দুর্নীতির সব ছিদ্র বন্ধ করা সম্ভব না
নিউজ ডেস্ক : ‘বালিশ-পর্দার দুর্নীতির কাহিনিতে হতভম্ব জাতি। ঠিক যেন দুর্নীতির মহামারি। লাগামহীন দুর্নীতিতে ওষ্ঠাগত উন্নয়ন। উন্নয়নের মহাসড়কে সমান তালে চলছে দুর্নীতি।
উন্নয়নে দুর্নীতির খবরে নাখোশ প্রধানমন্ত্রীও। বিভিন্ন বক্তব্যে হুঁশিয়ারিও দিচ্ছেন তিনি। তবুও যেন কূল মিলছে না। রোজ খবর বের হচ্ছে দুর্নীতির ব্যাপকতা নিয়ে। বিশেষ করে দুর্নীতির পথে রাজনীতিবিদ-আমলারা হাতে হাত মিলিয়ে একাকার।
দুর্নীতির এমন ব্যাপকতায় উন্নয়নের ভবিষ্যৎ কী-এমন প্রসঙ্গে মতামত জানতে চাওয়া হয় অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবুল বারকাত এবং উন্নয়ন বিশ্লেষক ড. হোসেন জিল্লুর রহমানের কাছে।
অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবুল বারকাত বলেন, ‘দুর্নীতির খবরে অবাক হচ্ছি। অথচ, স্বাধীনতার পর এমন উন্নয়নের ধারা কেউ তৈরি করতে পারেনি। উন্নয়নের এই ধারায় শুধু বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকেই বিশ্বাস করা যায়।’
তিনি বলেন, ‘উন্নয়নের পাইপে এখন দুর্নীতির মহাছিদ্র। যে ছিদ্র দিয়ে সব বেরিয়ে যাচ্ছে। সব ছিদ্র হয়ত বন্ধ করা সম্ভব না। কিন্তু কিছু ছিদ্র তো বন্ধ করা যায়। আর এটি যদি না করা যায়, তাহলে পাইপে শেষ পর্যন্ত কোনো পানি আসবে না। উন্নয়নে এখন তাই হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানগুলো ভেঙ্গে পড়ছে। আইন বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব দেখা দিয়েছে। আর এ কারণেই উন্নয়নে সমতার পরিবর্তে বৈষম্য বাড়ছে।
ড. হোসেন জিল্লুর রহমান উন্নয়ন প্রসঙ্গে বলেন, ‘এত উন্নয়ন হলে খেলাপি ঋণ বাড়ছে কেন? তার মানে গলদ আছে। বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো যদি উন্নয়নেই অংশ নেয়, তাহলে খেলাপি হচ্ছেন কেন?
এ কারণেই আমি মনে করি, উন্নয়নের একমাত্রিক আলোচনা থেকে বের হওয়া জরুরি। মূলত মধ্যম আয়ের চাপিয়ে দেয়া উন্নয়ন আরেক ধরনের সংকট তৈরি করতে পারে।’
এই বিশ্লেষক বলেন, ‘সাধারণ মানুষের আয় থেকে রাষ্ট্র ব্যয় করছে। অথচ সে ব্যয়ের দক্ষতাটা আমরা বাড়াতে পারছি না। ১ হাজার টাকায় যা করা সম্ভব, তা ১০ হাজার টাকাতেও করা সম্ভব হচ্ছে না। দুর্নীতির ছক মূলত এখানেই। পর্দা-বালিশের যে গল্প শুনতে পাচ্ছি, তাতে আমরা উন্নয়নের নামে উল্টো পথে হাঁটছি।
নিজেদের খরচে আমরা পদ্মা সেতু করছি। ভালো কথা। অপচয় করে এমন বড় প্রকল্প করার মধ্যে কোনো গৌরব আছে বলে মনে করি না। অথচ আমরা তাই করছি। সড়ক নির্মাণে সবচেয়ে বেশি ব্যয় বাংলাদেশে। অথচ একটি সড়ক দুই বছরেও টেকসই হচ্ছে না। এই প্রশ্নগুলো তো সামনে আসছে।