গুলশান হামলাকারীরা ড. জাকির নায়েকের অনুসারী

ঢাকাগুলশানের হলি আর্টিসান বেকারি রেস্তোরাঁয় দেশী-বিদেশী ২০ জন নিরীহ মানুষের হত্যাকারী ৫ সন্ত্রাসীর মধ্যে ২ জন (নিবরাস ইসলাম ও রোহান ইমতিয়াজ)  ছালাফী মতবাদের প্রচারক ড. জাকির নায়েকের অনুসারি ছিলেন। এরা ড. জাকির নায়েক ছাড়াও একই মতবাদের আনজেম চৌধুরী এবং শামী উইটনেসের ধর্মীয় মতাদর্শও অনুসরণ করতো।

কথিত রয়েছে, আনজেম চৌধুরী এবং শামী উইটনেস জঙ্গি সংগঠন আইএসের হয়ে লোক নিয়োগ দিতেন। ২২ বছর বয়সী জঙ্গি নিবরাস ইসলাম এই দুই ধর্মগুরুকে সামাজিক মাধ্যম টুইটারে অনুসরণ করছেন ২০১৪ সাল থেকে।

আরেক খুনি রোহান ইমতিয়াজ (আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে) গত বছর জাকির নায়েকের পিস টিভির হয়ে প্রচারণা চালিয়েছে ফেসবুকে। রোহান সমস্ত মুসলমানদের সন্ত্রাসী হওয়ার জন্য প্ররোচনা দিয়েছে ফেসবুকে।

রোহান ইমতিয়াজ

৪৯ বয়সী ধর্মগুরু আনজেম চৌধুরী ব্রিটিশ নাগরিক। ব্রিটেনের সন্ত্রাসবিরোধী আইন ভঙ্গ করায় বর্তমানে বিচারের মুখে রয়েছেন তিনি। এদিকে ভারতের ব্যাঙ্গালোরের আইএস প্রচারক শামী উইটনেসের একটি টুইটার একাউন্ট রয়েছে ২৪ বছর বয়সী মেহেদি বিশ্বাস নামে। আইএস সমর্থক হওয়ায় শামীও এখন বিচারের মুখে।

শামীর টুইটার একাউন্ট তদন্তের পর ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে তাকে আটক করা হয়েছিল। ২০১৪ সালে আগস্টে তার একাউন্ট জব্দ করা হয়। আনজেমের টুইটার একাউন্ট জব্দ করা হয় ২০১৫ সালের আগস্টে।

ডক্টর জাকির নায়েককেও যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং মালয়েশিয়ায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।  কিন্তু মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশে জাকির নায়েক অত্যন্ত জনপ্রিয়। তার পিস টিভির প্রচারণা ও লেকচারের মাধ্যমেই মুসলিমদের মাঝে এই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন তিনি।

নিবরাস ইসলাম

দীর্ঘদিন থেকে এই ধর্মগুরুদের অনুসারী হওয়াটা প্রমাণ করে গুলশান হামলার জঙ্গি নিবরাস ও রোহান রাতারাতি জঙ্গিবাদী চিন্তাচেতনায় বদলে যায় নি। তাদের পরিবর্তন হয়েছে জাকির নায়েক, আনজেম কিংবা শামীর মত ধর্মগুরুদের প্রচারণায়। চূড়ান্ত জঙ্গি হামলা করার আগে তারা অনুসরণ করেছে এদেরকে।

ইসলামিক স্টেটের মিডিয়া এবং সাইট ইন্টেলিজেন্সের দেয়া ছবি ও তথ্য অনুসারে এটা ধরে নেয়া সম্ভব যে, গুলশান হামলার জঙ্গিরা যে সময়টায় বাড়ি থেকে নিখোঁজ ছিল ঐ সময়ে তারা অস্ত্র পরিচালনা ও জঙ্গি হামলার প্রশিক্ষণ নিয়েছে।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাতে গুলশান ২ নম্বরের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালায় একদল অস্ত্রধারী জঙ্গি। এরপর তারা জিম্মি করে দেশি-বিদেশি অন্তত ৩৩ জনকে। প্রায় ১২ ঘণ্টা পর কমান্ডো অভিযান চালিয়ে ওই রেস্তোরাঁর নিয়ন্ত্রণ নেয় সশস্ত্রবাহিনী। ১৩ জন জিম্মিকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও ২০ জনের লাশ পাওয়া যায় জবাই করা অবস্থায়।