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। সরকারিভাবে রফতানি ও দাম নির্ধারণ করতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান তারা।

কালাই উপজেলার হাজীপাড়া গ্রামের আলুচাষি আনোয়ার হোসেন বলেন, জমি থেকেই আলু বিক্রি করে দিচ্ছি। আজ ৩৭০ টাকা দরে ৮০ মণ মিউজিকা আলু বিক্রি করেছি। তবে প্রতি মণ ১০ টাকা কমে ৩৬০ টাকা দরে ৩০ মণ আলু বিক্রি করেছেন বালাইট গ্রামের মোজাম।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, জেলায় এবার ৪০ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আলু রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৭ হাজার ১০০ হেক্টর, পাঁচবিবিতে ৭ হাজার, কালাইয়ে ১১ হাজার ১০০, ক্ষেতলালে ৯ হাজার এবং আক্কেলপুরে ৬ হাজার ১৫০ হেক্টর জমি জমিতে আলু চাষ হয়েছে। কিন্তু ৪০ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে।

জেলা কৃষি বিপণন বিভাগের মাঠ ও বাজার পরিদর্শক সাখওয়াত হোসেন বলেন, আলুর ভরা মৌসুম চলছে। এবার আলুর ফলন ভালো হয়েছে। এজন্য আলুর দাম কম।