ইংরেজি ২য় পত্র প্রশ্নও ফাঁস, শিক্ষামন্ত্রীকে বহিস্কারের দাবি সংসদে

ঢাকা: চতুর্থবারের মতো প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার ঘটনা ঘটলো চলমান এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায়। আজ  বুধবার অনুষ্ঠিত ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্নপত্রও ফাঁস হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর ফলে দেশের সর্ববৃহৎ এই সাধারণ পরীক্ষার এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত চারটি বিষয়ের প্রশ্নই ফাঁস হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেলো। বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র এবং ইংরেজি প্রথম পত্রের পর ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের রচনামূলক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও ফাঁস হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

বুধবার পরীক্ষা শুরুর অন্তত ৪৮ মিনিট আগে সকাল ৯টা ১২ মিনিটে ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের ‘খ’ সেটের গাঁদা প্রশ্নপত্রটি হোয়াটসঅ্যাপের একটি গ্রুপে পাওয়া গেছে। এর সঙ্গে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়া প্রশ্নপত্রের হুবহু মিল পাওয়া গেছে।
বুধবার সকাল ১০টায় ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষাটি শুরু হয়। শেষ হয় দুপুর ১টায়।

মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমোসহ বিভিন্ন গ্রুপ ও পেজে নজর রাখার পর সকাল ৯টা ১২ মিনিটে ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের খ সেটের প্রশ্নপত্রটি হোয়াটসঅ্যাপের একটি গ্রুপে পাওয়া যায়। এর সঙ্গে ছিল হাতে লেখা উত্তরপত্রও। এরপর থেকে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নপত্রটি ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। পরীক্ষা শেষ হলে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে পাওয়া প্রশ্নের সঙ্গে ওই প্রশ্নের হুবহু মিল পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকার বলেছে, প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে একটি কমিটি কাজ করছে। বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়সহ আমরাও তদারকিতে আছি।
এর আগে ১ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) বাংলা প্রথম পত্রের প্রশ্ন একই কায়দায় ফাঁসের অভিযোগ পাওয়া যায়। বাংলা প্রথম পত্রের বহুনির্বাচনি অভীক্ষার ‘খ’ সেট প্রশ্নপত্র পরীক্ষার প্রশ্ন ও ফেসবুকে ফাঁস হওয়া প্রশ্নের হুবহু মিল ছিল। পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগেই তা ফেসবুকে পাওয়া যায়।

৩ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) সকালে পরীক্ষা শুরুর প্রায় ঘণ্টাখানেক আগে বাংলা দ্বিতীয় পত্রের নৈর্ব্যক্তিক (বহুনির্বচনি) অভীক্ষার ‘খ’ সেটের উত্তরসহ প্রশ্নপত্র পাওয়া যায় ফেসবুকে। যার সঙ্গে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়া প্রশ্নপত্র হুবহু মিলে যায়।
আর ৫ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষা শুরুর অন্তত দুই ঘণ্টা আগে সকাল ৮টা ৪ মিনিটে ইংরেজি প্রথম পত্রের ‘ক’ সেটের প্রশ্ন ফাঁস হয়। যার সঙ্গে অনুষ্ঠিত হওয়া প্রশ্নপত্রের হুবহু মিল পাওয়া গেছে।

গত সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারী) প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধ করতে না পারা ও সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ নিতে ‘উৎসাহিত’ করার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের অপসারণের দাবি উঠেছে জাতীয় সংসদে। পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে এ দাবি জানান।

তিনি বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস মহামারি আকারে রূপ নিয়েছে, তা শিক্ষামন্ত্রী বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাছাড়া কয়েকদিন আগে শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষা অধিদপ্তরের এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, আপনারা ঘুষ খান সহনীয় পর্যায়ে। তিনি এও বলেছিলেন, আমিও ঘুষ খাই, অন্য মন্ত্রীরাও ঘুষ খান। এটা বলার পরে উনি মন্ত্রী হিসেবে কিভাবে থাকতে পারেন? এমন মন্তব্য করে অবিলম্বে শিক্ষামন্ত্রীকে তার ব্যর্থতা, দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বীকার করে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু। আর তিনি পদত্যাগ না করলে তাকে বরখাস্ত করে নতুন মন্ত্রী নিয়োগ করতে প্রধানমন্ত্রীকে পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ জানান জাপার এ সংসদ সদস্য।