ঈদের টানা ছুটিতে ব্যাংকিং নিয়ে উদ্বেগ, বিপাকে ব্যাবসায়ীরা
ঢাকা: পবিত্র ঈদুল ফিতরের টানা ৯ দিনের ছুটি থাকবে পোশাকশিল্প এলাকা বাদে দেশের সব ব্যাংকে। আগামী ৪ জুলাই সব ব্যাংক খোলা রাখার ব্যাপারে সরকার চিন্তা-ভাবনা করলেও তা যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। ঈদের দীর্ঘ ছুটির সময় ব্যাংক লেনদেনে নগদ টাকা জমা রাখা নিয়ে ব্যবসায়ীরা শঙ্কিত। ঈদ মৌসুমে আর্থিক কর্মকাণ্ড অনেক বেশি হওয়ায় তা ব্যাংকে জমা না রাখতে পারলে ঝুঁকির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। অনেকে ছিনতাই, ডাকাতি বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করছেন। অন্যদিকে অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ঈদের বেতন ও বোনাস ঈদের আগে দিয়ে থাকে। ব্যাংক বন্ধ থাকায় এসব প্রতিষ্ঠান কর্মীদের বেতন-বোনাস দিতে পারবে কি না সেটা নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
টানা ছুটির সময় ব্যবসায়ীদের সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। দেশের শিল্প এলাকা বিশেষ করে গার্মেন্ট সংশ্লিষ্ট এলাকায় ব্যাংক লেনদেন নিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা করা হলেও বিভিন্ন বিপণিবিতানের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এত দীর্ঘ সময় ব্যাংক ছুটি থাকলে ব্যবসায়ীরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। প্রতিদিনের নগদ অর্থ জমা করতে না পারলে জীবনের ঝুঁকি থাকে। কারণ এই সময় ছিনতাই, ডাকাতিও বৃদ্ধি পায়। ব্যবসায়ীরা ঋণের কিস্তি জমা দিতে পারবে না। ফলে অতিরিক্ত সুদ গুনতে হবে।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দোকান মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘এত দীর্ঘ সময় ব্যাংক বন্ধ থাকলে ব্যবসারীরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। ঈদের মৌসুমে বিভিন্ন খাতের বাণিজ্য বৃদ্ধি পায়। এই বাণিজ্যের নগদ টাকা ব্যবসায়ীরা কোথায় রাখবেন? ব্যাংকে জমা না রাখতে পারলে সেটা নিজের কাছে রাখা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এ ছাড়া নগদ অর্থ বাসা বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে রাখলে ডাকাতির ঘটনাও বাড়তে পারে। টাকা নিয়ে বাইরে কোথাও বের হলে ছিনতাইয়ের শিকার হতে পারেন অনেকে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এ ছাড়া এত দীর্ঘ সময় ব্যাংক বন্ধ থাকায় যাঁরা ঋণ নিয়ে ব্যবসা করেন তাঁরা কিস্তিও জমা দিতে পারবেন না। অনেকে প্রতি সপ্তাহে কিস্তি জমা দেন। সাধারণ ঋণের ক্ষেত্রে ১৬/১৭ শতাংশ সুদ হারে টাকা দিতে হয়। ৯ দিন বন্ধ থাকলে অনেকে তা দিতে পারবেন না। ফলে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির শিকার হবেন। এ জন্য আমাদের দাবি, প্রতিদিন অন্তত দুই ঘণ্টা হলেও সব ব্যাংক শাখা খোলা রাখা হোক।’
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আগামী ১ থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত দেশের সব ব্যাংক বন্ধ থাকবে। সরকারি ছুটির ঘোষণায় সব ব্যাংকের শাখাও এ জন্য বন্ধ থাকবে। তবে ছুটির মধ্যে শুধু শিল্প এলাকায় অবস্থিত বিশেষ করে গার্মেন্ট এলাকায় ব্যাংকের শাখাগুলো ২ ও ৩ জুলাই খোলা থাকবে। এ ছাড়া এডি শাখাগুলোও (বৈদেশিক বাণিজ্য) ওই সময় খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।