রাশিয়ায় মসজিদের সংখ্যা বৃদ্ধিতে পুতিনের সন্তোষ প্রকাশ

ডেস্ক: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার দেশে মসজিদের সংখ্যা বৃদ্ধিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। রাশিয়ার গ্রান্ড মুফতি তালাত তাজউদ্দিনের সঙ্গে এক সাক্ষাতে পুতিন এ সন্তোষ প্রকাশ করে।

রাশিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বাশকোরতোস্তান প্রজাতন্ত্রের রাজধানী উফা নগরীতে বুধবার রাতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে প্রেসিডেন্ট পুতিন বলে, ২০০০ সালে এই প্রজাতন্ত্রে মাত্র ১৬টি মসজিদ থাকলেও বর্তমানে সেই সংখ্যা ১,২০০-তে উন্নীত হয়েছে বলে তাকে কর্মকর্তারা তথ্য দিয়েছে। এ প্রক্রিয়াকে সন্তোষজনক বলে উল্লেখ করে পুতিন।

ভ্লাদিমির পুতিন বলেছে, রাশিয়ায় মসজিদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় বোঝা যায় এদেশে ইসলামে প্রসার ঘটছে।
রাশিয়ার গ্রান্ড মুফতি তালাত তাজউদ্দিনের বাসভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে রাশিয়ায় দ্বীন ইসলাম প্রবেশ ও বিস্তারের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা হয়।

মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়া বলছে, দ্বীন ইসলাম রাশিয়ার চারটি প্রধান ধর্মের মধ্যে অন্যতম। শুরু থেকেই রাস এবং এর উত্তরসূরি রাষ্ট্রসমূহ প্রতিবেশী, শাসক বা প্রজা হিসেবে মুসলিমদের সংস্পর্শে এসেছে। মুসলিম ভূমিসমূহ থেকে দূরপাল্লার রৌপ্য বাণিজ্য প্রথম রুশ রাষ্ট্রসমূহ প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, এবং খ্রিস্টধর্মের পূর্বে ইসলাম ধর্ম রুশ ভূমিতে পৌঁছায়। ৯৮৮ সালে কিয়েভান রাসের শাসক ভ্লাদিমিরের খ্রিস্টধর্ম গ্রহণের কয়েক দশক আগেই দশম শতাব্দীর মধ্যভাগে ভোলগা বুলগার রাষ্ট্রের শাসকরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন।

১২৩৬ থেকে ১২৩৭ সালের মধ্যে মোঙ্গলরা ভোলগা বুলগার রাষ্ট্র ধ্বংস করে দেয় এবং এরপর সমগ্র রুশ ভূমিকে পদানত করে। ১৩২৭ সালে গোল্ডেন হোর্ডের শাসক উজবেক খান দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করে এবং এর ফলে এক শতাব্দীরও বেশি সময়ের জন্য রুশ ভূমিসমূহের কর্তৃত্ব মুসলিমদের হাতে ন্যস্ত হয়। এরপর মাস্কোভি ও গোল্ডেন হোর্ডের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্যের পরিবর্তন ঘটতে থাকলে মস্কোর রাজপুরুষেরা ক্রমাগত গোল্ডেন হোর্ডের উত্তরাধিকার সংক্রান্ত সংঘর্ষে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়ে।

১৫৫২ সালে রাশিয়ার জার চতুর্থ আইভান গোল্ডেন হোর্ডের উত্তরসূরি রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য রাষ্ট্র কাজান দখল করে এবং ভৌগোলিক সম্প্রসারণের এক সুদীর্ঘ প্রক্রিয়া আরম্ভ করে। ক্রমে ক্রিমিয়া, ককেশাস এবং মধ্য এশিয়া রাশিয়ার পদানত হয় এবং এর ফলে ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষদিকে বহু মুসলিম জাতি রুশ শাসনাধীনে আসে।

১৯৯৭ সালে রুশ সংবিধানে খ্রিস্টধর্ম, বৌদ্ধধর্ম এবং ইহুদিধর্মের পাশাপাশি ইসলাম ধর্মকেও রাশিয়ার ‘সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে’র অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।