সন্ত্রাস দমনের নামে বিদেশি সেনা প্রবেশ দেশের জন্য হুমকি : ওলামা লীগ

ঢাকা: সন্ত্রাসীদের দমনের সহযোগীতার নামে এদেশে যে কোনো রাষ্ট্রের সেনাবাহিনী প্রবেশ ঠেকাতে হবে। সন্ত্রাস দমনের জন্য আমাদের চৌকশ যৌথ বাহিনী যথেষ্ট, বিদেশি সেনা, বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন নেই। বরং সন্ত্রাস দমনের নামে বিদেশি সেনা প্রবেশ বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য চরম হুমকি।

আজ শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামালীগ ও সমমনা ১৩ ইসলামি দল কর্তৃক আয়োজিত এক মানববন্ধনে এসব কথা বলেন বক্তারা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিশেষ করে এই দেশে আইএস তৈরীর আমেরিকান ষড়যন্ত্রে এবং এদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম দখলের আমেরিকান খায়েশ রুখে দেয়ার জন্য ওলামা লীগ সর্বাত্মক জনমত গড়ে তুলবে।

দেশের চলমান শিক্ষানীতি-২০১০ ইসলাম বিরোধী বলে এই শিক্ষা পদ্ধতি থেকে সন্ত্রাসবাদী তৈরি হচ্ছে মন্তব্য করে বক্তারা বলেন, ইসলাম বর্জিত কুফরী শিক্ষানীতি বাতিল করতে হবে। পাঠ্যক্রমে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত আবু রসূলিনা ও উম্মু রসূলিনা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, হযরত নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম, হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম, হযরত ছাহাবাই কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম, হযরত আউলিয়া-কিরাম রহমতুল্লাহিম আলাইহিমগণের জীবনী ও আদর্শের আলোকপাত নেই বলেই শিক্ষার্থীরা ইসলাম থেকে দূরে সরে সন্ত্রাসবাদে দিক্ষিত হচ্ছে। এর অবসান ঘটাতে হবে। কেননা, ইসলামেই বলা হয়েছে, যার হাত ও জবান থেকে অপর মুসলমান নিরাপদ নয়, সে মুসলমান নয়।

উপভারত মহাদদেশে সালাফী মতবাদের প্রচারণায় নিয়োজিত পিস টিভি বন্ধ করার জন্য সরকারকে আন্তরিক মোবারকবাদ জানিয়ে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে পিস টিভি মতাদর্শের অনুসারি সালাফী-জামাতীদের নজরদারিতে রাখতে হবে। তারেক মনোয়ারের মতো সন্ত্রাসবাদে উস্কানিদাতা মালানাদের ওয়াজ মাহফিল নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তাদের গ্রেফতার করতে হবে।

ঢাকার যানজট নিরসনসহ বহু সুবিধার ব্যাখ্যা করে ঢাকাকে বিকেন্দ্রীকরণের দাবি জানান ওলামা লীগ নেতৃবৃন্দ। বক্তারা বলেন,  শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতি জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে। তাহলে সন্ত্রাসী ছাত্রদের তথ্য নেয়া ও মনিটরিং সহজ হবে।পেশাজীবিদের জন্য পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান ঢাকার বাহিরের জেলা শহরগুলোতে তৈরী করতে পারলে ঢাকার উপর চাপ কমবে। ফলে বহুদিনের যানজট সমস্যার সমাধান হবে পাশাপাশি দ্রব্যমূল্যের উপরও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

বক্তারা বলেন, শুধু রাজধানীতে যানজট নিরসনের জন্য ফ্লাইওভার, মেট্রোরেলের মতো বড় বড় মেগা প্রজেক্ট না নিয়ে বরং এই টাকা দিয়ে বাকি ৬৩ জেলা উন্নত করা সম্ভব। ঢাকার মতো জীবন মান বাকি ৬৩ জেলা শহরে দিতে পারলে মানুষ ঢাকামুখি হবে না। একই সাথে পুরো বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ  হবে, বেকারত্ব কমবে ও ১৫ কোটি মানুষের জীবন মান উন্নত হবে।

মিডিয়ার সমালোচনা করে ওলামা লীগের নেতৃবৃন্দ বলেন, যেসব মিডিয়ার হঠকারীতায় বিডিআর বিদ্রোহ এবং গুলশান হত্যাকান্ড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অসুবিধা হয়েছে তাদের এবং যেসব মিডিয়া ও মিডিয়াকর্মী সন্ত্রাসীদের সাথে গোপন সম্পর্ক রাখে এবং তাদের এজেন্ট হয়ে কাজ করে তাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে। এ ধরণের মিডিয়া লাইসেন্স বাতিল করতে হবে।

দেশের চিনি শিল্প ষড়যন্ত্রের শিকার মন্তব্য করে বক্তারা বলেন, যে অর্থমন্ত্রী নিজেকে প্রতিবন্ধি বলে, সেই ব্যক্তির অব্যাহতি নেয়া উচিৎ। কৃষকের উপর অন্যায় কর আরোপ এবং আখ চাষ বন্ধ করার খায়েশ বাস্তবায়ন করতে দেয়া যাবেনা। পাটের মতো চিনি শিল্পকেও ঘুরে দাড়াতে সাহায্য করতে হবে।

ঈদের ছুটি ৯ দিন করার জন্য ওলামা লীগের দাবী মেনে নেয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। এ ছুটি অব্যাহত রাখতে হবে। এবং আগামী কুরবানী ঈদেও ষড়যন্ত্রকারীদের নির্দিষ্ট স্থানে কুরবানীর প্রচারণা প্রতিহত করতে হবে।

আওয়ামী ওলামা লীগের মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন আলহাজ্ব আখতার হোসেন বুখারি। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন- আলহাজ্ব কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সাধারণ সম্পাদক- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ, আলহাজ্জ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার, সভাপতি- সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদ, হাফেজ মাওলানা মোস্তফা চৌধুরী বাগেরহাটি, বঙ্গবন্ধু ল’ কলেজের প্রিন্সিপাল আনোয়ার হোসেন, আব্দুর রহমানসহ আরো অনেক নেতৃবৃন্দ।