২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভাস্কর্য অপসারণের আল্টিমেটাম ৩০১ আইনজীবীর

হাইকোর্ট

ঢাকা: এবার সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রিক দেবী থেমিসের ‘মূর্তি’ অপসারণে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। মঙ্গলবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এ এই আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এই ‘মূর্তি’র ফলে দাঙ্গা সৃষ্টি হওয়া আশঙ্কা সৃষ্টি হতে পারে। তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ ভাস্কর্য সরাতে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, এর আগে সুপ্রিম কোর্টের সামনে কখনোই কোনও ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়নি। সামনে ঈদ। জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের সামনে এ রকম ভাস্কর্য বসানো যড়যন্ত্রমূলক।

বক্তারা বলেন, দেশে মুসলিম ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ সৃষ্টির জন্য প্রধান বিচারপতি সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ‘মূর্তি’ স্থাপন করেছেন। সুপ্রিম কোর্ট স্থাপনের পর থেকে এখানে কোনো ‘মূর্তি’ স্থাপন করা হয়নি। এই বিচারপতি এখানে ‘মূর্তি’ স্থাপন করে নিজের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন।

মানববন্ধনে বক্তারা আরো বলেন, মূর্তি ইস্যুতে সর্ব্বোচ্চ আদালতকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না। আইনমন্ত্রী বলেছেন, এ মূর্তি অপসারণের দায়িত্ব সরকারের নয়, প্রধান বিচারপতির। তাই সুপ্রিম কোর্টের পবিত্রতা রক্ষায় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মূর্তি অপসারণের দাবি জানান ৩০১ আইনজীবী।

আইনজীবীরা বলেন, সুপ্রিম কোর্টের নকশায় কোথাও এই এমন ভাস্কর্যর কথা বলা নেই। কারো সাথে পরামর্শ না করে প্রধান বিচারপতি তার একক সিদ্ধান্তে এটি স্থাপন করেছেন।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন।  আইনজীবী আশরাফ উজ্জামানের পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এবিএম নুরুল ইসলাম, মুন্সি কবির হোসেন, আবুল হাসেন, সরোয়ার হোসেন, আরিফুল ইসলাম প্রমুখ।

সুপ্রিম কোর্টের মূলভবনের সামনে শাপলা ফোয়ার মধ্যে স্থাপিত বিতর্কিত ভাস্কর্য অপসারণের জন্য বিরোধিতার সূচনা করেন বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগের নেতৃবৃন্দ। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন ইসলামী দলগুলোও এর বিরোধীতা করে সভা, সমাবেশ বিবৃতি দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও ব্যাপকভাবে অপসারণের দাবি তুলছে সাধারণ জনগণ। এ নিয়ে হাইকোর্টে একটি রিটও দায়ের করা হয়েছে।

গত ১০ এপ্রিল গণভবনে কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বলেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে মনে করেন, এটা এখানে থাকা উচিৎ না। এ নিয়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কথা বলবেন বলেও আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী।

১৬ এপ্রিল এক অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা হয় প্রধানমন্ত্রী। সেখানে ভাস্কর্য বিষয়ে দুই জনের মধ্যে কথা হয় বলে পরদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে শেখ হাসিনা জানান। তিনি নিজেও এই ভাস্কর্যটির বিপক্ষে এবং এটি অপসারণ করতে পরামর্শ দিয়েছেন। তবে রহস্যজনক কারণে এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।