ডিজিটাল মুদ্রা চুরির সবচেয়ে বড় ঘটনা জাপানে

ডেস্ক: কয়েনচেক নামে জাপানের একটি প্রধান ডিজিটাল মুদ্রা লেনদেন প্রতিষ্ঠান জানায়, হ্যাকিংয়ের শিকার হওয়ায় তারা অন্তত ৫৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার ভার্চুয়াল সম্পদ হারিয়েছে। এনইএম নামে অল্প পরিচিত এ ডিজিটাল মুদ্রা খোয়ানোর পর পরই প্রতিষ্ঠানটি সব ডিপোজিট স্থগিত করেছে। এছাড়া বিটকয়েন বাদে সব ক্রিপ্টোকারেন্সি উঠিয়ে নিয়েছে। খবর বিবিসি।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ডিজিটাল চুরির ঘটনা এটি। শুক্রবার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েনচেকের এক প্রতিনিধি জাপানি গণমাধ্যমকে বলেছিলো, গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণ দেয়া সম্ভব না-ও হতে পারে। কিন্তু রোববার বিবিসিকে জানানো হয় গ্রাহকদের চুরি হওয়া অর্থ ফেরত দেবে কয়েনচেক।

টোকিও ভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠানটি আরো জানায়, তাদের অন্তত ২ লাখ ৬০ হাজার গ্রাহক হ্যাকিংয়ের ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ‘অবৈধ অনুপ্রবেশের’ প্রচেষ্টা টের পেয়েছে। বিবৃতিতে কয়েনচেক তাদের গ্রাহকদের আশ্বস্ত করে জানিয়েছে, চুরি হওয়া ৫ হাজার ৮০০ কোটি ইয়েনের প্রায় ৯০ শতাংশই ফেরত দেবে তারা।

চুরি হওয়া ডিজিটাল মুদ্রা ‘হট ওয়ালেটে’ রাখা হয়েছে বলে জানায় কয়েনচেক। হ্যাকাররা এখনো তা নিরাপদ ‘কোল্ড ওয়ালেটে’ রাখতে সক্ষম হয়নি বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া চুরিকৃত মুদ্রা কোথায় রাখা হয়েছে, সেগুলোর ডিজিটাল অ্যাড্রেস শনাক্ত করতে পেরেছে কয়েনচেক।

উল্লেখ্য, জাপানে অন্তত ১০ হাজারেরও বেশি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এ ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার করে। ডিজিটাল মুদ্রা হিসেবে এনইএম বিশ্বের শীর্ষ মুদ্রার তালিকায় দশম স্থানে রয়েছে। বিশাল এ চুরির ঘটনায় এর মূল্যমান ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ১১ শতাংশ পড়ে যায়। অন্যান্য মুদ্রায়ও এর প্রভাব দৃশ্যমান হয়েছে। বিটকয়েনের মান ৩ দশমিক ৪০ শতাংশ এবং রিপলের ৯ দশমিক ৯০ শতাংশ কমেছে।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে টোকিওর আরেকটি মুদ্রা বিনিময় প্রতিষ্ঠান এমটিগক্স ৪০ কোটি ডলার অনলাইন চুরির শিকার হয়েছিল।
কয়েনচেক তাদের সংবাদ বিবৃতিতে হ্যাকিংটি কখন ও কীভাবে সম্পন্ন হয়, সে বিষয়ে বলতে গিয়ে জানায়, শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ২টা ৫৭ মিনিট (গ্রিনিচ মান সময় বৃহস্পতিবার ৫টা ৫৭ মিনিট) হ্যাকিংটি সম্পন্ন হয়।

টোকিও স্টক এক্সচেঞ্জে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কোম্পানিটির চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) ইউসুকি অতসুকা জানায়, কয়েনচেক অ্যাড্রেস থেকে ৫২ কোটি ৩০ লাখ ডলারের এনইএম লোপাট হয়েছে। সব হিসাবে মিলিয়ে দেখা গেছে, জাপানি মুদ্রায় এর মূল্যমান ৫ হাজার ৮০০ কোটি ইয়েন।

কয়েনচেক এখনো নিশ্চিত করেনি ঠিক কতজন গ্রাহক হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছে। এমনকি এটাও জানা সম্ভব হয়নি হ্যাকিংটি জাপান থেকে হয়েছে নাকি বাইরে থেকে করা হয়েছে।

কয়েনচেকের সিওও অতসুকা বলে, ‘কোথায় মুদ্রাগুলো পাঠানো হয়েছে, সেটি জানতে পেরেছি। আমরা তাদের অনুসরণ করে যাচ্ছি। যদি তা অব্যাহত রাখতে পারি, তাহলে চুরি হওয়া মুদ্রা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হতে পারে।

ষয়টি জাপান পুলিশ ও দেশটির আর্থিক সেবা সংস্থাকে অবহিত করেছে কয়েনচেক।২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত টোকিওভিত্তিক এ কোম্পানিটিতে গেল আগস্ট নাগাদ ৭১ জন কর্মী কর্মরত ছিল।