বিদ্যুতের দাম ১৪.৫% বাড়াতে চায় পিডিবি
![](https://i0.wp.com/newsnine24.com/wp-content/uploads/2016/08/News-Nine24-default.jpg?fit=400%2C250&ssl=1)
পাইকারির পর এবার গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)।
বাইরে বাম দলগুলোর বিক্ষোভের মধ্যে মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) শুনানিতে এই প্রস্তাব দেন পিডিবির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ।
আগের দিনের শুনানিতে ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের নিরীক্ষিত খরচের খরচের ভিত্তিতে বাল্ক বা পাইকারি পর্যায়ে ১৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ বা ইউনিট প্রতি ৭২ পয়সা দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করে পিডিবি।
খুচরা পর্যায়ে দাম বাড়াতে পিডিবির আবেদনে বলা হয়, ‘২০১৫-১৬ অর্থবছরে খুচরা সরবরাহ ব্যয় ইউনিট প্রতি ৬.৯৫ টাকা। বিদ্যমান খুচরা বিদ্যুৎ মূল্যহার ইউনিট প্রতি ৬.৭৩ টাকা। সে তুলনায় ইউনিট প্রতি ঘাটতি ২১ পয়সা। প্রস্তাবিত বাল্ক ট্যারিফ বৃদ্ধির সাথে মূল্যহার সমন্বয় বিবেচনায় ট্যারিফ বৃদ্ধির প্রস্তাবিত হার ১৪.৫ শতাংশ।”
বিইআরসি চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শুনানিতে কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে।
ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম বলেন, “বাল্ক পর্যায়ে বিদ্যুতের দামের সঙ্গে সমন্বয় করে খুচরায় বিদ্যুতের দাম ঠিক করা হবে। যেহেতু বাল্কের বিদ্যুতের দাম এখনও চূড়ান্ত হয়নি, সুতরাং খুচরার দাম নিয়ে আলোচনার উপযুক্ত সময় আসেনি।”
বাল্ক বা পাইকারিতে দাম বাড়ানোর কোনো ‘যৌক্তিকতা নেই’ বলে দাবি করেন তিনি।
গণশুনানিতে পিডিবি ও বিইআরসির টেকনিক্যাল টিমের সদস্যদের কাছে বিভিন্ন প্রশ্ন করে এই খাতের পরিচালন ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য বের করে আনেন শামসুল।
বিদ্যুতের সার্ভিস চার্জ, ডিমান্ড চার্জ, মিটার ভাড়াসহ অন্যান্য চার্জে কোম্পানি ভেদে ভিন্নতা আছে কি না- তা ক্যাব জানতে চাইলে পিডিবির কর্মকর্তারা জানান, ‘কিছুটা ভিন্নতা’ আছে।
ক্যাব বলে, পিডিবিকে ভেঙে সরকারি খাতে নতুন নতুন বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ কোম্পানি করা হচ্ছে। তাতে বিদ্যুতের সরবরাহ ব্যয় ও মূল্যহার বাড়ছে, ভোক্তারা লোকসানে পড়ছে। তাহলে এই প্রক্রিয়ায় কে লাভবান হচ্ছে?
জবাবে পিডিবি কর্মকর্তারা বলেন, যেহেতু এটা সরকারের নীতিগত বিষয়, ফলে এনিয়ে তাদের বলার কিছু নেই।
গত বছর রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে চালু হওয়া বিতরণ সংস্থা নজোপাডিকো গঠনের ফলে দক্ষতা ও সক্ষমতা বাড়লেও বিতরণ ব্যয়হার কিছুটা বেড়েছে বলে ক্যাবকে জানায় পিডিবি।
শুনানিতে পিডিবি ও বিইআরসির কাছে গ্রাহকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ২৫টি বিষয় প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে জানার চেষ্টা করেন ক্যাব উপদেষ্টা শামসুল।
দাম না বাড়ানোর দাবিতে সোমবার বিইআরসিতে বামদের বিক্ষোভ
শুনানিতে বাম দল সিপিবির কেন্দ্রীয় নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, “পিডিবি কম খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারলেও বেসরকারি খাতগুলো দিয়ে অধিক খরচে উৎপাদন করানো হচ্ছে। এর দায়ভার গিয়ে পড়ছে ভোক্তাদের উপর।”
ভবিষ্যতে দাম কমানোর জন্য গণশুনানির আয়োজন করে এসব বিষয়ে মতামত নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড যেসব ব্যয় বিবেচনা করে দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে, তার কারণে ভোক্তাদের ওপর আলাদা চাপের সৃষ্টি হবে।
বিদ্যুতের দাম প্রতি বছর বাড়লেও জনগণের আয় বাড়ছে কি না, সেই প্রশ্ন রাখেন এই বাম নেতা।
গণশুনানিতে কমিশন সদস্য রহমান মুরশেদ, মাহমুদউল হক ভুইয়া, আব্দুল আজিজ খান ও মিজানুর রহমান, পিডিবির সদস্য মো. জহুরুল হক, মো. ফখরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।