সন্ত্রাসবাদ দমনে অতি কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে :প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাসবাদ দমনে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেছেন, তার সরকার এ দানবকে নির্মূল করতে অতি কঠোর ব্যবস্থা নেবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি মনুষ্য দানবদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের অবশ্যই বিজয়ী হতে হবে।
রোববার প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলোর পর্যালোচনাকালে শেখ হাসিনা এ সব কথা বলেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি জনগণের আস্থার সঙ্গে তাদের সাথে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। এ জন্য সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের চেতনা ধ্বংস করা যাবে না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও বন্ধ করা যাবে না। কারণ, জনগণ সবসময় এ দুই                 দানবের বিরুদ্ধে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষকে সন্ত্রাসবাদের ব্যাপারে সব সময় সজাগ থাকার আহবান জানিয়ে বলেন, সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কে আমাদের জনগণকে সতর্ক করতে হবে এবং সামাজিক এই দুষ্কর্মকে মোকাবিলার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।
সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অপরাধীদের বিরুদ্ধে মসজিদ থেকে নিয়মিতভাবে বক্তব্য দিতে হবে। আর সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে সরকারকে যত কঠোর হতে হয় ততটাই হবে।
গুলশানের রেস্তোরাঁয় সন্ত্রাসী হামলার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বহু দেশে এখন এ ধরনের হামলা হচ্ছে। এটা এখন বৈশ্বিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, বেলজিয়াম, জাপান, ভারত ও অন্যান্য দেশে সন্ত্রাসী হামলা সংঘটনের কথা উল্লেখ করে বলেন, অতীতে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় সন্ত্রাসের যে বীজ বপন করা হয়েছিল, এখন তারই বিস্তার ঘটেছে। তবে শত বাধা ডিঙ্গিয়ে হলেও সন্ত্রাসবাদমুক্ত দেশ গড়বে বর্তমান সরকার। বাংলাদেশকে অভিশাপ মুক্ত করতে হবে, আর সেটি আমরা করবোই। জনগণই আমার ভরসা। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়াকে দুঃখজনক হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, কারা তাদের বিপথগামী করছে তা খুঁজে বের করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেখছি সারা বিশ্বে সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে পড়ছে। বাংলাদেশ এর থেকে কিন্তু খুব বেশি দূরে ছিল না। কারণ, এই বাংলাদেশে আমি নিজেই গ্রেনেড হামলার শিকার। এই ধরনের সন্ত্রাসীদের যারা সৃষ্টি করে রেখে গেছে তাদের পরিচয় সবার জানা। আসলে একবার বীজ বপন করলে সেটা সহসা উত্খাত করা যায় না।
এ সময় গুলশান হামলার ঘটনায় বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো রিপোর্ট দিচ্ছিল, আমরা খুব সচেতনও ছিলাম। কিন্তু গুলশানে যে ঘটনাটা ঘটল— আমার মনে হয় পৃথিবীর কোনো দেশে এত দ্রুত সময়ে এই ধরনের একটা ঘটনা ঘটলে সেখান থেকে জীবন্ত মানুষ উদ্ধার করতে আজ পর্যন্ত কোনো দেশ পারেনি। কোনো উন্নত দেশও পারেনি।’

অভিভাবকের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উচ্চ শিক্ষিত পরিবারের ছেলেরা ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াশুনা করে। আমরা তো ভাবি যে তাদের মন অনেক উদার হবে। তারা সত্যিকারের সঠিক ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞান নেবে কিন্তু তারা যে ধর্মান্ধ হয়ে যাবে সেটি কখনো আমরা ভাবতে পারিনি। এ জন্য ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর নজরদারি বাড়াতে হবে। সজাগ থাকতে হবে অভিভাবক ও শিক্ষকদেরও।