আজও দীর্ঘ জট, বাড়ছে গরু ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ

রাজবাড়ী সংবাদাদাতা: ভীষণ উৎকণ্ঠা আর উদ্বেগ নিয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন গরুর ব্যবসায়ীরা। সময় মতো হাটে পৌঁছাতে না পারলে বিরাট আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা।

এমনিতেই এই সব গরু গরম আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে না। হঠাৎ হিটস্ট্রোকে কোনো একটি গরু মারা গেলে তাদের পথে বসতে হবে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ব্যাপারীরা।

রাজবাড়ী ও মানিকগঞ্জের দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ছোট-বড় মিলিয়ে মাত্র ১৫টি ফেরি চলাচল করছে। গত ঈদে এ রুটে অন্তত ২০টি ফেরি চলাচল করেছিল। এ অবস্থায় হঠাৎ করে যাত্রী ও যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ঘাট এলাকায় মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

প্রচ- রোদ ও ভ্যাপসা গরমে আটকে পড়া যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। পাশাপাশি ট্রাকে থাকা গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন মালিক ও ব্যবসায়ীরা।

দৌলতদিয়া ঘাটে দেখা গেছে, সকাল থেকে ঘাট এলাকায় মহাসড়কে অসংখ্য যানবাহনের দীর্ঘ সারি। ফেরির জন্য প্রতিটি যানবাহনকে মহাসড়কে অপেক্ষা করতে হচ্ছে দীর্ঘ সময়। দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে মহাসড়কের ৪ কিলোমিটার জুড়ে রাস্তার ২ সারিতেই রয়েছে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে লাইনের দৈর্ঘ্য।
এদিকে দৌলতদিয়া ঘাটের ওপর চাপ কমাতে ১৩ কিলোমিটার দূরে গোয়ালন্দ মোড় এলাকায় পুলিশ অপচনশীল মালবোঝাই গাড়িগুলোকে আটকে দিচ্ছে। সেখানেও সৃষ্টি হচ্ছে গাড়ির দীর্ঘ লাইন।

প্রচ- রোদ ও গরমে আটকে পড়া অধিকাংশ গরু অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এ পরিস্থিতিতে গরুর ট্রাকে থাকা রাখালদের হাত পাখা দিয়ে গরুগুলোকে বাতাস করতে ও পানি দিয়ে গা ভেজাতে দেখা গেছে।

চুয়াডাঙ্গা থেকে আসা গরু ব্যবসায়ী আলমাছ শেখ, কুষ্টিয়ার আজিজুল প্রামাণিকসহ অনেকেই গণমাধ্যমকে বলেছেন, তারা লাখ লাখ টাকার গরু নিয়ে ভালো দাম পাওয়ার আশায় ঢাকায় যাচ্ছেন। কিন্তু, দৌলতদিয়া ঘাটে এসে ফেরির জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। প্রচন্ড রোদ-গরমে অধিকাংশ গরু অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় হিটস্ট্রোকে যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তা হলে তাদের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।

মেহেরপুরের গাংনী থেকে আসা বাসচালক শাহীন শেখ বলেন, দুই ঘণ্টার বেশি সময় ঘাটে দীর্ঘ যানজটে আটকে আছেন। এতে যাত্রীরা অধৈর্য হয়ে পড়ছেন। জানি না কখন ফেরির নাগাল পাব। কীভাবে, কখন গন্তব্যে পৌঁছবো বুঝতে পারছি না।’

এক যাত্রীর মন্তব্য, সরকার এখান থেকে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় করলেও যাত্রীদের কোনো সুযোগ করে নাই। কোনো যাত্রী ছাউনি, টয়লেট কিংবা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাউকে আমার চোখে পড়েনি। বিপদে পড়লে কোন হেল্প নম্বর ব্যবহার করবো তাও কোথাও চোখে পড়েনি।’

বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শিহাব উদ্দিন বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে বর্তমানে ছোট-বড় ১৫টি ফেরি চলাচল করছে। দিনে পশুবাহী ট্রাক কিছুটা কম আসায় আশা করছি লাইনে আটকা থাকা যানবাহনগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে পারাপার করা সম্ভব হবে। এ ছাড়া, ঈদ উপলক্ষে আরও দুইটি রো রো ফেরি এই রুটে যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে।’