দারুস সালামে সন্ত্রাসবাদী আস্তানায় র‌্যাবের অভিযান

ঢাকা: রাজধানীর মিরপুরের দারুস সালাম থানার মাজার রোড ভাঙা দেয়াল এলাকায় সন্ত্রাসবাদী আস্তানা সন্দেহে সোমবার রাত থেকে একটি ৬ তলা বাড়ি ঘিরে রেখেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‍্যাব)। বাড়ির ৫ তলার একটি ফ্ল্যাটে সন্দেহভাজন সন্ত্রাসবাদী আবদুল্লাহ, তার স্ত্রী ও সন্তানসহ সাতজন অবস্থান করছেন বলে ধারণা করছে র‍্যাব।
এদিকে,  র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান  আজ (মঙ্গলবার) সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিটি ঘটনাস্থলের কাছে সংবাদ ব্রিফিং-এ জানিয়েছেন,  “আমাদের অগ্রাধিকার ছিল এই ভবনের অন্যান্য নিরপরাধ বাসিন্দাদের নিরাপত্তা দেওয়া। আমরা সারা দিনে তাদের সরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। সারা দিন আমরা তাঁর (আবদুল্লাহ) সঙ্গে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করেছি। সেই সময় সে আমাদের কাছে সময় প্রার্থনা করেছে। আমরা তাকে সময় দিয়েছি। আমরা তার আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। একটু আগে সে প্রাথমিকভাবে আত্মসমর্পণের জন্য রাজি হয়েছে। সে বলেছে প্রথমে তার স্ত্রী ও দুই সন্তান বারান্দায় আসবে। তার কথা অনুযায়ী তারা বারান্দায় এসেছিল। আমরা তাদের সঙ্গে ইশারায় যোগাযোগ করেছি। পরবর্তীতে সে বলেছে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে এই আত্মসমর্পণ করবে।”
মুফতি মাহমুদ আরও বলেন, সে সময় যদি সে ধ্বংসাত্মক কিছু করার চেষ্টা করে সে বিষয়টি মাথায় রেখে আমাদের অভিযানকারী দল প্রস্তুত আছে।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে এক ব্রিফিংয়ে র‍্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ জানান, সোমবার রাতে টাঙ্গাইলে একটি সন্ত্রাসবাদী আস্তানায় অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মাজার রোডের বাড়িটিতে অভিযানে আসে র‍্যাব। এ সময়, র‍্যাবকে লক্ষ্য করে বাড়ি থেকে গ্রেনেড ও পেট্রোল বোমা ছোড়া হয়। এরপর থেকে বাড়িটি ঘিরে রাখা হয়েছে। সন্ত্রাসবাদীদের আত্মসমর্পনের জন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
এদিকে, সকালে অভিযানের প্রস্তুতি শুরু করেছে র‍্যাব। বাড়িটির ২৪টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ২৩টি থেকে পুরুষ-নারী-শিশুসহ ৬৫ জনকে নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে। সন্দেহভাজন সন্ত্রাসবাদী আবদুল্লাহ’র বোন মেহেরুন্নেসা আত্মসমর্পন করেছেন। বাড়িটির গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। বাড়িটিতে শিশু থাকায় আত্মসমর্পনের জন্য সময় দেয়া হচ্ছে বলেও জানান র‍্যাব মহাপরিচালক।
র‍্যাব মহাপরিচালক জানান, আবদুল্লাহ ছাদে কবুতর লালন-পালনের ব্যবসা করেন। পাশাপাশি আইপিএস, ইউপিএস বানিয়ে বিক্রি করেন। এসব বানাতে প্রচুর এসিড ও পেট্রোলের প্রয়োজন হয়। মূলত এ ব্যবসার আড়ালেই আবদুল্লাহ এই আস্তানায় প্রচুর বিস্ফোরক জমা করেন। ফ্ল্যাটটিতে ৫০টির মতো আইইডির ও ছোট ছোট পিস্তলও থাকতে পারে।