বাবরি মসজিদের রায় খতিয়ে দেখার দাবি বিশেষজ্ঞদের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: অযোধ্যা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উদ্বিগ্ন এদেশের বুদ্ধিজীবীদের বিপুল অংশ। তাঁরাই সমস্বরে ওই রায় পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে। দেশের ১০০- র বেশি শিক্ষক-সাহিত্যিক-শিল্পকর্মের-সাংবাদিক থেকে বিভিন্ন শ্রেণির এমন মানুষজন শনিবার এক বিবৃতিতে তাঁদের উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি পুরাতত্ত্ব এবং ইতিহাসের যে ধারণার উপর ভিত্তি করে রায় ঘোষণা করা হয়েছে, তা নিয়েও নিজেদের উষ্মা গোপন করেনি। বলা হয়েছে, যাঁরা সুবিচার আশা করেন এবং মুক্ত মনের মানুষ তাঁরা সবাই অযোধ্যা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে উদ্বিগ্ন। উদ্বেগের প্রথম বিষয় হলো, আদালত যার জন্য ওই রায় দিয়েছে সেই বাবরি মসজিদ অন্যায়ভাবে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল ১৯৯২সালের ৬ ডিসেম্বর। আবার রায় ঘোষণার সময় তা যে ‘বেআইনি কাজ’ হয়েছিল সেকথা স্পষ্টভাবে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। যার উপর ভিত্তি করে রায় দেওয়া হয়েছে সেই পুরাতাত্ত্বিক খননের পর কোনও ধরনের জল্পনা অসম্ভব ছিল যদি না বাবরি মসজিদ ধ্বংসই করা হতো। একইভাবে মসজিদ ধ্বংস না হলে হিন্দুদের হাতে জমি তুলে দেওয়াও সহজ হতো না সুপ্রিম কোর্টের।
তাঁরা স্পষ্টই বলেছেন, যে পুরাতত্ত্ব এবং ইতিহাসের উপর নির্ভর করেছে আদালত তা অসংলগ্ন এবং একপেশে। কোর্টের কাছে বিন্দুমাত্র কোনও প্রমাণ ছিল না যে মোঘল এবং নবাবী আমলে মুসলিমরা ওখানে প্রার্থনা বন্ধ করে দিয়েছিল। আবার ওই বাবরি মসজিদ চত্বরেই জন্ম নিয়েছিলেন রাম এমন কথা হিন্দুরা সম্প্রতিক সময়ের আগে বিশ্বাস করত এমন কোনও প্রমাণও ছিল না আদালতের কাছে।
সর্বশেষে ভেঙে ফেলা বাবরি মসজিদ চত্বরে রামমন্দির নির্মাণ নিয়ে ট্রাস্ট গঠনের জন্য সরকারকে দায়িত্ব অর্পণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের এই রায়ে মনে হচ্ছে যেন হিন্দুদের ধর্মীয় স্বার্থরক্ষাই সরকারের কাজ। যা ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রের সঙ্গে মোটেই সামজস্যপূর্ণ নয়।