কুরবানীর স্পট নির্ধারনের সিদ্ধান্ত বাতিল ও ঢাকায় ২০০টি কুরবানী হাট দাবি ওলামা লীগের

ঢাকা: কুরবানীর স্পট নির্ধারনের জন্য সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটি বাতিলসহ প্রায় দেড় কোটি মানুষের নগরী ঢাকায় কমপক্ষে ২০০টি হাটের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ।

শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অায়োজিত এক মানববন্ধন থেকে তারা এ দাবি জানায়। এসময় নেতারা ১১ দফা দাবি উত্থান করেন।

মানববন্ধনে ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী বলেন, ‘৯৮ ভাগ মুসলমান জনগোষ্ঠীর ধর্মবিশ্বাস কুরবানীর ব্যাপক পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে। কুরবানীর উপর বিধি-নিষেধ বা কুরবানীর স্পট নির্ধারণ করলে হযরত শাহজালাল রহমতউল্লাহি আলাইহি উনার এই দেশে মুসলমানগণ গৌর গোবিন্দের পদক্ষেপ বলে ক্ষুব্ধ হবে। যার সুযোগ নিবে জামায়াত,হেফাজত।কাজেই কুরবানীর স্পট নির্ধারন করা চলবে না।

কুরবানীর গোশত কাটার ছবি তোলা ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘সিটি কর্পোরেশন নির্ধারিত ১১০০ স্পটে সরকারীভাবে কুরবানী করে তার গোশত দরিদ্র মুসলমানদের মাঝে বিলিয়ে দেয়া হোক।

তিনি বলেন, অনেক সুবিধাভোগী মহল ও ব্যক্তি ছলনা করে এক গরু জবাই করে তার গোশত বিতরনের ছবি বিভিন্নভাবে একশত বার প্রদর্শন করে তার ভিডিও মধ্যপাচ্যে পাঠিয়ে বিপুল টাকা দেশে এনে সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহার করে। তাই কুরবানীর গোশত কাটার ছবি তোলা ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ করা হোক।

মানববন্ধন ও সমাবেশে উত্থাপিত দাবিসমূহ:

(১) মীর কাসেমসহ কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী সরকারকে দেশ ও জাতীর পক্ষ থেকে তথা ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও আলিম উলামাদের পক্ষ থেকে আন্তরিক মোবারকবাদ। বাংলার ইহুদী রাজাকার সাঈদীরও ফাঁসির ব্যবস্থা করতে হবে।

(২) বশহীদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং জাতির গর্বিত সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি কটুক্তিকারীর শাস্তির আইন পাশ করায় সরকারকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। পাশাপাশি আজকের এই মানববন্ধন থেকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নিকট আমাদের দাবী হলো, মুক্তিযোদ্ধা ও বঙ্গবন্ধুর যিনি নবী সেই রাসূলে আকরাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং পবিত্র দ্বীন ইসলাম ধর্মের প্রতি কট‚ক্তিকারীর প্রতিও সর্বোচ্চ শাস্তির আইন পাস করতে হবে

(৩) ৯৮ ভাগ মুসলমান জনগোষ্ঠীর ধর্মবিশ্বাস পবিত্র কোরবানির ব্যাপক পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে। পবিত্র কোরবানির উপর বিধি-নিষেধ বা পবিত্র কোরবানির স্পট নির্ধারণ করলে হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার এই দেশে মুসলমানগণ গৌর গোবিন্দের পদক্ষেপ মনে করে ক্ষুব্ধ হবে। যার সুযোগ নিবে জামাত-জোট-হেফাজত। কাজেই পবিত্র কোরবানির স্পট নির্ধারণ করা চলবে না।

(৪) ধর্মপ্রাণ মুসলমান প্রত্যেকেই পবিত্র কোরবানির হাটে গিয়ে গরু কেনার আনন্দ পেতে চান। কাজেই পবিত্র কোরবানির হাটের সময় ১০ দিন করা হোক। প্রায় ২ কোটি জনসংখ্যার ঢাকা শহরে কমপক্ষে দুইশত কোরবানির হাট বসানো হোক। পারলে এলাকাভিত্তিক হাটের অনুমতি দেয়া হোক।

(৫) পবিত্র কোরবানির পশুর দাম কমানোর জন্য ধর্মমন্ত্রণালয়কে বিশেষ প্রনোদনা দিতে হবে, হাটের ইজারা মূল্য বৃদ্ধির পরিবর্তে ইজারা মূল্য মাফ, ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের থাকা-খাওয়া এগুলোর বিষয়েও সরকারের প্রণোদনা দিতে হবে। কোরবানির জন্য যোগ্য সর্বনিম্ন খাসীর মূল্য ৩ হাজার টাকা ও সর্বনিম্ন গরু ২১ হাজার টাকা দরে সরবরাহ করতে হবে। এজন্য সরকারকে প্রনোদনা দিতে হবে। পবিত্র কোরবানির ঈদ তিন দিন; কাজেই পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১০ দিন ছুটি দেয়া হলে কোরবানিতে ১২ দিন ছুটি দিতে হবে।

(৬) সিটি কর্পোরেশন নির্ধারিত ১১৫০ স্পটে সরকারীভাবে কোরবানি করে তার গোশত দরিদ্র মুসলমানদের মাঝে বিলিয়ে দেয়া হোক। পাশাপাশি অনেক সুবিধাবাদী মহল ও ব্যক্তি ছলনা করে এক গরু জবাই করে তার গোশত বিতরণের ছবি বিভিন্নভাবে একশতবার প্রদর্শন করে তার ভিডিও মধ্যপ্রাচ্যে পাঠিয়ে বিপুল টাকা দেশে আনে ও সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহার করে। কাজেই গরু কোরবানির ছবি, গোশত কাটাকাটির ছবি তোলা ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ করা হোক।

(৭) কোরবানির হাট ইবাদতের হাট। কাজেই এ হাটে গান-বাজনা, গরুর ছবি তোলা ইত্যাদি হারাম কাজ মুক্ত করা হোক। পাশাপাশি কোরবানির চামড়া সংগ্রহে মাস্তানদের উৎপাত বন্ধ করা হোক।

(৮) শত্রু সম্পত্তি বা অর্পিত সম্পত্তি এখন রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি। ভারতে শত্রু সম্পত্তি মুসলমানদের ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছেনা। তাহলে বাংলাদেশ ফেরত দেবে কেন? অবিলম্বে অর্পিত সম্পত্তি আইন বাতিল করতে হবে। কারো সাম্প্রদায়িক নির্দেশে দেবোত্তর সম্পত্তির নামে দেশব্যাপী মুসলমানদের সম্পত্তি হরণ চলবে না। অবিলম্বে মুসলমানদের লা-খেরাজ সম্পত্তি মুসলমানদের ফেরত দেয়ার উদ্যোগ নিতে হবে।

(৯) সীমান্তকে চ‚ড়ান্ত সতর্ক রাখতে হবে। ভারত থেকে কোনোমতেই গরু আনতে দেয়া যাবে না। পাশাপাশি বর্ষায় ফারাক্কা খুলে দিবে আর খরা মৌসুমে ফারাক্কা বন্ধ করে দিবে এটা সৎ বন্ধুত্বের খিলাফ কাজ। এর সুযোগ নিবে জামাত জোট।

(১০) বাংলাদেশে হিন্দুরা জামাই আদরে আছে। কিন্তু ভারতে মুসলমানরা চরম নিপীড়ণের স্বীকার। তারা পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালন করতে পারে না। গরু কোরবানিও করতে পারেনা। ভারতের মুসলমানরা যাতে কোরবানি করতে পারে, শান্তিতে থাকতে পারে তার জন্য বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রভাবশালী বাঙালি নারী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ভারতের উপর চাপ প্রয়োগের দাবি।

(১১) পশ্চিমবঙ্গ উদ্দেশ্যমূলকভাবে পশ্চিম বাদ দিয়েছে কেন তা খতিয়ে দেখার দাবি। এরপর দুই বাংলা এক হও- মুক্তিযুদ্ধ চেতনা বিরোধী এরূপ শ্লোগান উঠে কিনা সে ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সচেতন হওয়ার দাবি।

প্রেস রিলিজের মাধ্যমে প্রচারকৃত ওলামা লীগের দাবিসমূহের বিস্তারিত বিবরণ হুবহু তুলে ধরা হলো-

(১) মীর কাসেমসহ কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী সরকারকে দেশ ও জাতীর পক্ষ থেকে তথা ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও আলিম উলামাদের পক্ষ থেকে আন্তরিক মোবারকবাদ। বাংলার ইহুদী রাজাকার সাঈদীরও ফাঁসীর ব্যবস্থা করতে হবে।

বক্তারা বলেন, সব বিদেশী অপশক্তির বাধা অতিক্রম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেভাবে কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছেন তা বাঙ্গালী জাতীর ইতিহাসে এক যুগান্তকারী মাইলফলক হয়ে থাকবে। এক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান অনস্বীকার্য। কারণ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে বাংলাদেশের জনগণ কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। সব যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি দ্রুত কার্যকর হলেই জনগণ পুরোপুরি স্বস্তি পাবে। কারণ যুদ্ধাপরাধীদের শীর্ষ গডফাদার বাংলার ইহুদী রাজাকার সাঈদীর এখনো ফাঁসি হয়নি। তাই বাংলার ইহুদী রাজাকার সাঈদীরও ফাঁসির ব্যবস্থা করতে হবে। তবে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত মীর কাসেম আলীর আপীল খারিজ হয়ে ‘মৃত্যুদন্ড’ বহাল এবং অন্যান্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে দেশ ও জাতীর পক্ষ থেকে তথা ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও আলিম উলামাদের পক্ষ থেকে আন্তরিক মোবারকবাদ।

(২) বাঙালি জাতির জনক শহীদ শেখ মুজিবুর রহমান এবং জাতির গর্বিত সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি কটুক্তিকারীর শাস্তির আইন পাশ করায় সরকারকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। পাশাপাশি আজকের এই মানববন্ধন থেকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নিকট আমাদের দাবী হলো, মুক্তিযোদ্ধা ও বঙ্গবন্ধুর যিনি নবী সেই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং পবিত্র ইসলাম ধর্মের প্রতি কটুক্তিকারীর প্রতিও সর্বোচ্চ শাস্তির আইন পাশ করতে হবে।

বক্তারা বলেন, বাঙালি জাতির জনক শহীদ শেখ মুজিবুর রহমান এবং জাতির গর্বিত সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি কটুক্তিকারীর শাস্তির জন্য গত ২২শে আগষ্ট সোমবার ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৬’ নামের একটি নতুন এই আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ আইনের ফলে বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযোদ্ধাদের কটুক্তি শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ড অথবা অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ড নিশ্চিত হয়েছে। এ আইন পাশ করায় সরকারকে আমরা ধন্যবাদ জানাই।

বক্তারা বলেন, এ আইনে বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযোদ্ধাদের কটুক্তি শাস্তি যেমন নিশ্চিত হয়েছে তেমনি বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণের চেয়েও প্রিয় যেই নবী নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং পবিত্র দ্বীন ইসলাম ধর্মের প্রতি কটুক্তিকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ড এবং কমপক্ষে শত শত কোটি টাকা অর্থদন্ড প্রদান নিশ্চিত করতে হবে। এ লক্ষ্যে সংসদে আইন পাশ করতে হবে।

(৩) ৯৮ভাগ মুসলমান জনগোষ্ঠীর ধর্মবিশ্বাস পবিত্র কোরবানির ব্যাপক পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে। পবিত্র কোরবানির উপর বিধি-নিষেধ বা কোরবানির স্পট নির্ধারণ করলে হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার এই দেশে মুসলমানগণ গৌর গোবিন্দের পদক্ষেপ মনে করে ক্ষুব্ধ হবে। যার সুযোগ নিবে জামাত-জোট-হেফাজত। কাজেই কোরবানির স্পট নির্ধারণ করা চলবেনা।

বক্তারা বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অজুহাতে গত পরশু কোরবানির পশু জবাইয়ের জন্য ঢাকা উত্তরে ৫৬৭ ও ঢাকা দক্ষিণে ৫৮৩টি মোট ১১৫০টি স্থান নির্দিষ্ট করেছে দুই সিটি কর্পোরেশনসহ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এছাড়া রাজধানীর বাইরে সারাদেশের ১১টি সিটি করপোরেশনের মোট ৬২৩৩ টি স্থান পশু কোরবানি জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

বক্তারা বলেন, শুধু ঢাকা শহরেই প্রতিবছর ৩০ লাখ গরু কোরবানি হয়ে থাকে। ঢাকা শহরে শুধু বাড়ীওয়ালাই রয়েছে ১৫ লক্ষ। এছাড়া উপসচিব, যুগ্মসচিব, অতিঃসচিব, সচিব, এস.আই, ওসি, এএসপি, এডি.এসপি, এসপি, যুগ্ম জেলা জজ, জজ, বিচারপতি, ব্যাংক অফিসার, বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, প্রতিষ্ঠিত উকিল, বিভিন্ন কর্পোরেট হাউজের এমডি থেকে ডাইরেক্টর এ ধরণের লাখ লাখ পেশাজীবি যারা প্রত্যেকেই ১টি গরু দিয়ে থাকেন। সম্মিলিতভাবে তাদের সংখ্যাও ১৫ লাখের উপরে। এছাড়া মোটামুটি ব্যবসায়ী থেকে বড় বড় ব্যবসায়ীও আছে লাখ লাখ যারা প্রত্যেকেই ১টি গরু কোরবানী দিয়ে থাকে। ট্যানারি এসোসিয়েশনের হিসাব মতে, গত বছর সারাদেশ থেকে ৬০ লাখ গরুর চামড়া সংগৃহিত হয়েছে। এর মধ্যে ৩০ লাখের মতো গরুর চামড়া ঢাকা থেকে সংগৃহিত হয়েছে। সে হিসেবে ঢাকা শহরে মোট কোরবানী দাতার সংখ্যা ৩০ লাখেরও উপরে। সে হিসেবে দুই সিটি কর্পোরেশনের নির্দিষ্ট ১১৫০টি স্পটে কোরবানির করতে হলে; একটি স্পটে ২৬৫০ জনকে কোরবানি করতে হবে। যা সম্পূর্ণ অসম্ভব ও অবাস্তব। ধারাবাহিকভাবে তিন দিন কোরবানি করলেও ২৬৫০ জন কখনো কোরবানি করতে পারবেনা।

বক্তারা বলেন, নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানির করলে একদিনে এক স্পটে ২৬৫০ জন দাঁড়াতে দীর্ঘ সারির সৃষ্টি হবে। এতে বেশীর ভাগ কোরবানিদাতাই কোরবানি করতে পারবেন না। গোশত বহনে বহুমুখী ঝামেলা হবে। পরিবহন সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করবে। গাড়ি ভাড়া গুনতে হবে কয়েকগুণ বেশি। চামড়ার সংগ্রহকারী চাঁদাবাজ, মাস্তানদের কারণে গোশত ও চামড়া চরম নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়বে। চাঁদাবাজদের কারণে চামড়ার মূল্য পাওয়া যাবে না। চামড়া ছিনতাইয়ে চাঁদাবাজ ও মাস্তানদের কারণে আইন শৃঙ্খলার অবনতি হবে। সিটি কর্পোরেশন কর্মচারী ও কসাইরা চাঁদাবাজীর সুযোগ পাবে। প্রভাবশালীরা আগে জবাই করিয়ে নিতে চাইবে। এতে দাঙ্গা-হাঙ্গামার সৃষ্টি হবে। দাঙ্গা-হাঙ্গামার আশঙ্কায় অসৎ পুলিশ চাঁদাবাজির সুযোগ পাবে। ঘরে কোরবানি করতে পরিবারের সবাই যে আনন্দ উপভোগ করে তা মাটি হবে। ঢাকাসহ সারাদেশের লাখ লাখ কোরবানিদাতা দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে কোরবানি না করে ওয়াজিব তরক্বের গুনাহে গুনাহগার হবে। অর্থাৎ হাজারো সমস্যার সৃষ্টি হবে। তাছাড়া রাস্তাঘাটে যত্রতত্র যখন হিন্দুদের পূজামন্ডপ করা হয়, তখন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়না কিন্তু মুসলমানদের কোরবানির স্থান নির্দিষ্ট করায় বৈষম্যের অভিযোগ উঠবে। এতে ধর্মপ্রাণদের মধ্যে ব্যাপক বিরুপ ও সরকার বিরোধী মনোভাব সৃষ্টি হবে। একই অবস্থা হবে সারাদেশে। এজন্য গতবছরও এ উদ্যোগে জনগণ কোন সাড়াই দেয়নি।

বক্তারা আরো বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক এবার ১৮ বছরের নীচে কেউ কোরবানি বা জবেহ করতে পারবেনা। এই সিদ্ধান্তও সম্পূর্ণ ইসলাম বিরোধী ও মনগড়া সিদ্ধান্ত। কারণ পবিত্র দ্বীন ইসলামে এরকম কোন সিদ্ধান্ত নেই যে, ১৮ বছরের নীচে কেউ কোরবানি করতে পারবেনা। তাহলে এসব সম্মানিত ইসলাম বিরোধী নির্দেশদাতারা কি নতুন করে ইসলাম ধর্মের বাইরে স¤্রাট আকবরের দ্বীনে এলাহির মতো নতুন কোন ধর্ম প্রবর্তন বা করতে চায়? কিন্তু এদেশের মুসলমানরা তা কখনো মেনে নিবেনা।

(৪) ধর্মপ্রাণ মুসলমান প্রত্যেকেই কোরবানির হাটে গিয়ে গরু কেনার আনন্দ পেতে চান। কাজেই কোরবানির হাটের সময় ১০ দিন করা হোক। প্রায় ২ কোটি জনসংখ্যার ঢাকা শহরে কমপক্ষে দুইশত কোরবানির হাট বসানো হোক। পারলে এলাকাভিত্তিক হাটের অনুমতি দেয়া হোক।

বক্তারা বলেন, মুসলমানদের কোরবানি নিরুৎসাহিত করতে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও রাস্তাঘাটে যত্রতত্র যখন হিন্দুদের পূজামন্ডপ করা হয়, তখন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়না। রাস্তাঘাট, যত্রতত্র পূজামন্ডপ করা যাবেনা এরুপ নির্দেশনা জারী করা হয়না বা পূজা মন্ডপের স্থানও নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়না। এটা কি মুসলমানদের প্রতি সাম্প্রদায়িকতা নয়?

বক্তারা আরো বলেন, ইসলাম বিদ্বেষীরা প্রতিবছর কোরবানী পশুর হাট নিয়ে অপপ্রচার করে। অথচ যখন পহেলা বৈশাখে সারা বাংলাদেশের সবচেয়ে মুমূর্ষু রোগীদের পাঠানো স্থান ঢাকা মেডিকেল, পিজি হাসপাতালে ও বারডেমসহ গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালে আগত সবগুলো রাস্তাই ব্যারিকেড দিয়ে আটকানো থাকে, চর্তুদিকে থাকে হারাম বৈশাখপ্রেমী অজস্র মানুষের ভীড়, সেখানে অ্যাম্বুলেন্স চলতে পারেনা, মানুষই চলতে পারেনা। তা নিয়ে কোন মাতামাতি করেনা। শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের অবস্থানের কারনে বারডেম, পিজি, ঢাকা মেডিকেলের রোগীরা টানা ৬ দিন ধরে অবরুদ্ধ ছিল। তখনও এসব ইসলাম বিদ্বেষীরা কিছু বলেনি। যখন কোরবানির সময় আসে তখন তারা কোরবানির পশুর হাটের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লাগে। কোরবানির পশুর হাট কমালে বা রাজধানীর বাইরে বসালে যাতায়াতের সমস্যা, পরিবহন সমস্যা, নগদ অর্থ বহন করাসহ মারাত্মক দুর্ভোগের মধ্যে পড়বেন লক্ষ লক্ষ কোরবানিদাতারা। এজন্য ঢাকা শহরে যদি দুইশত পশুর হাটের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে জনদুর্ভোগ লাগব হবে।

বক্তারা বলেন, অবিলম্বে উদ্ভট ও ইসলাম বিরোধী মনগড়া সিদ্ধান্ত বাতিল করে সিটি কর্পোরেশনগুলোকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন এবং পর্যাপ্ত লোকবল নিয়োগ করতে হবে। পাশাপাশি কোরবানি দাতাদের সুবিধার্থে ২০০টি পশুর হাটের ব্যবস্থা করতে হবে। কোরবানির পশুর হাট নিয়ে কোন ষড়যন্ত্র করা যাবেনা।

(৫) কোরবানির পশুর দাম কমানোর জন্য ধর্মমন্ত্রণালয়কে বিশেষ প্রনোদনা দিতে হবে, হাটের ইজারা মূল্য বৃদ্ধির পরিবর্তে ইজারা মূল্য মাফ, ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের থাকা-খাওয়া এগুলোর বিষয়েও সরকারের প্রনোদনা দিতে হবে। কোরবানির জন্য যোগ্য সর্বনিম্ন খাসীর মূল্য ৩ হাজার টাকা ও সর্বনিম্ন গরু ২১ হাজার টাকা দরে সরবরাহ করতে হবে। এজন্য সরকারকে প্রনোদনা দিতে হবে। সিটি কর্পোরেশন নির্ধারিত ১১৫০ স্পটে সরকারীভাবে কোরবানি করে তার গোশত দরিদ্র মুসলমানদের মাঝে বিলিয়ে দেয়া হোক। কোরবানির ঈদ তিন দিন; কাজেই ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১০ দিন ছুটি দেয়া হলে কোরবানিতে ১২ দিন ছুটি দিতে হবে।

বক্তারা বলেন, মুসলমানদের পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, দুই ঈদ বা কোরবানিতে কোন বরাদ্দ দেয়া হয় না। অথচ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পূজা উপলক্ষে সরকারিভাবে বরাদ্দ রাখা হয়। গতবছর মন্ডপ প্রতি সরকার ৫০০ কেজি চাল দিয়েছে। ৫০ টাকা কেজি ধরলে সারা দেশে ২৮০০০ হাজার মন্ডপে প্রায় ৭০ কোটি টাকার চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ম্যাজিট্রেট, ডিসি, এসপি, এমপি, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে আলাদা অনুদান তো রয়েছেই। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পূজায় ৭০ কোটি টাকার বরাদ্দ পেলে মুসলমানদের ৬৮৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়ার কথা। কিন্তু মুসলমানরা কোন বরাদ্দই পায়না। যা সম্পূর্ণ বৈষম্যমূলক।

বক্তারা বলেন, মুসলমানদের প্রতি বৈষম্য নিরসনে এবারের কোরবানিতে হ্রাস মূল্যে পশু কোরবানির ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দিতে হবে। কোরবানির যোগ্য সর্বনিম্ন খাসীর মূল্য ৩ হাজার টাকা ও সর্বনিম্ন গরু ২১ হাজার টাকা দরে সরবরাহ করতে হবে। পাশাপাশি সরকারীভাবে সিটি কর্পোরেশন নির্ধারিত ১১৫০ স্পটে সরকারীভাবে কোরবানি করে তার গোশত দরিদ্র মুসলমানদের মাঝে বিলিয়ে দিতে হবে। কারণ হিন্দু ধর্মাবলম্বিদের পাওয়া বরাদ্দের সমপরিমাণ কমপক্ষে ৭০ কোটি টাকার গরু ক্রয় করে ১ কেজি করে গোশত বিতরণ করলে প্রায় ১৪ লক্ষ দরিদ্র মুসলমানকে কোরবানির গোশত দেয়া সম্ভব হবে। এই উদ্যোগ অবশ্যই নিতে হবে। তাছাড়া পবিত্র ঈদুল ফিতরে ১০ দিন ছুটি দেয়া হলে এবার ১০ দিন নয় কেন? কোরবানির ঈদ যেহেতু তিন দিন; কাজেই ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১০ দিন ছুটি দেয়া হলে কোরবানিতে ১২ দিন ছুটি দিতে হবে।

(৬) শত্রু সম্পত্তি বা অর্পিত সম্পত্তি এখন রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি। ভারতে শত্রু সম্পত্তি মুসলমানদের ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছেনা। তাহলে বাংলাদেশ ফেরত দেবে কেন? অবিলম্বে অর্পিত সম্পত্তি আইন বাতিল করতে হবে।

বক্তারা বলেন, অর্পিত সম্পত্তি মূলতঃ ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময়ের শত্রু সম্পত্তি আইন থেকে এসেছে। পাক-ভারত যুদ্ধের সময় যারা দেশ ত্যাগ ভারতের পক্ষাবলম্বন করেছিল তাদের সম্পত্তিকে ‘শত্রু সম্পত্তি’ গন্য করা হয়। একইভাবে যারা ভারত থেকে যারা পাকিস্থানে পালিয়ে গিয়েছিল তাদের সম্পত্তিকে ভারত শত্রু সম্পত্তি ঘোষণা করে। ভারত কর্তৃক ঘোষিত ‘শত্রু সম্পত্তি’ ভারত সরকার এখনো ভারতীয় মুসলমানদের ফেরত দেয়নি। বর্তমানে শুধু মুম্বাইতে ১৬০০০ শত্রু সম্পত্তি হিসেবে গণ্য মুসলমানদের সম্পত্তি রয়েছে। যা ফেরত পেতে ৫৫০টি মামলা হলেও মুসলমানদের তাদের ভ‚মি ফেরত দেয়া হয়নি। ভারতে শত্রু সম্পত্তি মুসলমানদের ফেরত দেয়া না হলে বাংলাদেশ এই শত্রু সম্পত্তি কেন ফেরত দেবে? এটা এখন সরকারী সম্পদ। ‘অর্পিত সম্পত্তি’র মোড়কে এই শত্রু সম্পত্তি বাংলাদেশের বিধর্মীরাও পেতে পারে না। তাদের দাবি গ্রহণযোগ্য নয়। তাছাড়া যুদ্ধকালীন সময়ে দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া বা দেশ ছেড়ে যাওয়া নাগরিকরা সম্পত্তির দাবিদার হতে পারেনা। যারা দেশপ্রেম বাদ দিয়ে শত্রু দেশে আশ্রয় নেয় এবং স্বদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় তারা কিভাবে ভুমি ফেরত পেতে পারে? ভারত যেখানে মুসলমানদের সম্পত্তি ফেরত দেয়নি সেখানে বাংলাদেশে এই শত্রু সম্পত্তি ফেরত দিতে অতি উৎসাহ কেন? তাই অবিলম্বে ‘শত্রু সম্পত্তি’ বা অর্পিত সম্পত্তি আইন বাতিল করতে হবে। কয়েক লাখ একর সরকারী সরকারী সম্পত্তি কারো হাতে তুলে দেয়া যাবে না। বরং সরকারকে তা রক্ষা করতে হবে।

(৭) কারো সাম্প্রদায়িক নির্দেশে দেবোত্তর সম্পত্তির নামে দেশব্যাপী মুসলমানদের সম্পত্তি হরণ চলবেনা। কারণ অধিকাংশ দেবোত্তর সম্পত্তি মুসলমানদের লা-খেরাজ সম্পত্তি বা নিস্কর ভ‚মি থেকে এসেছে। অবিলম্বে মুসলমানদের লা-খেরাজ সম্পত্তি মুসলমানদের ফেরত দিতে হবে।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের মুসলমানদের ‘চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত’র ইতিহাস ভুলে গেলে চলবেনা। এই বাংলার প্রায় সব জমির মালিক এক সময় মুসলমানরাই ছিলো। কিন্তু ১৭৯৩ সালে ইংরেজ বেনিয়া কর্নওয়ালিশ ‘চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত’ আইন পাশ করে মুসলমানদের থেকে লা-খেরাজ জমি কেড়ে নিয়ে হিন্দুুদের দিয়ে দেয়। ফলে এক সময়কার সম্ভ্রান্ত মুসলমানরা পথে বসে যায় এবং কর্মচারি হিন্দুরা জমিদার বনে যায়। পরবর্তিতে সেসব জমি থেকেই হিন্দুরা অধিকাংশ দেবোত্তর সম্পত্তি গড়ে তোলে। এসব জমির মালিক মূলত মুসলমানরা। এসব লা-খেরাজ জমি এখনো যেসব মুসলমানদের দখলে রয়েছে; তাদের উচ্ছেদ করে দেবোত্তর সম্পত্তির নামে হিন্দুদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে। এটা কিভাবে বৈধ হতে পারে? কারো সাম্প্রদায়িক নির্দেশে এসব লা-খেরাজ জমি থেকে মুসলমানদের উচ্ছেদ কোন মুসলমান মেনে নিবেনা। ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পন আইন’ এবং ‘দেবোত্তর সম্পত্তি আইন’ এর নামে ব্রিটিশ বেনিয়াদের মতো নতুন চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রথা বন্ধ করতে হবে। মুসলমানদের লা-খেরাজ সম্পত্তি মুসলমানদের ফেরত দিতে হবে।

(৮) বাংলাদেশে হিন্দুরা জামাই আদরে আছে। কিন্তু ভারতে মুসলমানরা চরম নিপীড়ণের স্বীকার। তারা ইসলাম পালন করতে পারেনা। গরু কোরবানিও করতে পারেনা। ভারতের মুসলমানরা যাতে কোরবানি করতে পারে, শান্তিতে থাকতে পারে তার জন্য বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রভাবশালী বাঙ্গালী নারী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ভারতের উপর চাপ প্রয়োগের দাবী।

বক্তারা বলেন, গরু জবাই নিষিদ্ধের পর এবার ভারতে ঈদুল আযহায় কোরবানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শুধু গরুই নয়, আসন্ন কোরবানির ঈদে সব ধরণের গবাদি পশু জবাইয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মুসলিম বিরোধী সাম্প্রদায়িক ভারত সরকার। ভারতের প্রাণী কল্যাণ বোর্ড সব রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়ে এ নিষেধাজ্ঞা জারির কথা জানিয়েছে। শুধু গরু জবাই নয় বা কোরবানি নয়, কাশ্মির ভারতের অংশ না হওয়া সত্তে¡ও শুধুমাত্র মুসলিম অধিবাসী হওয়ায় ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী কাশ্মিরের মুসলমানদের উপর নির্বিচারে হত্যা, নির্যাতন চালাচ্ছে। শুধু কাশ্মিরে নয়, বরং অর্ধেক জনসংখ্যা মুসলমান থাকার পরও সারা ভারতে মুসলমানদের উপর চলছে চরম বর্বরতা, নিপীড়ন ও নির্যাতন। বিভিন্ন রাজ্যে লাখ লাখ মুসলমানকে ধর্মান্তরিত করছে ভারতের উগ্র হিন্দু মৌলবাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ (আরএসএস), বিশ্ব হিন্দু পরিষদসহ বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক ও হিংস্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। সে তুলনায় বাংলাদেশে হিন্দুরা জামাই আদরে আছে।

বক্তারা বলেন, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “সারাবিশ্বের মুসলমানরা এক দেহ এক প্রাণের ন্যায়। দেহের এক অঙ্গ আঘাত পেলে অন্য অঙ্গেও আঘাত অনূভূত হয়”। তাই ভারতে মুসলমানদের উপর যুলুম-নির্যাতন মূলত এদেশের মুসলমানদের উপরই যুলুম-নির্যাতনের মতো। এক্ষেত্রে সরকার বসে থাকতে পারে না। ভারতে বর্তমানে চলা ধর্মান্তর থেকে শুরু করে বিভিন্ন দাঙ্গা বন্ধে সরকারকে ভারতের প্রতি জোড়ালো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে হবে। ভারত যেভাবে বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন হচ্ছে বলে বিভিন্ন সচিব, প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে চাপ সৃষ্টি করতে চায় বাংলাদেশেরও উচিত বাংলাদেশ থেকে প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে কড়া বার্তা দেয়া। ব্যাপক রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে হবে। মুসলমানদের প্রতি সরকারকে সহমর্মীতা দেখাতে হবে। ভারতের মুসলমানরা যাতে কোরবানি করতে পারে, শান্তিতে থাকতে পারে তার জন্য বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রভাবশালী বাঙ্গালী নারী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতের উপর চাপ প্রয়োগ করতে হবে।

(৯) পশ্চিমবঙ্গ উদ্দেশ্যমূলকভাবে ‘পশ্চিম’ বাদ দিয়েছে কেন তা খতিয়ে দেখতে হবে। এরপর দুই বাংলা এক হও- মুক্তিযুদ্ধ চেতনা বিরোধী এরূপ শ্লোগান উঠে কি-না সে ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সচেতন হওয়ার দাবী।

বক্তারা বলেন, পশ্চিমবঙ্গ কেন নামের আগের ‘পশ্চিম’ শব্দ উঠিয়ে দিলো সেটা খতিয়ে দেখতে হবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্রের পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে। কারণ এখনই বাংলাদেশ বিরোধীরা ‘দুই বাংলা এক হওয়ার’ দাবী তুলেছে। এজন্য সাংস্কৃতিক আগ্রাসনও শুরু হয়েছে। পূর্ব জার্মানী এবং পশ্চিম জার্মানী যেভাবে এক হয়ে গেছে বা উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া এক হওয়ার দাবি উঠেছে তদ্রুপ অদূর ভবিষ্যতে ‘দুই বাংলাকে এক করার’ দাবী যে আরো জোড়দারভাবে তুলবেনা তা কি বলা যাবে? সেই সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে পশ্চিমবঙ্গ নামের আগের ‘পশ্চিম’ শব্দটি উঠিয়ে দিলো কিনা সেটা এখনি খতিয়ে দেখতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বাভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখতে হবে। ইনশাআল্লাহ! মনে রাখতে হবে- স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন।

মানবন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি আখতার হুসাইন বুখারী, সম্মিলিত ইসলামী গবেষষণার সভাপতি মাওলানা আব্দুস ছাত্তার, বঙ্গবন্ধু ওলামা ফাউন্ডেশনের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ নাফেয়ী, জাতীয় কুরআন শিক্ষা মিশনের সভাপতি মাওলানা আবু বক্কর সিদ্দিকী প্রমুখ।