রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ গণবিরোধী: আনু মোহাম্মদ

ঢাকা: মোবাইল ও কম্পিউটারসহ এমন অনেক কিছু তৈরি করা সম্ভব। কিন্তু এক সুন্দরবন গেলে আর তা তৈরি করা সম্ভব হবে না। যেটা অসংখ্য মানুষকে বাঁচায়। কয়েক কোটি মানুষকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা করে।

কতটা লোভী হলে, কতটা দায়িত্বহীন আর গণবিরোধী হলে এই সুন্দরবন ধ্বংস করার মতো কাজ কেউ করতে পারে। এই সরকার সেই কাজটাই করছে। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি আয়োজিত দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলে এসব কথা বলেছেন কমিটির সদস্য সচিব ড. আনু মোহাম্মদ। রামপালসহ সুন্দরবন বিনাশী সব প্রকল্প বন্ধের দাবিতে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের প্রতিবাদ এবং চুক্তি বাতিলের দাবিতে আগামী ২৮শে জুলাই বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অভিমুখে যাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করে সংগঠনটি।

সমাবেশে আনু মোহাম্মদ বলেন, এ প্রকল্প নিয়ে সরকার খুব আত্মবিশ্বাস দেখাচ্ছে। কিন্তু আত্মবিশ্বাস আর একগুয়েমি এক কথা নয়। সরকার আত্মবিশ্বাসী নয়, বরং জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করছে। সরকার বারবার বলছে এতে জনগণের সম্মতি আছে। কিন্তু আমরা সরকারকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে চাই, এ ইস্যুতে গণভোটের আয়োজন করুন। সেই গণভোট যদি ৫ই জানুয়ারি আর সাম্প্রতিক ইউপি নির্বাচনের মতো না হয়, তাহলে ৯৯ ভাগ মানুষ রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের বিরুদ্ধে অবস্থা নেবে।

ভারতের সমালোচনা করে তিনি বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য দুটি কোম্পানি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। তার মধ্যে একটি হলো বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ কোম্পানি। এই কোম্পানিটির প্রধান হচ্ছেন একজন ভারতীয় কর্মকর্তা। অথচ বলা হয়েছে, তিনি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্বাক্ষর করেছেন। আরেকটি কোম্পানি হলো ভারতীয় হেভি ইলেকট্রিক কোম্পানি। এখানেও ভারতীয় কর্মকর্তা। সুতরাং দুটি কোম্পানি চুক্তি করেছে। চুক্তি হয়েছে সুন্দরবনের ওপর একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার জন্য। সেই সুন্দরবন বাংলাদেশের সুন্দরবন। বাংলাদেশের সুন্দরবন ধ্বংসের জন্য যে প্রকল্প করা হচ্ছে, সেই প্রকল্প নিয়ে স্বাক্ষর করেছেন দুজন ভারতীয় কর্মকর্তা। আর পেছনে দাঁড়িয়ে আছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা, মন্ত্রী ও সচিব।

তিনি আরো বলেন, এটা ভাবার কোনো অবকাশ নেই যে, একটা চুক্তি স্বাক্ষর হয়ে গেলেই তা আর বাতিল করা যায় না। ক’দিন আগেই শ্রীলঙ্কা ভারতের এমন একটি চুক্তি বাতিল করেছে। কারণ, শ্রীলঙ্কার মেরুদণ্ড বাংলাদেশ থেকে কিছুটা শক্ত। তারা যদি এসব চুক্তি বাতিল করতে পারে আমরা কেন পারবো না। এই রামপাল নিয়ে যত চুক্তি, তা ছুড়ে ফেলার জন্য অবস্থা তৈরি করতে হবে। আমরা অবশ্যই তৈরি করবো। বাংলাদেশ সরকারকে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য এই দাবি অবশ্যই মানতে হবে।

কমিটির আহ্বায়ক শেখ শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে সমাবেশে অংশ নেন গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের কেন্দ্রীয় নেতা বজলুল রশিদ, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর প্রমুখ।