গ্রামীণফোন-রবির লাইসেন্স বাতিলের নোটিশ

গ্রামীণফোন-রবির লাইসেন্স বাতিলের নোটিশ

নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০১ এর ৪৬ (২) ধারা মোতাবেক মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবির ২জি ও ৩জি লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তার কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ দিয়েছে বিটিআরসি।

বৃহস্পতিবার বিকেলে দুই অপারেটর বরাবর এই চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছেন বিটিআরসির জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. জাকির হোসেন খান।

তবে তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় গ্রামীণফোন জানিয়েছে, বিটিআরসির নোটিশটি অযৌক্তিক এবং একইসঙ্গে একটি বিতর্কিত অডিট দাবির বিষয়ে আমাদের গঠনমূলক সমাধান প্রস্তাবের বিপরীতে তাদের অনীহার আরেকটি বহি:প্রকাশ।

গ্রামীণফোন বলছে, নোটিশটি পর্যালোচনা করার পরেই গ্রামীণফোন উত্তর দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে। আমাদের প্রতিষ্ঠান, শেয়ারহোল্ডার ও গ্রাহকদের অধিকার রক্ষায় নিয়ন্ত্রক সংস্থার অন্যায্য যেকোন পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আমরা প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

বিটিআরসি বলছে, দুই দফা চাপ দিয়েও নিরীক্ষা আপত্তির ‘পাওনা’ টাকা আদায় করতে না পেরে টুজি ও থ্রিজি লাইসেন্স বাতিলের নোটিশ দেয়া হলো।

একদিন আগে বুধবার সাংবাদিকদের ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, এ দুই অপারেটরের লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে এরই মধ্যে নোটিশ পাঠাতে বিটিআরসিকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

বিটিআরসির দাবি, গ্রামীণফোনের কাছে নিরীক্ষা আপত্তির দাবির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং রবির কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। তাগাদা দেয়ার পরও টাকা পরিশোধ না করার যুক্তি দেখিয়ে ৪ জুলাই গ্রামীণফোনের ব্যান্ডউইথ ক্যাপাসিটি ৩০ শতাংশ এবং রবির ১৫ শতাংশ কমিয়ে দেয়া হয়।

এতে গ্রাহকের সমস্যা হওয়ায় ১৩ দিনের মাথায় ওই নির্দেশনা প্রত্যাহার করে বিটিআরসি। এরপর ২২ জুলাই গ্রামীণফোন ও রবিকে বিভিন্ন প্রকার সেবার অনুমোদন ও অনাপত্তিপত্র (এনওসি) না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ পরিস্থিতিতে লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে নোটিশ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করছি। না তারা এক টাকা দিয়েছে, না কানে তুলছে যে সরকারের কাছে তাদের দেনা আছে।’ তিনি বলেন, ‘গা যেহেতু করছে না, আমরা তো জাতীয় অর্থ পানিতে ফেলে রাখতে পারি না। এক্ষেত্রে কোনো ছাড় দিতে পারি না। আমাদের দিক থেকে বিটিআরসিকে বলা হয়েছে তোমরা চূড়ান্ত নোটিশ দাও।’

১৬ কোটি ৮২ হাজার নিবন্ধিত মোবাইল সিমের মধ্যে ৭ কোটি ৪৭ লাখ সিম গ্রামীণফোনের। আর রবির ৪ কোটি ৭৬ লাখ সিম রয়েছে। এ হিসাবে মোট গ্রাহকের ৪৬.৪৯ শতাংশ গ্রামীণফোন এবং ২৯.৬৫ শতাংশ রবির গ্রাহক। এছাড়া ৯ কোটি ৪৪ লাখ ইন্টারনেট গ্রাহকের মধ্যে ৮ কোটি ৮৬ লাখ মোবাইল ফোনের ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। এটা মোট গ্রাহকের ৯৩.৮৭ শতাংশ।

বিটিআরসির সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. জাকির হোসেন যুগান্তরকে বলেন, সরকারি পাওনা পরিশোধে অপারেটরদের সহযোগিতা সব সময় কাম্য। কমিশনের যে কোনো ধরনের উদ্যোগ ও পদক্ষেপ আইন অনুযায়ী গ্রহণ করা হয়। বিটিআরসি ‘এনওসি’ দেয়া বন্ধ রাখলেও গ্রামীণফোন ও রবি বর্তমানে তাদের সেবা চালিয়ে যাচ্ছে।