বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের সর্বজনীন মডেল: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ৮ বছর আগের বাংলাদেশ আর এখনকার বাংলাদেশ এক নয়, আজকের বাংলাদেশ আত্মপ্রত্যয়ী বাংলাদেশ। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের সর্বজনীন মডেল। দ্রুত সময়ের মধ্যে দারিদ্র্য হ্রাসে বাংলাদেশের সাফল্যকে বিশ্বব্যাংক মডেল হিসেবে বিশ্বব্যাপী উপস্থাপন করছে।

ক্ষমতাসীন সরকারের ৩ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা জানান। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এ ভাষণ শুরু হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের এবং দেশের মানুষের উন্নয়ন এবং কল্যাণের জন্য আমরা আমাদের চেষ্টার ত্রুটি করিনি। আমাদের মনে রাখতে হবে, বিপুল জনসংখ্যার এদেশে সম্পদের পরিমাণ সীমিত। দীর্ঘকাল দেশে কোন আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হয়নি। বহু সমস্যা পুঞ্জিভূত হয়ে পাহাড়-সমান হয়ে দাঁড়িয়েছিল। মোকাবিলা করতে হয়েছে অভ্যন্তরীণ বিরুদ্ধ পরিবেশ। বৈশ্বিক বৈরি অর্থনৈতিক অবস্থাও উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বার বার। সব বাধা পেরিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার টানা ৮ বছর সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে ৯ম বছরে পদার্পন করতে যাচ্ছে। আপনারা এই দীর্ঘ সময় ধরে আমাকে এবং আমার সরকারকে আপনাদের সেবায় নিয়োজিত থাকার সুযোগ দিয়েছেন। এ জন্য আমি আপনাদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’

যোগাযোগ খাতের উন্নয়ন তুলে ধরেন শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয় কাচপুর, ২য় মেঘনা এবং ২য় গোমতি সেতু নির্মাণের কাজ শিগগিরই শুরু হবে।

তিনি বলেন, আমরা দায়িত্ব নেয়ার পর যোগাযোগ খাতে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। ৪৮টি বৃহৎ সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। ঢাকায় হাতিরঝিল প্রকল্প, কুড়িল-বিশ্বরোড বহুমুখী উড়াল সেতু, মিরপুর-বিমানবন্দর জিল্লুর রহমান উড়াল সেতু, বনানী ওভারপাস, মেয়র হানিফ উড়াল সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে।

“মেট্রোরেল নির্মাণ কাজও শুরু হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন চালু হয়েছে। নবীনগর-ডিইপিজেড-চন্দ্রা সড়ক এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক ৪-লেনে উন্নীত করা হয়েছে। চন্দ্রা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক এবং ঢাকা-সিলেট চার-লেনে উন্নীত করার কাজ চলছে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার রেলওয়েকে আধুনিকায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রামের মধ্যে দ্রুতগতিসম্পন্ন এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করা হয়েছে। ইলেকট্রিক ট্রেন ও পাতাল ট্রেনের সম্ভ্যবতা যাচাইয়ের কাজ চলছে।

শেখ হাসিনা বলেন,  নতুন ২০টি মিটারগেজ এবং ২৬টি ব্রডগেজ লোকোমোটিভ, ১২০টি ব্রডগেজ যাত্রীবাহী গাড়ী, ১৬৫টি ব্রডগেজ ও ৮১টি মিটারগেজ ট্যাংক ওয়াগন, ২৭০টি মিটারগেজ ফ্লাট ওয়াগন এবং ২০ সেট মিটারগেজ ডেমু সংগ্রহ করা হয়েছে।

“আরো ২০০টি মিটারগেজ ও ৫০টি ব্রডগেজ যাত্রীবাহী ক্যারেজ সংগ্রহের জন্য প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। সকল জেলাকে রেল যোগাযোগের আওতায় আনা হবে।”

সরকার নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে যাত্রী পরিবহনের জন্য ৪৫টি নৌযান নির্মাণ ও চালু করেছে। দুইটি যাত্রীবাহী জাহাজ ও চারটি সি-ট্রাক জাতীয় নৌপরিবহনে সংযুক্ত হয়েছে। নৌ-পথের নাব্যতা বৃদ্ধি করতে ১৪টি ড্রেজার কেনা হয়েছে। আরও ১৭টি ড্রেজার ক্রয় প্রক্রিয়াধীন আছে।