শ্রীলংকায় খরার কবলে ১০ লাখ মানুষ

ডেস্ক: বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় গত চার দশকের মধ্যে সবচে ভয়াবহ খরার কবলে পড়েছে শ্রীলংকা। দ্বীপ রাষ্ট্রটির ১০ লাখের বেশি মানুষ তীব্র পানি সংকটের মুখে পড়েছেন। ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যুৎ ও কৃষি উৎপাদন। এক বিবৃতিতে দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত মৌসুমে দেশটিতে প্রয়োজনের তুলনায় অপর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে বিভিন্ন এলাকার নদীগুলোতে পানি কমে গেছে। এর ফলে সমুদ্রের লবণাক্ত পানি স্থানীয় নদীগুলোতে প্রবেশ করছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তরও নেমে গেছে। সংকট দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির।

দেশটির ১৮টি জেলা তীব্র খরার কবলে পড়েছে। এসব জেলার অন্তত ২ লাখ ৫১ হাজার ৩১০টি পরিবার এবং ১০ লাখ ৪১ হাজার ৬৯০ জন মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। সামনের সপ্তাহগুলোতে এ সংখ্যা আরো বাড়বে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। আক্রান্ত এলাকায় সুপেয় পানি পাঠানো হয়েছে।

শ্রীলংকার আবহাওয়া বিভাগের মহাপরিচালক ললিথ চন্দ্রপালা বলেন, ‘দেশের কৃষি এবং জলবিদ্যুৎ খাত তীব্র খরার কবলে পড়েছে। ১৯৭০ এর দশকের পর থেকে যতগুলো খরা হয়েছে, তার মধ্যে এটি সবচেয়ে ভয়াবহ।’

খরার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। সম্ভাব্য বিদ্যুৎ সংকট এড়াতে দেশটির প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা নাগরিকদের বিদ্যুৎ ব্যবহারের বিষয়ে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

দেশটির কৃষকরা ৮ লাখ হেক্টর চাষাবাদ উপযোগী জায়গার মাত্র এক-তৃতীয়াংশের মধ্যে চাষাবাদ করতে পেরেছেন। যা গত ৩০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। খরার কারণে সৃষ্ট খাদ্য স্বল্পতা এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে এরই মধ্যে একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে শ্রীলংকা সরকার।

খরার প্রভাবে পানির স্তর নেমে যাওয়ায় দেশটির অন্যতম বড় কালু গঙ্গা নদীর পানিতে সমুদ্রের পানি মিশে মাত্রাতিরিক্ত লবণাক্ততা ছড়িয়ে পড়েছে। তাই দেশটির ন্যাশনাল ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড ড্রেনেজ বোর্ড মানুষকে এ নদীর পানি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে বলেছে। – আল জাজিরা