আইএস সম্পৃক্ততার প্রমাণ মেলেনি নিস হামলাকারীর

ডেস্ক: ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোতে কোন হামলা হলেই প্রথম সন্দেহের তীর নিক্ষেপ হয় মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর। এরপর হামলাকারী মুসলিম পরিচয় পাওয়া মানেই সে ‘আইএস’ বলে বিনা তদন্তে প্রচার হয়ে যায়। ফ্রান্সের নিস শহরে ট্রাক হামলার ঘটনায়ও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি।
ঘাতক ট্রাক চালক লাওয়েজ বুলেলকে প্রথমে আইএস হিসেবে প্রচার হলেও পরে তদন্তে হামলাকারীকে কোন সন্ত্রাসী সংগঠন কিংবা কথিত ইসলামিক স্টেটসহ কোন ধরনের ‘সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের’ সঙ্গে এখনো কোন ধরনের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সোমবার ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বার্নার্দ ক্যাজেনুভ একথা স্বীকার করেছেন।
তিনি ফ্রান্সের আরটিএল রেডিওকে বলেন, একজন ভারসাম্যহীন ও অত্যন্ত সহিংস ব্যক্তি উগ্রবাদী ভাবধারা দ্বারা পরিচালিত হয়ে এই ঘৃণ্য হামলা চালানোর বিষয়টি আমরা বাদ দিতে পারি না। ওই হামলার ঘটনায় ৮৪ জন প্রাণ হারিয়েছে। হামলায় আহত হয়েছে বহুসংখ্যক ব্যক্তি। এএফপি।
ট্রাক হামলাকারী বুলেল ধার্মিকও ছিলেন না। এ তথ্য জানিয়েছেন তার স্ত্রীর ভাই ওয়ালিদ হামু। তিনি জানান, বুলেলের পক্ষে একজন জিহাদী হওয়া অসম্ভব।৩১ বছর বয়সী বুলেলকে অসম্মান জানিয়ে ওয়ালিদ বলেন, ‘সে (বুলেল) কখনো মসজিদে যায়নি, প্রার্থনা করেনি, রোজা রাখেনি। সে মদ্যপান করত, শুকরের গোশত খেত, মাদকদ্রব্য সেবন করত। এমনকি যে স্ত্রীর সঙ্গে তার তিনটা সন্তান আছে, তাকে মারধরও করত। এ সবকিছুই ইসলামে নিষিদ্ধ। সে ইসলামের কোনো নিয়মই পালন করত না। সে মুসলিম নয়!’

বৃহস্পতিবার নিসে বাস্তিল দিবসের অনুষ্ঠানে ট্রাক নিয়ে হামলা চালিয়ে ৮৪ জনকে হত্যা করে তিউনিশিয়ান বংশোদ্ভূত ফরাসি নাগরিক বুলেল। নিহতদের ১০ জনই শিশু। ওই ঘটনায় আহত হয়েছে ২ শতাধিক মানুষ। এদের মধ্যে ৫২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ২৫ জন আছে লাইফ সাপোর্টে।

ঘটনার পর বুলেলের স্ত্রীকে পুলিশ আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে স্ত্রী হাজের খালফাল্লাহ জানান, ট্রাক চালক বুলেলের মধ্যে কখনও ‘মৌলবাদী লক্ষণ’ দেখা যায়নি। তবে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে দু’বছর আগে বুলেলের সঙ্গে হাজেরের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় এবং হাজের আদালতে তালাকের আবেদন করেন। তাদের ৫ ও ৩ বছর এবং ১৮ মাস বয়সী তিনটি সন্তান রয়েছে।

হাজেরকে পুলিশি হেফাজতে নেয়ার পর বুলেলের অ্যাপার্টমেন্টে অভিযান চালায় পুলিশ।