রাজস্ব বৃদ্ধির চাপ সীমিত আয়ের মানুষের ওপর পড়বে: টিআইবি

দুদক বিরোধীদের হয়রানি করে

ঢাকা: ২০১৬-১৭ জাতীয় বাজেটে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির চাপের বৃহদাংশ সুকৌশলে সীমিত আয়ের মানুষ, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী ও সাধারণ জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে বলে মনে করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

একই সঙ্গে ওই বাজেট অনুমোদন হলে আর্থ-সামাজিক বৈষম্য, ক্ষোভ ও অস্থিতিশীলতা বাড়বে বলে মনে করে সংস্থাটি। রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

রাজস্ব আয়ের সিংহভাগের উৎস হওয়া উচিত আয়কর। রাজস্ব কর্তৃপক্ষ প্রত্যাশিত পর্যায়ে আয়কর বৃদ্ধি করতে ব্যর্থ হয়ে ক্রমাগতভাবে মূসক নির্ভর হয়ে পড়ছে। মূসকের ওপর সম্পূরক শুল্কসহ যেভাবে মূসক বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে তার সিংহভাগ ভোক্তাই মধ্যবিত্ত, নিম্ন আয়ের বা সাধারণ জনগণ। তাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার জন্য পণ্য ও সেবা পেতে নতুন বাজেট অনুযায়ী কমপক্ষে ৩৫ শতাংশ মূল্য বেশি দিতে হবে। এর সাথে মূল্যস্ফীতি ও অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি যুক্ত হয়ে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হবে। অস্থিতিশীলতা ও ক্ষোভ বাড়বে বলেও সংস্থাটি মনে করে।’

বাজেট পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়ে এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘প্রস্তাবিত ২০১৬-২০১৭ বাজেটে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বোঝা সীমিত আয়ের মানুষ, ক্ষুদ্র সঞ্চয়ী ও বিনিয়োগকারী এবং পেনশনভোগীসহ সাধারণ নাগরিকের ওপর বিভিন্ন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ পদ্ধতিতে চাপিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।

একদিকে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থায়ন ও তদসংশ্লিষ্ট সুদ পরিশোধ এবং অন্যদিকে সরকারি খাতে বেতন-ভাতাসহ বর্ধিত ব্যয় সংকুলানে চাকরিজীবিসহ যারা সৎভাবে নিয়মিত কর প্রদান করে থাকেন ও সাধারণ মানুষ যাদের ওপর পরোক্ষ কর তথা মুসক আয় বৃহদাংশে নির্ভরশীল, তাদের ঘাড়েই অসহনীয় হারে চাপিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘স্বল্প আয়ের মানুষের অন্যতম নির্ভরযোগ্য বিনিয়োগের উপায় সঞ্চয়পত্রের ওপর অতিরিক্ত করারোপ করে তাদের জন্য বৈধ পথে সামান্যতম বাড়তি আয়ের পথ রুদ্ধ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিত্তশালী ও ধনীদের তুলনায় সীমিত ও কম আয়ের মানুষের জন্য কর রেয়াত ব্যাপকহারে কমানোসহ অতিরিক্ত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ করের বোঝা চাপানো হয়েছে, যা এক দিকে যেমন বৈষম্যমূলক অন্যদিকে তেমনি যেকোনো মাপকাঠিতেই রাজস্ব বৃদ্ধির টেকসই পন্থা হতে পারে না।’

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘বাজেটে প্রস্তাবিত প্যাকেজ মূল্য সংযোজন কর ব্যবস্থা যেমন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে, তেমনই এরূপ বোঝা চূড়ান্ত বিবেচনায় সাধারণ ভোক্তা ও গ্রাহকের ঘাড়েই চাপবে। প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্রাচুইটি ও শ্রমিক মুনাফা তহবিলের ওপর আরোপিত কর সীমিত আয় ও এ ধরনের তহবিলের ওপর নির্ভরশীল মানুষের জীবন দুর্বিষহ করবে।’