জ্বালানী তেলের দাম কমানোর সুফল পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ

কমলো ডিজেল-পেট্রোল-তেলের-দাম

নিউজ নাইন২৪ডটকম, ঢাকা: সাধারণ মানুষের স্বার্থে জ্বালানি তেলের দাম কমানো হয়েছে বলে দাবি করা হলেও কার্যত সাধারণ মানুষ আদৌ এর সুফল পাবে না বলেই সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সুস্পষ্ট অভিমত। জ্বালানি তেলের দাম কমানোর সুফল পুরোটাই যাবে উচ্চবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্ত শ্রেণি, বিশেষ করে পরিবহন মালিক ও সেচ পাম্প মালিকদের পকেটে।

জ্বালানি তেলের দাম কমানোর সুফল সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর বিষয়ে সরকারের কঠোর অবস্থান না থাকা এবং যথাযথ নীতি ও কাঠামোর অভাবে এমন আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। হিসাব করে দেখা যায়, জ্বালানি তেলের দাম কমানোয় সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) বছরে মুনাফা কম হবে চার হাজার ১০০ কোটি টাকা। এই পুরো টাকাটা মুনাফা হিসেবে যাবে বিত্তবানদের পকেটে।

বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, দেশে প্রাইভেট কার বা ব্যক্তিগত গাড়ি আছে এক শতাংশেরও কম মানুষের। বেশির ভাগ ব্যক্তিগত গাড়িরই মালিক উচ্চবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকেরা। এই উচ্চবিত্তের জ্বালানি হিসেবে পরিচিত পেট্রল ও অকটেনের দাম কমেছে গড়ে ১০ শতাংশের বেশি। অন্যদিকে মধ্যবিত্ত ও গরিবের জ্বালানি হিসেবে পরিচিত ডিজেল ও কেরোসিনের দাম কমানো হয়েছে ৪ শতাংশের কিছু বেশি। দেশের প্রাণ কৃষিতে সেচকাজে এবং পণ্য ও যাত্রী গণপরিবহনে ব্যবহৃত হয় ডিজেল।

 

 

জ্বালানী তেলের দাম

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয়ের কোনো নীতিমালা নেই। ফলে জ্বালানি তেলের দাম কমলেও গণপরিবহন, পণ্য পরিবহন, সেচ পাম্পসহ সংশ্লিষ্ট খাতগুলোর ভাড়া কমানোর ক্ষেত্রে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা হওয়া মাত্রই পরিবহন মালিকরা ভাড়া বাড়িয়ে দিলেও এখন ভাড়া কমানোর কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। পরিবহন ও সেচ পাম্পের ভাড়া না কমলে সাধারণ মানুষের পণ্য পরিবহনের ব্যয় কমবে না। জ্বালানি তেলের দাম কমানোর পুরো অর্থই চলে যাবে ধনীদের কাছে।

আন্তর্জাতিক বাজারে গত দুই বছরে জ্বালানি তেলের দর ব্যাপক পতনের পর দেশের বাজারে দাম কমেছে অসম প্রক্রিয়ায়। গণপরিবহনে ব্যবহৃত ডিজেলের দাম ১৪.৪১ শতাংশ কমলেও এর সুফল আদৌ সাধারণ মানুষ পাবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ যতবারই যে পরিমাণই হোক ডিজেলের দাম বেড়েছে ততবারই পরিবহন ভাড়া বেড়েছে সেই তুলনায় অনেক বেশি। এবার ৪.৪১ শতাংশ হারে ডিজেলের দাম কমলেও পণ্য পরিবহনে ট্রাক ও গণপরিবহনের ভাড়া কমার কোনো লক্ষণ এখনো দেখা যাচ্ছে না।