‘পলি হাউস’-এ সবজি ও ফুল চাষে বিপ্লব

 ‘পলি হাউস’-এ সবজি ও ফুল চাষে বিপ্লব

নিজস্ব প্রতিবেদক: সবজি ও ফুল চাষে বিপ্লব ঘটেছে যশোরের ঝিকরগাছায়। ‘পলি হাউস’-এ উপজেলার সাত কৃষক সবজি এবং ফুল চাষ করছেন। মৌসুমে নয়, যা সারা বছরই ক্রেতারা টাটকা পাচ্ছেন।

আধুনিক পদ্ধতিতে লোহার পাইপের খুঁটির উপরে ও চারদিকে ২০০ মাইক্রনের পলিথিন দিয়ে বানানো হয়েছে এই ‘পলি-হাউস’। আর তাতে সারা বছরই এই সবজি এবং ফুলের চাষ হচ্ছে। অর্থাৎ ফুল ও সবজি চাষে শীত ও গরমের কোন বাধাই থাকছে না এখানে। ফলে অসময়ে চাষিরা যেমন লাভের মুখ দেখছেন, তেমনি ক্রেতারাও সারা বছরই টাটকা সবজি ও ফুল পাচ্ছেন।

পলি হাউসের এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে বিএডিসি সেচ বিভাগ। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে সাত কোটি ছয় লাখ টাকা। ২০১৭ সালের জুনে শুরু হওয়া এই কর্মসূচির আওতায় ঝিকরগাছার গদখালী, পানিসারা, নাভারণ, শিমুলিয়া ও নির্বাসখোলা ইউনিয়নে ১৫টি সৌরচালিত ডাগ ওয়েল ও ড্রিপ ইরিগেশন এবং সাতটি পলি শেড নির্মাণ করা হয়। এই কর্মসূচির এক্সক্লুসিভ ইঞ্জিনিয়ার মাহাবুব আলম জানালেন, ২০২২ সালের জুন মাসে কর্মসূচির মেয়াদ হলেও তার আগেই সব কাজ সম্পন্ন হবে।

কৃষিবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, পলি-হাউস পদ্ধতিতে চারদিকে প্লাস্টিকের ছাউনি থাকায় সূর্যের তাপ সরাসরি খেতে ঢুকতে পারে না। ফলে, শীতের সব্জি গরমেও চাষ করতে অসুবিধা হয় না। এই পদ্ধতিতে পানির অপচয় ঠেকানো যায়। সার দেওয়া হয় নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে। প্লাস্টিকের চাদর থাকায় দুর্যোগের প্রকোপও অনেকটা ঠেকানো সম্ভব হয়। সব মিলিয়ে পলি-হাউস পদ্ধতিতে ফসলের অন্তত ২০ শতাংশ ফলন বেশি হয় বলে দাবি কৃষি বিশেষজ্ঞদের।

আলাপকালে পানিসারা গ্রামের ফুলচাষি ইসমাইল হোসেন জানান, এই কর্মসূচির আওতায় তাকে ১০০৮ বর্গফুটের একটি পলি শেড, সৌরচালিত ডাগ ওয়েল ও ড্রিপ ইরিগেশনের সুবিধা দেওয়া হয়েছে। পলি শেডে জারবেরা ও গোলাপ ফুল, তরমুজ এবং এসকস চাষ করেছেন। শেডে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ থাকায় ঝুঁকি কম। কীটনাশকের খরচ ৭০ শতাংশ কম বলে জানান তিনি।

স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, পলি হাউসে উৎপাদিত সবজিগুলো বিষমুক্ত। এর আগে তারা যে পদ্ধতিতে চাষ করতেন তাতে খরচ অনেক বেশি ছিল। কিন্তু এই পদ্ধতিতে তাদের খরচ বেঁচে গেছে। সব মিলিয়ে নতুন এ প্রযুক্তির মাধ্যমে উৎপাদন খরচ কমিয়ে দ্বিগুণ লাভ করা সম্ভব, বলছেন তারা।