চলছে মেট্রোরেলের কাজ, ধুঁকছে রাজধানী

ঢাকা: বিকেল গড়ালেই কর্মস্থল থেকে মানুষের তাড়া থাকে ঘরে ফেরার। সেই ক্লান্ত-শ্রান্ত মানুষগুলো যখন রাজধানীর নিত্যদিনের যানজট পেরিয়ে ঘরে ফেরেন তখন মেট্রোরেলের নির্মাণযেজ্ঞ অব্যস্থাপনা দিন দিন অতিষ্ঠ করে তুলছে রাজধানীবাসী জীবন।

বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত মিরপুরের হাজার হাজার মানুষ যানজটে আটকা পড়ে নাভিশ্বাস দিন দিন বেড়েই চলছে। রোকেয়া সরণির প্রায় পুরো সড়কে সব সময় যানজট লেগেই থাকে। ফলে বিড়ম্বনায় ফেলেছে এ প্রান্তের মানুষের।

যানজট নিরসনে বর্তমানে মিরপুর-১২ নম্বর থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলছে মেট্রোরেলের কাজ। রাস্তার মাঝখান দিয়ে চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। এজন্য পথের দু’পাশে কেবল মাত্র দু’টি লেন সচল রাখা হয়েছে, বন্ধ করে রাখা হয়েছে দু’টি লেন।
দু’লেন দিয়ে যানবাহন চলাচল করলেও সড়কের পাশে ফেল রাখা হয়েছে খুঁটি, রয়েছে বিভিন্ন তারের জটলা। কোথাও কোথায় সড়কের অংশ দেবে গর্ত হয়েছে। এরফলে লেগে থাকছে দীর্ঘ যানজট।

আবার কোথাও কোথাও গাড়ি পার্কিং করে রাখার কারণে রাস্তা বন্ধ হয়ে আছে। আবার কোথাও কোথাও রাস্তার পাশে ভ্যানে রডবোঝাই করা হচ্ছে, যাতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। ফলে মধ্যরাতেও ঘরে ফেরা মানুষগুলো অবর্ণনীয় কষ্টের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
গত সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টায়ও দেখা গেল যানজটের বিড়ম্বনা। আগারগাঁওয়ে পরিকল্পনা কমিশন থেকেই যানজট শুরু হয়। পুরো সড়কেই লেগে থাকে যানজট। মোটরসাইকেলে করেও যারা এ সড়ক দিয়ে ঘরে ফিরেন তাদেরও সময় লাগে এক ঘণ্টার মতো। আর পাবলিক পরিবহনের তো সময়ের শেষ নেই, যেন সড়ক শেষই হয় না।

দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থেকে শেওড়াপাড়া এলাকায় দেখা গেল অনেকেই পায়ে হেঁটে ঘরে ফিরছেন। কয়েক জায়গায় কর্মীদের সড়কে তৎপরতা থাকলেও খুব বেশি ফল পাচ্ছে না বাসিন্দারা।
এক রিকশাচালক জানালেন, মিরপুর-১০ নম্বর পৌঁছাতে সময় যায় ঘণ্টারও বেশি। যানজটের সঙ্গে রয়েছে ধুলোবালির অত্যাচার। এ পথে যাতায়াতকারীদের নিত্যদিনের জন্য মাস্ক ব্যবহার অপরিহার্য। রাতের বেলার যানজটের যে চিত্র তা দেখা যায় অফিস যাওয়ার সময়টাতেও। শেওড়াপাড়া এলাকায় মণিপুর স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে স্কুলভ্যান, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার।

মিরপুরের সেনপাড়া এলাকার বাসিন্দা এরশাদ হোসেন বলেন, রাতে বাড়ি ফেরা সময় প্রায় দিনই শেওড়াপাড়া বা কাজীপাড়া থেকে হেঁটে আসতে হয়।
যাতায়াতকারী একাধিক বাসিন্দা বলেন, যানজট দূর করতে হলে সঠিক ব্যবস্থায় নিয়ে আসতে হবে নির্মাণকাজ। রাতের বেলা রাস্তায় যানবাহন না রাখা, ভাঙাচোরা স্থানগুলো মেরামত এবং লোকবল বাড়িয়ে পথ সচল রাখতে হবে। অব্যবস্থাপনাগুলো দ্রুত দূর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি বাসিন্দাদের।