বেপর্দা হওয়ার কারণেই নারীরা আজ নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, সমাজে সৃষ্টি হচ্ছে বিশৃঙ্খলা।

মাওলানা সিরাজুদ্দীন: মানবজাতির একমাত্র অনুসরণীয় আদর্শ শেষ নবী হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন, ‘মহিলারা পর্দায় থাকবে। তারা যখন বেপর্দা হয়, তখন শয়তান উঁকি-ঝুঁকি দিতে থাকে কি করে তাদের মাধ্যমে ফিতনা পয়দা করা যায়।”

কোরআন ও হাদীছে কালিমার নির্দেশ মুতাবিক সমস্ত পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই পর্দা করা ফরয। বেপর্দা হওয়ার কারণেই মহিলারা আজ মান, সম্মান, ইজ্জত হারাচ্ছে ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে এবং সমাজে সৃষ্টি হচ্ছে নিত্য-নতুন ফিতনা-ফাসাদ ও বিশৃঙ্খলা। শুধুমাত্র আল্লাহর সম্মানিত বিধান শরয়ী পর্দা পালনের মাধ্যমেই এর থেকে বেঁচে থাকা যেমন সম্ভব, তেমন এ সমস্ত মানহানীকর ফিতনা-ফাসাদ বন্ধ করাও সম্ভব। অন্যথায় মানবরচিত কোনো আইনের মাধ্যমে এ সমস্ত মানহানীকর ফিতনা-ফাসাদ থেকে বেঁচে থাকা যেমন সম্ভব নয়, তেমন তা বন্ধ করাও কস্মিনকালে সম্ভব নয়।

মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “হে নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে এবং আপনার বানাত আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে এবং মু’মিনদের আহলিয়াগণকে বলে দিন- উনারা যেন উনাদের চাদরের একটা অংশ চেহারা ও বুকের উপর টেনে দেয় অর্থাৎ পর্দা করে। পর্দা করা হচ্ছে উনাদের সম্ভ্রান্ত হওয়ার পরিচয় এবং উনাদের বিরক্ত না করার মাধ্যম, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি দয়ালু ও ক্ষমাশীল।” মূলত, বেপর্দা হওয়ার কারণেই মহিলারা আজ মান সম্মান ইজ্জত হারাচ্ছে ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে এবং সমাজে সৃষ্টি হচ্ছে নিত্য-নতুন ফিতনা-ফাসাদ ও বিশৃঙ্খলা।

‘ইসলাম’ শব্দের অর্থ হচ্ছে শান্তি। সম্মানিত ইসলামই পেরেছে এবং পারে যমীনে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে। ইসলামের বাইরে কোথাও শান্তি পাওয়া যায়নি এবং যাবেও না। কাজেই শরয়ী পর্দাই শান্তি স্থাপন করতে পারবে। শরয়ী পর্দার অভাবেই আজ সবদিকেই শুধু অশান্তি আর অস্থিরতা। বিশেষ করে মহিলাঘটিত ফিতনায় জর্জরিত সমাজ। মহিলারা আজ সর্বত্র লাঞ্ছিত, অপমানিত ও অবহেলিত হচ্ছে এবং মান, সম্মান, ইজ্জত হারাচ্ছে। এর সবগুলোর পিছনে কারণ একটাই; তা হলো- সম্মানিত দ্বীন ইসলাম থেকে দূরে সরে যাওয়া; অর্থাৎ সম্মানিত শরয়ী পর্দার বিধান মেনে না চলা। কারণ সম্মানিত ইসলামী বিধান অর্থাৎ সম্মানিত শরয়ী পর্দা মহিলাদের সম্মান, ব্যক্তিত্ব ও পবিত্রতার প্রতীক।

কোরআন শরীফের “পবিত্র সূরা আন নিসা শরীফ, পবিত্র সূরা নূর শরীফ ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ”-এর মধ্যে পর্দা করার ব্যাপারে কঠোর আদেশ-নির্দেশ মুবারক করা হয়েছে এবং পর্দাকে মহিলাদের পবিত্রতা ও সম্মানের কারণ বলা হয়েছে। আর পবিত্র হাদীছে বেপর্দাকে কবীরা গুনাহ, লা’নত ও ফিতনা-ফাসাদ বা বিশৃঙ্খলা ও অশান্তির মূল কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ বর্ণিত হয়েছে, “মহিলারা পর্দায় থাকবে। তারা যখন বেপর্দা হয়, তখন শয়তান উঁকি-ঝুঁকি দিতে থাকে কি করে তাদের মাধ্যমে ফিতনা পয়দা করা যায়।” নাউযুবিল্লাহ!

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “তোমরা দুনিয়া ও বেগানা মহিলা থেকে সতর্ক ও সাবধান থাকো। কেননা বনী ইসরাইলে সর্বপ্রথম যে ফিতনা (খুন) হয়েছে তা মহিলার কারণেই।” কাজেই বর্তমানেও সমাজে যে অশান্তি অরাজকতা, ফিতনা-ফাসাদ, মারামারি, খুন-খারাবী, অশ্লীলতা ইত্যাদির মূলেও রয়েছে বেপর্দা নারী। সুতরাং এসব ফিতনা-ফাসাদ থেকে বাঁচতে হলে শুধুমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত বিধান শরয়ী পর্দা পালনের মাধ্যমেই এর থেকে বেঁচে থাকা যেমন সম্ভব, তেমন এ সমস্ত মানহানীকর ফিতনা-ফাসাদ বন্ধ করাও সম্ভব। অন্যথায় মানবরচিত কোনো আইনের মাধ্যমে এ সমস্ত মানহানীকর ফিতনা-ফাসাদ থেকে বেঁচে থাকা যেমন সম্ভব নয়, তেমন তা বন্ধ করাও কস্মিনকালে সম্ভব নয়। মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা আমাদের সকলকে খাছ শরয়ী পর্দা পালন করার তাওফীক দান করুন। আমীন!

লেখক: গবেষক ও শিক্ষক