সর্বকালের সেরা মুষ্ঠিযোদ্ধা মুহম্মদ আলীর ইন্তেকাল

ডেস্ক: বিশ্বের সর্বকালের সেরা মুষ্ঠিযোদ্ধা সাবেক বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন মুহাম্মদ আলী আর নেই। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় অ্যারিজোনার ফিনিক্স এলাকার একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান।

সেখানে তিনি গত কয়েক দিন যাবৎ শ্বাসযন্ত্রের জটিলতায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার পরিবারের মুখপাত্র বব গানেল এনবিসি নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

 বব গানেল এনবিসি নিউজকে বলেন, ‘পারকিনসন রোগের সঙ্গে ৩২ বছরের যুদ্ধের পর  মুহাম্মদ আলী ৭৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। তিনবারের বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন মুষ্টিযোদ্ধা শুক্রবার সন্ধ্যায় মারা যান।’

প্রায় তিন দশক ধরে মুহাম্মদ আলী পারকিনসন রোগে আক্রান্ত ছিলেন। নিজ শহর কেনটাকির লুইসভিলে তার দাফন কাফন পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

১৯৮১ সালের বক্সিং থেকে অবসরের তিন বছরের মাথায় পারকিনসন্স ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন মুহাম্মদ আলী। সবশেষ মারাত্মক মূত্রনালীর সংক্রমণে ভুগে ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন সর্বকালের অন্যতম সেরা এ ক্রীড়াবিদ।

মুহাম্মদ আলীর জন্ম হয়েছিল ১৯৪২ সালের ১৭ই জানুয়ারি, ক্যাসিয়াস মার্সেলাস ক্লে হিসেবে কেনটাকি রাজ্যের লুইভিল শহরে। ক্যসিয়াস ক্লে ১৯৬৪ সালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নাম বদলে রাখেন মুহাম্মদ আলী। তিনি প্রথম সবার নজর কাড়েন ১৯৬০ সালে রোম অলিম্পিকসে। সেখানে তিনি স্বর্ণপদক জয় করেন।

এর চার বছর পর সনি লিস্টনকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হন তিনি।
সেই শিরোপা জয়ের ঠিক পর দিন তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার ঘোষণা দেন।

ভিয়েতনাম যুদ্ধকে মুহাম্মদ আলী অনৈতিক বলে মনে করতেন। সেকারণে আমেরিকান হিসেবে ওই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে তিনি অস্বীকৃতি জানান।

তার এই নৈতিক অবস্থানের জন্য সে সময় তার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ানের শিরোপা কেড়ে নেয়া হয়েছিল।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রায় আড়াই বছর ধরে আইনি লড়াই চলেছিল।

আলী আবার বক্সিং রিঙে ফিরে আসেন এবং জর্জ ফোরম্যানকে পরাজিত করে আবার বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হন।

বক্সিং থেকে অবসর নেবার পর মুহাম্মদ আলী পার্কিনসন রোগে আক্রান্ত হন।

তৎকালীন জায়ার (বর্তমান নাম গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র)-এর রাজধানী কিনশাসায় ১৯৭৪ সালে হওয়া এই প্রতিযোগিতার আরেকটি জনপ্রিয় নাম: রাম্বল ইন দা জাঙ্গল।

এর পর মুহাম্মদ আলীকে অনেকেই চ্যালেঞ্জ করেন এবং এক সময় তিনি লিওন স্পিংক্সের কাছে পরাজিত হন। কিন্তু ফিরতি ম্যাচে তাকে আবার পরাজিত করে আলী তিনবার বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাস তৈরি করেন।

বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ
মুহম্মদ আলী ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ সফর করেন।

সরকারের আমন্ত্রণে পাঁচ দিনের এই সফরের সময় তাকে বিপুল সংবর্ধনা দেয়া হয় এবং সম্মানসূচক নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়।

পাশাপাশি তিনি তৎকালীন ঢাকা স্টেডিয়ামে তিনি প্রদর্শনী লড়াইয়ে অংশ নেন। তার প্রতিপক্ষ ছিল ১২-বছর বয়সী মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন।

সূত্র: বিবিসি, এবিসি নিউজ