তিন কোটি টাকার ধানবীজ পাচার

২ লাখ ৫০ হাজার মে. টন ধান কিনবে সরকার

ঝিনাইদহ সংবাদদাতা : কৃষি খামার থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকার ১২৯ মেট্রিক টন ধানের বীজ চুরি করে পাচারের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ঝিনাইদহের মহশেপুর উপজেলার দত্তনগর কৃষি খামারের তিন উপপরিচালকসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

সাময়িক বরখাস্ত হওয়া চার কর্মকর্তারা হলেন, দত্তনগর কৃষি খামারের গোকুলনগর বীজ উৎপাদন খামারের উপপরিচালক তপন কুমার সাহা, করিঞ্চা খামারের উপপরিচালক ইন্দ্রজিৎ চন্দ্র শীল, পাথিলা খামারের উপপরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান তালুকদার ও যশোর বীজ প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্রের উপপরিচালক মো. আমিন উল্ল্যা।

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) সচিব আবদুল লতিফ মোল্লা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে সোমবার তাদের বরখাস্ত করা হয়। সেই সঙ্গে সচিব আব্দুল লতিফ মোল্লা স্বাক্ষরিত চিঠি বরখাস্তকৃত কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়।

বরখাস্তের আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, বহিষ্কৃত কর্মকর্তাদের কর্মকাণ্ড ছিল দায়িত্বে অবহেলা, অসদাচরণ, চুরি ও আত্মসাৎ। এ অবস্থায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কর্মস্থলের বাইরে যেতে পারবেন না ওসব কর্মকর্তারা। সাময়িক বরখাস্ত থাকা অবস্থায় বিধি মোতাবেক খোরপোষ ভাতা পাবেন তারা।

সচিব আবদুল লতিফ মোল্লা স্বাক্ষরিত চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, বিধিবহির্ভূতভাবে অসৎ উদ্দেশ্যে স্বীয় স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য গোকুলনগর, পাথিলা ও করিঞ্চা বীজ উৎপাদন খামারে ২০১৮-১৯ উৎপাদন বর্ষে কর্মসূচিবহির্ভূত অতিরিক্ত ১২৯ দশমিক ২২ মেট্রিক টন এসএল-৮এইচ হাইব্রিড জাতের ধানের বীজ প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্র যশোরে পাঠানো হয়। এসব কর্মকর্তা অতিরিক্ত বীজ উৎপাদনের পরিমাণ নিয়ম অনুযায়ী মজুত ও কাল্টিভেশন রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করেননি। এমনকি অতিরিক্ত কোনো বীজ পাঠানোর কোনো চালান বা তথ্যপ্রমাণ খামারে রাখেননি তারা। এসব ধান বীজ অসৎ উদ্দেশ্যে নিজেরা আত্মসাৎ করার জন্য সংরক্ষণ ও উৎপাদনবিষয়ক প্রকৃত তথ্য গোপন করেছেন বলে প্রমাণিত হয়।

জানা যায়, ২০১৮-১৯ উৎপাদন বর্ষে দত্তনগর খামারের আওতাধীন গোকুলনগর বীজ উৎপাদন খামার থেকে উৎপাদিত ১১৭ দশমিক ২৬০ মেট্রিক টন ও পাথিলা বীজ উৎপাদন খামার থেকে উৎপাদিত ৬৯ দশমিক ৫০০ মেট্রিক টন, মোট ১৮৬ দশমিক ৭৬০ মেট্রিক টন এসএল-৮ এইচ জাতের হাইব্রিড বীজ যশোর বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে পাঠানো হয়। কিন্তু যাচাইয়ের মাধ্যমে আরও অতিরিক্ত ১২৯ দশমিক ২২০ মেট্রিক টন বীজ পাওয়া যায়। তদন্তে বেরিয়ে আসে গোকুলনগর বীজ উৎপাদন খামার থেকে উৎপাদিত ৭৫ দশমিক ৭৫ মেট্রিক টন, পাথিলা বীজ উৎপাদন খামার থেকে ৩২ দশমিক ১১০ মেট্রিক টন ও করিঞ্চা বীজ উৎপাদন খামার থেকে ২২ দশমিজ ৩৫ মেট্রিক টন এসএল-৮ এইচ জাতের হাইব্রিড বীজ কোনো ধরনের চালান ছাড়াই যশোর বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে অতিরিক্ত মজুত করা হয়।

একই সঙ্গে মহেশপুর উপজেলার দত্তনগর গোকুলনগর, পাথিলা ও করিঞ্চা বীজ উৎপাদন খামার থেকে কৌশলে এই বীজ চুরি করে বিক্রির জন্য যশোর শেখহাটী বীজ প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্রে পাঠানো হয়। বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পান তদন্ত কর্মকর্তারা।