মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হলে রামপাল চুক্তি হতো না

ঢাকা: দেশের পরিবেশ ও বন রক্ষার ইতিহাসে রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তির দিনটি, অর্থাৎ ১২ জুলাইকে কালো দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি। ৫৩টি পরিবেশবাদী সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত এই কমিটির পক্ষ থেকে রামপাল চুক্তি বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে।

বুধবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন কমিটির আহ্বায়ক সুলতানা কামাল।

বক্তারা বলেন, এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ভারত লাভবান হবে। অর্থনৈতিক ও পরিবেশগতভাবে বিপর্যয় ঘটবে বাংলাদেশের।
সংবাদ সম্মেলনে সুলতানা কামাল বলেন, রামপাল চুক্তি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি হিসেবে দাবি করা বর্তমান সরকার কীভাবে এই চুক্তি করল, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি। দেশ-বিদেশে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের চরম উদ্বেগ প্রকাশের পরও সুন্দরবনের পরিবেশকে হুমকির মধ্যে রেখে এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

সুলতানা কামাল দাবি করেন, প্রথমত সুন্দরবনের পাশ থেকে এই প্রকল্প সরিয়ে নিতে হবে। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ও নিরপেক্ষ কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষা চালানোর পর তা সুন্দরবন থেকে কোনো নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে নির্মাণ করতে হবে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘গতকাল (মঙ্গলবার) রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে চুক্তি স্বাক্ষর উপলক্ষে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তাঁর এ ধন্যবাদ দেওয়ায় আমাদের মনে প্রশ্ন জেগেছে, চুক্তিটি কি তবে ভারতের স্বার্থে হচ্ছে?’ তিনি বলেন, এখনো সময় আছে, সরকার এ চুক্তি বাতিল করুক।

রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রচ্ছদ নাম ‘মৈত্রী সুপার থারমাল পাওয়ার প্ল্যান্ট’। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করছে বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড। আর নির্মাণ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভারত হেভি ইলেকট্রিক লিমিটেড। গত মঙ্গলবার ঢাকার একটি হোটেলে এ দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নির্মাণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।