উপজাতিদের বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে ব্যাহত পাহাড়ের সব উন্নয়ন

ঢাকা: যোগাযোগ ব্যবস্থার বেহাল দশা ও বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে ব্যহত হচ্ছে পার্বত্য জেলাগুলোর কৃষিসহ সবধরণের উন্নয়ন এবং পর্যটন। পরিস্থিতির ভয়াবহতায় স্থানীয় চরমপন্থী কবলিত পাহাড়ি এলাকাগুলোতে অনেকে বিনিয়োগ করতে চাইছেনা। ইতোমধ্যে ব্যবসায়িক চেইন না পেয়ে আবাদ করেও আগরসহ সম্ভাবনাময় ফসলের আবাদ তুলে দিচ্ছেন অনেক উদ্যোক্তা। বর্তমানে অন্তকলহের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে দখলদারিত্বের প্রতিযোগিতা, বাড়ছে চাঁদাবাজীর পরিমাণ।

সাধারণ ব্যবসায়ী, চাকুরিজীবি, কৃষি পণ্য পরিবহনকারি থেকে শুরু করে কলা ও কচুর লতি বিক্রেতাদের কেউ রেহাই পাচ্ছেনা। গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষকে ১০টাকার পণ্য বেচে ১টাকা দিয়ে আসতে হচ্ছে। এ দৃশ্য পাহাড়ের খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানের বিস্তির্ণ এলাকার।

উন্নয়নের কর্মকান্ডে জড়িত বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের কথায় জানা গেছে, অবৈধ চাঁদাবাজীর কবল থেকে পাহাড়ী বাঙালী কেউ রেহাই পাচ্ছেনা। বিশেষ করে গোষ্টি ও ব্যাক্তি স্বার্থের দ্বন্দ্বে বিভক্ত সবগ্রুপের বেপরোয়া চাঁদার যোগান দিতে যেয়ে সর্বশান্ত হচ্ছে আদীবাসি সাধারণ পাহাড়ি জনগণ। পাহাড়ে চলাচল করতে যেয়ে ৫ থেকে ৬ রকমের চাঁদা গুনতে হয়। চাঁদের গাড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, মাঝারি ৫ টনের গাড়ি ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা এবং বড় গাড়ি বাবদ ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা চাঁদা দিতে হয় পাহাড়ের রাস্তাগুলোতে।

নাম প্রকাশে অনেকে জানান, মতামততো দূরের কথা সাংসারিক কার্যক্রম, পারিবারিক ও ফল বাগান সৃজন এবং কৃষিপণ্য উৎপাদনসহ কোনো ক্ষেত্রেই স্বাধীনতা নেই এখানকার কারো। সবক্ষেত্রেই জোরজবরদস্তির মুখে চাঁদা দিতে বাধ্য হয় সবাই। অপারগতায় মেনে নিতে হয় নিষ্টুর নির্যাতন। এমনকি হত্যা ও পাশবিক নির্যাতনের মতো ঘটনাও। ত্রাসের রাজত্ব কায়েমকারি এখানকার চতুর্ধাবিভক্ত স্থানীয় চরমপন্থী দলগুলোর আদায় করা মোট চাঁদার পরিমাণ সরকারের খাজনা ট্যাক্সের চেয়ে অনেকগুণ বেশি। যদি সঠিক পরিসংখ্যান নেয়া হয় তাহলে চরমপন্থী দলগুলোর নেয়া চাঁদার পরিমাণ সরকারের খাজনা ট্যাক্স ও ভ্যাটের চেয়ে বছরে কয়েকশ’ গুণ বেশি হবে বলে দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র দাবি করেছে।

সূত্র মতে স্থানীয় উপজাতীয়দের দলগুলোর তৎপরতা কম থাকায় পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি এবং রাঙ্গামাটির চেয়ে উন্নয়ন ও পর্যটনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বান্দরবান তুলনামূলকভাবে এগিয়ে গেছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনায় অনেকে বলেন, মুক্তির নামে স্থানীয় অগণতান্ত্রিক দলগুলোর অপতৎপরতাই পার্বত্য জেলাগুলোর প্রকৃত উন্নয়নের অন্তরায়।