পাহাড়ি পতিত জমিতে আনারসের বাম্পার ফলন
নিউজ নাইন২৪ডটকম, হবিগঞ্জ: স্থানটি হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ রেঞ্জের পুটিজুরী বনবিটের পাহাড়ি এলাকা। এখানে টিলায় টিলায় চাষ হয়েছে আনারস। আবাদকৃত আনারসের ফলন মন কেড়ে নেয়। আনারসের বাম্পার ফলন হওয়ায় মুখে হাসি ফুটেছে তাদের। চাষিরা মনে করেন এবার আনারস বিক্রি করে তারা খুবই লাভবান হবেন।
এখানের আনারস বিষমুক্ত। কারণ এর ফলনে কীটনাশকের প্রয়োগ হয়নি। জৈষ্ঠ্য মাসে এ আনারস গাছেই পাকবে। তারপর এগুলো বিক্রির জন্য স্থানীয় বাজারের আড়তে নিয়ে যাওয়া হবে কিংবা পাইকাররা এসে কিনে নিয়ে যাবেন। বিষমুক্ত বলে এখানের আনারসের কদর রয়েছে ক্রেতাদের কাছে।
কয়েক বছর আগেও পাহাড়ে প্রচুর জমি পতিত পড়ে থাকত। এসব জমিতে কোন ফসল চাষ হতো না। দিন দিন লোক সংখ্যা বাড়ছে। তার সঙ্গে কর্মসংস্থানের প্রয়োজনে পাহাড়ি পতিত জমিতে আবাদ করে এখন পুরোদমে আনারসসহ নানা ধরণের ফসলের চাষ হচ্ছে। এতে করে যেমন পতিত জমি উর্বর হচ্ছে। তেমনি বেকাররা কর্মসংস্থান বের করতে পেরেছেন। একজন আনারস চাষি জানানা, ‘বেকার ছিলাম। এখন বেকার নয়। বছরজুড়ে আনারসসহ নানা ধরণের ফসল চাষ করে সৎপথে জীবিকা নির্বাহ করতে পারছি।’ তিনি জানান, এখানের আনারস বিষমুক্ত চাষ করা হয়। শুধু কিছু পরিমাণে সার ও গোবর দেওয়া হয়। জৈষ্ঠ্য মাস এলে লোকজন অনেক দূর থেকে আনারস কিনতে আসেন। এখানের আনারস সৌদি আরব, আমেরিকা ও লন্ডনের প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছে সরবরাহ হয় বলেও জানান সাজন বেদবর্মা।
চাষি ফুল মিয়া বলেন, ‘অনেকে পাহাড়ে বার মাস আনারস চাষ করছেন। তবে আমরা এক মৌসুমই এ ফল চাষ করছি। কারণ সময়ের ফল সময়ে চাষ করলে কেমিক্যাল প্রয়োগ করতে হয় না।’ তিনি বলেন, ‘আর কয়দিন পরেই আনারস পাকা শুরু হবে। এবার আনারসের ভাল হয়েছে। আশা করছি ভাল দামও পাব।’
এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ শাহ আলম বলেন, ‘বিষমুক্ত আনরস চাষ হচ্ছে হবিগঞ্জের পাহাড়জুড়ে। আমাদের পক্ষ থেকে ভাল ফলন পেতে চাষিদের নানাভাবে সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। চাষিরা পাহাড়ি পতিত জমিকে উর্বর করে উন্নতজাতের আনারস চাষ করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘ব্যাপকভাবে চাষ হলে আনারস বিদেশে রপ্তানী করা সম্ভব। যদিও ব্যক্তি উদ্যোগে কিছু পরিমাণে আনারস প্রবাসীরা খাবারের জন্য নিয়ে যাচ্ছেন। চাষিদের সরকারী ব্যবস্থাপনায় আর্থিকভাবে সহায়তা করলে এখানে আনারসের চাষ আরও ব্যাপক হবে।’