ঈদে লম্বা ছুটির সুফল, টার্মিনালগুলো অনেকটা ‍ফাঁকা

ঢাকা: ঈদের ছুটি মানেই তাড়াহুড়ো করে বাড়ি ফেরা, টার্মিনালে উপচে পড়া ভিড়, টিকিটের কালোবাজারি আর ভোগান্তির চূড়ান্ত পরিস্থিতির শিকার। কিন্তু এবারের ঈদের ছুটিতে নেই চিরাচরিত সেই সমস্যাগুলো। সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে শুরু করে মহাখালি বাস টার্মিনাল এমনকি গাবতলী বাস টার্মিনালও এখন অনেকটাই ফাঁকা। উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের কিছু যাত্রী আসলেও কোনো গাড়িই সম্পূর্ণ বোঝাই করে যেতে পারছে না গন্তব্যে।

বুধবার (০৬ জুলাই) সায়দাবাদ, মহাখালী ও গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকা ঘুরে যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

তারা বলেছেন, এবার ঈদে লম্বা ছুটির কারণে মানুষ আগেভাগেই ধীরে সুস্থ্যে বাড়ি যেতে পেড়েছে। মঙ্গলবারের মধ্যে মুটামুটি ভিড় ছিলো। যারা যেতে পারেননি, তারাই বুধবার সকালে গাবতলী এসেছেন।

গাবতলীর সাকুরা পরিবহনের কাউন্টারের কর্মকর্তা লিটন বলেন, ভোর সাড়ে ৬টা থেকে সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত তাদের চেয়ার ও নরমাল ৭টি বাস বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। ৪০ সিটের প্রত্যেকটি গাড়িতেই ২ থেকে ৫টি করে সিট খালি রয়েছে।

লিটন আরো বলেন, সাড়ে ১০টায় ৪০ সিটের যে বাসটি ছেড়ে গেছে সেখানে বুক হয়েছে মাত্র ২২টি। পরবর্তীতে নির্ধারিত কোনো বাস নেই। যাত্রী আসা সাপেক্ষে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, যারা মঙ্গলবার যেতে পারেননি বা যানবাহনে সিট পাননি তারাই বুধবার সকাল থেকে কাউন্টারে এসেছেন। বেলা ১১টা নাগাদ কাউন্টারগুলোর সামনে হাতে গোনা দু’একজন করে যাত্রীর দেখা মিলেছে।

ঢাকা-খুলনা রুটে চলাচলকারী ঈগল পরিবহনের কাউন্টার কর্মকর্তা বশির আহমেদ বলেন, বুধবার সকাল সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত পর্যন্ত ৫২সিটের ৩টি বাস ছাড়া হয়েছে। তিনটি বাসে ১২-১৩টি করে সিট খালি রেখেই ছাড়া হয়েছে।

বশির বলেন, আধাঘণ্টা পর পর বাস ছাড়ার কথা থাকলেও সবগুলো বাতিল করা হয়েছে। বেলা সাড়ে ১১টার গাড়িতে পৌনে ১১টা পর্যন্ত বুকিং হয়েছে মাত্র ১টি সিট।

নড়াইলের কালিয়া যেতে গাবতলী এসেছেন ফিরোজ মিয়া। তিনি রামপুরায় মুদি দোকান করেন। ঈদের আগের দিন বেচাকেনার চাপ থাকায় তিনি বাড়িতে যান ঈদের পরে। এবার ঈদ একদিন পিছিয়ে যাওয়া আগেই বাড়ি যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।

ফিরোজ মিয়া বলেন, সবাই মঙ্গলবারই ঢাকা ছেড়েছেন। বুধবার ঈদ হলে আমিও পরে যেতাম। ঈদ একদিন পিছিয়ে যাওয়া আগে যেতে পারছি। তবে গাবতলী আসার আগে গাড়ি নিয়ে যে টেনশনে ছিলাম। কিন্তু এবার ভিড় না থাকায় আসার সঙ্গে সঙ্গে টিকিট পেয়ে যাই। অন্যান্যবার টিকেটের জন্য রীতিমতো যুদ্ধ করতে হতো। পাওয়া গেলেও সোনার হরিণের দাম দিয়েই টিকেট সংগ্রহ করতে হতো। এবার লম্বা ছুটির ফলে এসব হয়রানি থেকে রেহাই পাওয়া গেছে।