মন্দিরের সোলার প্যানেল চুরি: বিচারক গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের ১০ আত্বীয়ের আগাম জামিন

আদালতে নেওয়া হচ্ছে ক্রীড়াচক্রের সভাপতিকে

ঢাকা: চাঁদাবাজির অভিযোগে করা মামলায় হাইকোর্টের বিচারক গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের ১০ স্বজনকে আগাম জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট। আজ সোমবার আসামিপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক এম. মোয়াজ্জাম হোসেন ও বিচারক আবু তাহের মোহাম্মদ সাইফুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ তাদেরকে আট সপ্তাহের আগাম জামিন দেয়। আদালতে আসামিপক্ষে শুনানি করে আইনজীবী শ ম রেজাউল করিম। সঙ্গে ছিলো আবদুর রাজ্জাক রাজু ও শামীমা ইসলাম মৌ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলো ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিত রায়।

মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, গত ১২ সেপ্টেম্বর মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাসের অনুসারী বিপ্লব রায় বাদী হয়ে মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানায় মামলাটি করে। মামলায় ১০ জনকে আসামি করা হয়। আসামিরা হলো- অনির্বাণ ঠাকুর, নিপুণ ঠাকুর, নির্মল ঠাকুর, প্রতীক ঠাকুর, সবুজ ঠাকুর, তন্ময় ঠাকুর, স্বপন ঠাকুর, দেব কুমার, প্রমথ রঞ্জন ঠাকুর ও কুমুদ রঞ্জন ঠাকুর। তারা সবাই বিচারক গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের আত্মীয়।

উল্লেখ্য, মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ইউনিয়নের আড়ুয়াকান্দি গ্রামের একটি মন্দির থেকে ১৬০ ভোল্টের সোলার প্যানেল চুরি করে শ্বশুরবাড়িতে স্থাপন এবং ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে সরকারি জায়গা থেকে চারটি গাছ কেটে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের অভিযোগ উঠে। এ বিষয়ে এলাকাবাসী স্থানীয় প্রশাসনে অভিযোগ জানানোর পরও কোনো আইনগত ব্যবস্থা না নেয়ায় বিচারক গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর গত ৩১ আগস্ট আদালতে ক্ষোভ প্রকাশ করে। আদালতে দেয়া তার বক্তব্য নিয়ে ওইদিন এবং তার পরের দিন ১ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এরপর স্থানীয় প্রশাসন ওই চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করে। এ ঘটনার পর সেখানে বিচারক গোবিন্দ্র চন্দ্র ঠাকুরের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে কিছু ব্যক্তি। এই মানববন্ধনের ছবি ও দাবিনামা ফেসবুকে দেয়া হয়।

পরে বিচারক গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের সম্মানহানির অভিযোগে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী মোশতাক আহমেদ ও দক্ষিণ কেরানিগঞ্জের বাসিন্দা ইশতিয়াক। এ রিট আবদনের উপর গত ৭ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারক কাজী রেজা-উল হক ও বিচারক জে এন দেব চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ বিচারক গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের নিরাপত্তা দেয়ার নির্দেশ দেয়। বিচারকের পরিবারের যেসব সদস্য ও স্বজন মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ী ইউনিয়নে বসবাসরত তাদের নিরাপত্তা দিতে নির্দেশ দেয়। ওই বিচারকের বিরুদ্ধে করা মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী ৩৭ জনের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আদালতে দাখিল করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। হাইকোর্টের এই আদেশের পর বিধান বিশ্বাসের অনুসারী হিসেবে পরিচিত বিপ্লব রায় বাদী হয়ে গত ১২ সেপ্টেম্বর চাঁদাবাজির অভিযোগে রাজৈর থানায় বিচারক গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের ওই ১০ স্বজনকে আসামি করে মামলা করে।