কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়তে ইসরাইলের কাছে বাংলাদেশি হিন্দুদের চিঠি

ডেস্ক: ইহুদীবাদী ইসরাইল ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কাছে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়।

ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থার (মোসাদ) সদস্য মেনদি এন সাফাদির মাধ্যমে তারা ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিটি পাঠিয়েছে। চিঠিতে বাংলাদেশী হিন্দুরা ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক করার আগ্রহ প্রকাশ হয়েছে। দ্য হিন্দু স্ট্রাগল কমিটি নামের একটি সংগঠন সম্প্রতি ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীকে এই চিঠিটি পাঠিয়েছে।

Safadi discussing the plight of Bangladeshi Hindus
সাফাদি সেন্টারে মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশি হিন্দু

সাফাদি সেন্টারের ইন্টারন্যাশনাল ডিপলোমেসি এন্ড পাবলিক রিলেশন জানায়, সাফাদি সেন্টারের প্রধান মেনদি সাফাদির মাধ্যমে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষে একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। যেখানে তারা ইসরাইল রাষ্ট্রের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক স্থাপন করতে চাওয়ার কথা বলেছে।

চিঠিতে বাংলাদেশের হিন্দুরা গুরুত্ব দিয়ে লিখেছে, আমাদের ভারতীয় দাদারা ইসরাইলের সঙ্গে সংগঠিত ও আনুষ্ঠানিকভাবে সুসম্পর্ক স্থাপন করেছে। আমরা জানি এই সম্পর্ক স্থাপন হয়েছে দুই দেশের মধ্যে কিছু সাধারণ বিষয়ে সাদৃশ থাকার কারণে। আমরা বাংলাদেশেও ভারতের মতো ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে চাই। এই সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশে হিন্দুরা নিরাপদে থাকতে পারবে। এই সম্প্রদায়ের মানুষেরা এখানে অরক্ষিত ও নিরুপায়।

চিঠিতে হিন্দু স্ট্রাগল কমিটি জানায়, বাংলাদেশের সঙ্গে ইসরাইল রাষ্ট্রের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই এটি আমাদের ইহুদী দাদাদের জন্য দুঃখজনক। বাংলাদেশের হিন্দুদের পক্ষে আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। বাংলাদেশের ক্ষমতাসীনরা কয়েক দশক পরেও কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে কাজ করেনি। বাংলাদেশের মুসলিম ভ্রাতৃত্বের কারণেই এই সম্পর্ক স্থাপন হয়নি। বাংলাদেশের সব সরকারই মুসলিমদের দ্বারা প্রভাবিত। তাই তারা ইসরাইল রাষ্ট্রের সঙ্গে এই অবিচার করেছে।

দ্য হিন্দু স্ট্রাগল কমিটি পরামর্শ দিয়ে বলেছে, এই অবিচার হ্রাস করতে বাংলাদেশ ও ইসরাইলের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে অসম্পাদিত কাজটি করার সুযোগ তৈরি হবে। এই ধরনের আচরণের জন্য ইসরাইলের কাছে বাংলাদেশের অবশ্যই ক্ষমা চাওয়া উচিৎ। তারা দাবি করেছে, ভারত ও বাংলাদেশে ৩০ কোটি বাঙালি হিন্দু রয়েছে। ঐতিহাসিকভাবে তাদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধ রয়েছে। তাদের আধুনিক শিক্ষা, বিজ্ঞান ও আধ্যাত্মিক জ্ঞান রয়েছে। ইহুদী দাদাদের সঙ্গে তাদের অনেক মিলও রয়েছে। হিন্দুরাও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিজ্ঞান ও আবিষ্কারে ইহুদীদের মতোই এগিয়ে যাচ্ছে। দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াও প্রায় একই।

মুসলমানদের শত্রু উল্লেখ করে স্ট্রাগল কমিটি ইসরাইলকে লিখেছে, হিন্দু কমিটি মুসলমানদের উগ্রবাদের(!) তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং হিন্দু ও ইহুদী দুই সম্প্রদায়ের শত্রু একই। মধ্যপ্রাচ্যে ইহুদী ও ইসরাইল রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর অপরাধ করছে। মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম অধ্যুষিত দেশের ক্ষমা চাওয়া ও সমর্থন দুর্ভাগ্যজনক। এই গ্রুপ ঘৃণ্য পরিভাষা ও কুরআন ব্যবহার করে ইহুদী ও ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছে। তারা বাংলাদেশ ও ভারতের ইহুদী ও হিন্দুদের উপর হামলা করছে। একই সঙ্গে থেকে এই অপরাধ করছে তারা। তবে ইসলামের অনুসারিরা ইহুদী ও হিন্দুদের হামলায় মন্তব্য করছেন না। ইহুদী ও হিন্দুদের বিপক্ষ একই আর তা হলো ইসলামি গ্রুপ ও তাদের সরকারি ও বেসরকারি সমর্থকরা।

পরিশেষে তারা ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে ভারত ও বাংলাদেশের বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে শক্ত ও সুসম্পর্ক স্থাপনের আহবান জানিয়েছেন। বাংলাদেশের বর্তমান সরকার থাকা সঙ্গেও তা করা সম্ভব বলে মনে করছে তারা।

সূত্র: জেরুজালেম অনলাইন‘র ৬ জুলাই এর নিবন্ধ। তবে চিঠিটি দ্য হিন্দু স্ট্রাগল কমিটির পক্ষ থেকে কে পাঠিয়েছে তার কোনো উল্লেখ করা হয়নি।