মুসলিম প্রবেশে ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞায় যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিক্ষোভ অব্যাহত

ডেস্ক: ৭টি দেশের মুসলমানদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। তবে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশকে সমর্থন জানিয়ে স্পিকার পল রায়ান বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রেসিডেন্ট এ পদক্ষেপ নিয়েছে।
এদিকে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হিসেবে কলোরাডো ফেডারেল আপিল কোর্টের রক্ষণশীল বিচারক নিল গোরসাচকে মনোনীত করায় বিক্ষোভ হয়েছে ওয়াশিংটন ডিসিতে। ৭টি দেশের মুসলমানদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারির বিরুদ্ধে ওহাইয়োর কলম্বাসে মঙ্গলবার বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। রাস্তায় বিক্ষোভকারীরা অবস্থান নিলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পিপার স্প্রে (মরিচ গুঁড়া) নিক্ষেপ করে। একইরকম বিক্ষোভ হয়েছে মিনেসোটা এবং সাউথ ক্যারোলাইনায়ও।
ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ বাতিলের আহ্বান জানায় বিক্ষোভকারীরা। তবে এতো বিক্ষোভের পরও ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের পক্ষে প্রথমবারের মতো কথা বললো রিপাবলিকান নেতা পল রায়ান। যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রেসিডেন্ট এ পদক্ষেপ নিয়েছে জানিয়ে সে অন্য রিপাবলিকানদেরকেও ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ সমর্থনের আহ্বান জানায়।
পল রায়ান বলেছে, ‘প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলা কিংবা আইএসের কর্মকা- যদি মনে থাকে তোমাদের, তবে এ আদেশ কতটুকু সময়োপযোগী তা তোমরা বুঝতে পারবে। দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব আছে। এমন এ সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতের জন্য খুব ভালো হবে বলে আমরা বিশ্বাসী। যে লক্ষ্যে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তা সফল হবে বলেও আমরা আশাবাদী।’
কিছুদিন আগেই ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের স্থগিতাদেশ দিয়েছিলো নিউইয়র্কের ফেডারেল আদালত। তারপরও থামেনি নিষেধাজ্ঞা জারি করা ৭টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশে বাধা দেয়া। এবার নতুন করে কয়েকটি অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশকে চ্যালেঞ্জ করলো। ম্যাসাচুসেটস, ভার্জিনিয়া এবং নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল মঙ্গলবার নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছে। ম্যাসাচুসেটস অ্যাটর্নি জেনারেল মৌরা হেলি বলেছে, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ বৈষম্যমূলক, ক্ষতিকর এবং অসাংবিধানিক। ধর্ম এবং দেশের ভিত্তিতে যে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে তা অভিবাসন নীতির বিরোধী। আমাদের কাজ যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান ও আইন রক্ষা করা।’
ওয়াশিংটন ডিসিতে সুপ্রিম কোর্টের সামনেও বিক্ষোভ করেছে শতশত মানুষ। তবে এ বিক্ষোভের কারণ ভিন্ন হলেও মূল ইস্যু ট্রাম্পের গৃহীত ব্যবস্থা। সুপ্রিম কোর্টের প্রয়াত বিচারক অ্যান্টোনিন স্কালিয়ার স্থলাভিষিক্ত করতে কলোরাডো ফেডারেল আপিল কোর্টের বিচারক নিল গোরসাচকে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হিসেবে মনোনীত করেছে ট্রাম্প। নিল গোরসাচ কট্টরপন্থি হওয়ায় ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে উদারপন্থি নাগরিকদের সংগঠন-সিভিল লিবারটিস গ্রুপ।
এদিকে ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যে বিক্ষোভ অব্যাহত আছে। এছাড়াও ট্রাম্পের যুক্তরাজ্য সফর বাতিলের পিটিশনে ১৬ লাখ স্বাক্ষর পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে পার্লামেন্টে আলোচনার জন্য যে পরিমাণ সাক্ষরের প্রয়োজন ছিল, তা পূরণ হওয়ায় আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি দেশটির পার্লামেন্টে এ নিয়ে বিতর্কের কথা রয়েছে। অন্যদিকে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করে বলেছে, অন্ধের মতো পদক্ষেপ নিয়ে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা করা যায় না।