ইনজেকশন, ইনহেলার নিলে রোজা ভঙ্গ হয় কি?
ইসলামী ডেস্ক: অনেক চিকিৎসক ও আলেম বলে থাকেন যে, ‘রোযা অবস্থায় ইনজেকশন, ইনহেলার, ইনসুলিন বা স্যালাইন ইত্যাদি নিলে রোযা ভঙ্গ হয়না।’ কথাটি সম্পূর্ণই ভুল। পক্ষান্তরে রোযা অবস্থায় যে কোন ইনজেকশন, ইনহেলার, ইনসুলিন বা স্যালাইন ইত্যাদি নিলে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে এ ফতওয়াটিই ছহীহ ও গ্রহণযোগ্য। কারণ এর স্বপক্ষে ফিক্বাহ ও ফতওয়ার নির্ভরযোগ্য কিতাবসমূহের অসংখ্য দলীল বিদ্যমান রয়েছে। যেমন-
“হিদায়া মা’য়াদ দিরায়া” কিতাবের ১ম খন্ডের ২২০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে- “এবং যদি কোন ব্যক্তি ইনজেকশন নেয় … তাহলে রোযা ভঙ্গ হবে। কারণ হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন- “কিছু ভিতরে প্রবেশ করলে রোযা ভঙ্গ হবে।”
একই হাদিস অনেকগুলো তাফসীর ও ফতোয়াগ্রন্থে পাওয়া যায়। যেমন- “বাহরুর রায়িক” কিতাবের ২য় খন্ডের ২৭৮ পৃষ্ঠায়, “ফতওয়ায়ে আলমগীরী” কিতাবের ১ম খন্ডের ২০৪ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে।
অতএব, হাদিস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত হলো ‘কিছু ভিতরে প্রবেশ করলে রোজা ভঙ্গ হবে’। সেটা কোন কিছুর মাধ্যমেই হোক না কেন?
চিকিৎসা বিজ্ঞান কি বলে? চিকিৎসা বিজ্ঞান দ্বারাও প্রমানিত যে ইনজেকশন, ইনহেলার, স্যালাইন,ইনসুলিন শরীরে প্রবেশ করে মগজে গিয়ে ক্রিয়া করে। যেমন-
১. ইঞ্জেকশন: যত প্রকারের ইঞ্জেকশন হোক না কেন, তা এক সময় রক্ত স্রোতে মিশবে এবং মগজে পৌঁছাবে। । সুতরাং রোজাবস্থায় ইঞ্জেকশন নিলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে।
২.ইনহেলার: বাজারে যে সকল ইনহেলার পাওয়া যায়। তার Base হচ্ছে এরোসল (Aerosol) অর্থাৎ এরোসলের মাধ্যমেই ওষুধ নাকের ভিতর দিয়ে প্রবেশ করানো হয়। রক্তে পৌঁছালে যেহেতু ওষুধ মগজে পৌঁছে, সুতরাং রোজা ভেঙ্গে যাবে।
৩.ইনফিউশন (Infusion): অনেকেরই শারিরীক অসুস্থতার কারণে স্যালাইন নেয়ার প্রয়োজন পড়ে। বাজারে গ্লুকোজ, ডেক্সট্টোজ স্যালাইন পাওয়া যায়। রোজা রেখে স্যালাইন গ্রহণে অবশ্যই রোজা ভেঙ্গে যাবে।
৪. ইনসুলিন গ্রহণঃ এমন অনেক রোগী আছেন, যারা রোজা না রাখার মতো অসুস্থ নন কিন্তু রোজা রাখার সামর্থ্য থাকলেও ওষুধ গ্রহণের প্রয়োজন পড়ে। যেমন- ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে ইনসুলিন ইঞ্জেকশন। সেক্ষেত্রে ইনসুলিন গ্রহণের সময়সীমা পরিবর্তন করে সুফল পাওয়া যাবে। কিন্তু রোজা রেখে ইনসুলিন নিলে রোজা ভঙ্গ হবে।
উল্লেখ্য, অসুস্থ্য রোগীদের জন্য মহান আল্লাহ রব্বুল আলামীন অনেক সহজ করে দিয়েছেন। অসুস্থ্য ব্যক্তি চাইলে রোজা না রেখে রমজান মাসের পরেও কাযা রোজা আদায় করে নিতে পারবেন।