সচিবালয়ে ‘সুন্দরী’ তদবিরবাজ ঠেকাতে শুরু হচ্ছে অভিযান

ঢাকা: সাম্প্রতিক সময়ে জনপ্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু সচিবালয়ে অযাচিত তদবিরকারীদের আনাগোনা আশঙ্কাজনকহারে বেড়েছে। তাদের তালিকায় অন্তত ২ ডজন ‘সুন্দরী’ নারীও রয়েছে। এসব তদবিরবাজ চাকরি, বদলি থেকে শুরু করে নানা কাজ করে ফায়দা হাসিল করছেন। সচিবালয়ের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। লক্ষ্যÑ সচিবালয়ের নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও সুরক্ষিত করা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব ড. কামাল উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে গতকাল বিকালে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নিরাপত্তার দিক বিবেচনায় সচিবালয়ে দর্শনার্থী প্রবেশে আরও কড়াকড়ি করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পাশাপাশি অযাচিত ব্যক্তিদের কোনো কর্মকর্তা যেন পাস প্রদান না করেন সে ব্যাপারে কঠোরতা অবলম্বনের সিদ্ধান্ত হয়।

সভায় সচিবালয়ের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়। উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি সচিবালয়ে অযাচিত ব্যক্তিদের (তদবিরবাজ) আনাগোনা বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা এক মন্ত্রণালয়ের পাস নিয়ে একাধিক মন্ত্রণালয়ে গমন করছেন। অযাচিত তদবির করছেন। তাদের সময় দিতে গিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। আবার কোনো কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী তদবিরবাজদের সঙ্গে সখ্য গড়ছেন। বিশেষ করে তদবিরবাজ ‘সুন্দরী’ নারীদের সঙ্গে অফিসকক্ষে কাজ ফেলে আড্ডা দিচ্ছেন। এখন থেকে এসব তদবিরবাজ ‘সুন্দরী’ নারীরা যেন সচিবালয়ে ঢুকতে না পারে, এ ব্যাপারে পুলিশ ও গোয়েন্দা দিয়ে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়।

সূত্র জানায়, তদবিরবাজ ‘সুন্দরী’ নারীরা বাহারি পোশাক পরে প্রতিদিন সকালে সচিবালয়ে ঢোকেন। অফিস শেষ হওয়ার পর বের হন। সারা দিন তারা এক মন্ত্রণালয় থেকে আরেক মন্ত্রণালয়ে যান। তদবির করেন। তাদের সঙ্গে আবার বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব, উপসচিব থেকে শুরু করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দহরম-মহরম সম্পর্ক। এসব কর্মকর্তা-কর্মচারী আবার ‘সুন্দরী’ তদবিরবাজদের সচিবালয়ে প্রবেশের পাস প্রদান করে থাকেন। এসব ‘সুন্দরী’ নারী কোনো কর্মকর্তার কক্ষে প্রবেশ করলে সহজে বের হন না। এতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এসব তদবিরবাজ ‘সুন্দরী’ নারী আবার ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন পদ-পদবির পরিচয় দিয়ে সচিবালয়ে ঘুরে বেড়ান। সচিবালয়ে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের কেউ-কেউ তাদের চেনেন। তবে তাদের ব্যাপারে টুঁ শব্দ করার সাহস পান না।