পাওনা আদায় না করে উল্টো বিটিআরসিকে দোষারোপ গ্রামীণফোনের

বিটিআরসিকে দোষারোপ গ্রামীণফোনের

নিজস্ব প্রতিবেদক: টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিটিআরসি) অবৈধ নিরীক্ষা দাবির সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা আদায় করতে অন্যায়ভাবে বলপ্রয়োগ করছে বলে অভিযোগ করেছে গ্রামীণফোণের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাইকেল প্যাট্রিক ফোলি।
কার্যক্রম পরিচালনায় ‘অবৈধ বিধিনিষেধ’ আরোপ করার মধ্য দিয়ে বিটিআরসি কোম্পানির ক্ষতিসাধনের পাশাপাশি আকর্ষণীয় বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা ক্ষুন্ন করছে বলে দাবী করেছে তারা।

সোমবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে আলাপকালে সে জানায়, বিটিআরসি অন্যায়ভাবে আমাদের উপর বলপ্রয়োগ করে বেআইনি নিরীক্ষা দাবির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা আদায়ে চেষ্টা করছে। যেটাকে তারা জনগণের অর্থ বলছে, সেটা সত্য নয়। তাদের মূল দাবির ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকার বিষয়টিও সঠিক নয়। নানা অনাকাঙ্খিত পদক্ষেপের মাধ্যমে বিটিআরসি জোর করে নিজের নয় এমন অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছে অভিযোগ করেন ফোলি।
বিটিআরসির দাবির মধ্য থেকে ন্যূনতম কত টাকা দিতে পারবে, তা জানাতে সুপ্রিম কোর্ট থেকে পাওয়া দুই সপ্তাহ সময়ের ১১ দিনের মাথায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে আসে গ্রামীণফোনের কর্তারা।

গ্রামীণফোন এখনো আদালতের বাইরে আপসরফার মাধ্যমে দুইপক্ষের জন্য ‘সহায়ক ও স্বচ্ছ’ সমাধানে প্রস্তুত বলে জানান চিফ মার্কেটিং অফিসার ইয়াসির আজমান।

তিনি বলেন, “গত ২২ বছরে গ্রামীণফোন ৭৩ হাজার কোটি টাকা সরকারের কোষাগারে জমা করেছে। শতকরা হিসাবে আমাদের আয়ের ৫৪ শতাংশ।

“এই রকম একটা কোম্পানির কাছে বিটিআরসির এই বেআইনি অডিটটা যেন এভাবে না চলে, আমরা টেবিলে এসে আলোচনার মাধ্যমে একটি স্বচ্ছ এবং দুইপক্ষের জন্য সহায়ক এমন সমাধান বের করে নিয়ে আসতে পারি।”
প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ও অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামালের সঙ্গে দুই বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “আমরা বলেছিলাম, সমঝোতা হলে সব মামলা তুলে নেব। ২১ অক্টোবর তথ্য উপদেষ্টার নেতৃত্বে সমঝোতা স্মারকের বিষয়ে সম্মত হয়েছিলাম। আমরা আশা করেছিলাম, উনি আমাদেরকে যে সময়টা বেঁধে দিয়েছিলেন, তার মধ্যে এটার একটা সমাধান বের করে নিয়ে আসতে পারব। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, এটা আর হয়নি।

গ্রামীণফোনের কাছে নিরীক্ষা আপত্তির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং রবির কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে বলে দাবি করে আসছে বিটিআরসি। কয়েক দফা চেষ্টায় সেই টাকা আদায় করতে না পেরে লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দিয়ে নোটিস পাঠানো হয় দুই অপারেটরকে। বিটিআরসির দাবি করা টাকার ওই অঙ্ক নিয়ে আপত্তি তুলে গ্রামীণফোন ও রবি।
সালিশের মাধ্যমে বিষয়টির নিষ্পত্তিতে রাজি না হওয়ায় আদালতের দ্বারস্থ হয় দুই অপারেটর। তবে পরে অর্থমন্ত্রীর উদ্যোগে বিষয়টি নিয়ে সমাধানে পৌঁছাতে গ্রামীণফোন ও বিটিআরসির কর্মকর্তাদের মধ্যে দুই দফা বৈঠকও করেন।