প্রশ্ন ফাঁস, সহকারীদের ‘সহনীয় ঘুষ(!)’ তারপরও মন্ত্রী বহাল তবিয়তে

ঢাকা: লজ্জিত হবার ক্ষমতা নিয়ে বাংলাদেশের শিক্ষা খাতে কেউ যদি সম্পৃক্ত থাকেন, তবে তার জন্য এটি একটি খারাপ সময় হতো। কিন্তু তেমন একটিও লজ্জিত মুখ দেখা যাচ্ছে না। কারণ, প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়াটা চূড়ান্তভাবে শিক্ষামন্ত্রীর ব্যর্থতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থায় শিক্ষামন্ত্রীর সমাধান হলো প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে পরীক্ষার সময় ফেসবুক বন্ধ করে দেয়া। উচ্চ মাত্রার অযোগ্যতাই এতে প্রতিফলিত হয়েছে এবং খোদ সরকারের আইটি মন্ত্রীই এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বর্তেছে আইটি উপদেষ্টার হাতে, অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর পুত্রের উপর।

এই ফেসবুক বন্ধ করার সমাধানটি দেবার মাত্র দুই দিন আগে একটি স্কুলের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে মন্ত্রীর ব্যক্তিগত স্টাফকে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো তুলে নিয়ে যায়। স্কুলটিকে সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে, মালিকদের গ্রেফতারও করা হয়েছে।

এর মাত্র কয়েক দিন আগে মন্ত্রী মহোদয় বিপুলভাবে সমালোচিত হয়েছিলো সহনীয় মাত্রায় ঘুষ’ নেবার পক্ষে কথা বলে। এসব কেলেঙ্কারির কথা তখনই জানাজানি হলো যখন ব্যাপক হারে অনশন ধর্মঘট হয় রাস্তায়। অনশন ভঙ্গ হয়েছে, কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি।

তবে শিক্ষামন্ত্রী অনড়। তিনি রাজনৈতিক বোঝায় পরিণত হলেও তাকে বরখাস্ত করার মানে হবে সরকারের ব্যর্থতা স্বীকার করে নেয়া। ২০১৮ সালের শেষ দিকে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে এবং ২০০৮ সালে ক্ষমতা গ্রহণের সময়ের পর থেকে সবচেয়ে বেশি নাজুক মনে হচ্ছে সরকারকে। কিন্তু প্রকাশ্যে কোনো ধরনের উদ্বেগ দেখা যাচ্ছে না। নিশ্চিতভাবেই এটি প্রশ্নটির আরো বেশি রহস্যময় একটি অংশ।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ভিসি বিক্ষোভরত ছাত্রদের আটকায় পড়ে নিজেকে উদ্ধারের জন্য পুলিশের বদলে তার রাজনৈতিক দলের ক্যাডারদের ডাকায় তার সামর্থ্য ও উদ্দেশ্য যথেষ্ঠ সমালোচনার সম্মুখিন। কে আসলে বিশ্ববিদ্যালয় চালায়, সে প্রশ্নও সৃষ্টি হয়েছে। এই ভিসির আমলে শিক্ষক ও ছাত্রদের বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে মারপিট নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।