হোটেল-রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে দেয়ায় ওয়ার্ড কমিশনারকে লিগ্যাল নোটিশ

শরীয়ত বহির্ভূত যাকাত সংগ্রহ: ‘বিদ্যানন্দ’র চেয়ারম্যানকে লিগ্যাল নোটিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫৭ নং ওয়ার্ডের আওতাধীন কামরাঙ্গীর চরের হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ সব ধরনের খাবারের দোকান বন্ধ করে দেয়ায় ওই ওয়ার্ডের কমিশনার সাইদুল ইসলাম মাদবরকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

দৈনিক আল ইহসান ও মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকার সম্পাদক মুহাম্মদ মাহবুব আলমের পক্ষে বুধবার ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট মেসবাহ উদ্দিন রেজিস্টার্ড ডাকযোগে লিগ্যাল নোটিশটি পাঠান।

লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, গত ২১ মার্চে একটি গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫৭ নং ওয়ার্ড তথা কামরাঙ্গীর চরের সকল হোটেল, রেস্টুরেন্ট, চায়ের দোকান, বেকারি, কনফেকশনারি, ফুচকা-চটপটির দোকানসহ ছোট বড় সব ধরনের খাবারের দোকান পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনা ভাইরাস এর কারণে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক’ এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কিন্তু ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি কর্পোরেশন কিংবা উক্ত দুই সিটি কর্পোরেশনের অন্য কোনো ওয়ার্ডে এই ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।

নোটিশে প্রশ্ন তোলা হয়, সরকারের সেই কথিত সিদ্ধান্তটি কি শুধু ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫৭ নং ওয়ার্ডকে দেয়া হয়েছে? কামরাঙ্গীর চর এলাকায় বন্ধ করে দেয়া হোটেল, রেস্টুরেন্ট, চায়ের দোকান, বেকারি, কনফেকশনারি, ফুচকা-চটপটির দোকানসহ ছোট বড় সব ধরনের খাবারের দোকানগুলোর হাজার হাজার মালিক ও শ্রমিক এই অবস্থায় কিভাবে তাদের সংসারের খরচ চালাবেন? সরকার কি ওইসব মালিক ও শ্রমিকের জন্য কোনো বিকল্প ব্যবস্থা না করেই এগুলো বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে?

নোটিশে বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের ৪০ অনুচ্ছেদ মোতাবেক, বাংলাদেশে প্রত্যেক নাগরিকের যে কোনো আইনসঙ্গত পেশা বা বৃত্তি-গ্রহণের এবং যে কোন আইনসঙ্গত কারবার বা ব্যবসায়-পরিচালনার অধিকার রয়েছে। সরকারের তরফ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো নিষেধাজ্ঞা ব্যতীত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ব্যবসা করতে না দেওয়াটা উক্ত নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকারে সরাসরি হস্তক্ষেপ। এমনকি, সরকার যদি পরিস্থিতি বিবেচনায় কোনো সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দিয়েও থাকে, সেক্ষেত্রেও ওইসব ক্ষতিগ্রস্ত হোটেল, রেস্টুরেন্ট, চায়ের দোকান, বেকারি, কনফেকশনারি, ফুচকা-চটপটির দোকানসহ ছোট বড় সব ধরনের খাবারের দোকানগুলোর মালিক-শ্রমিকদের জীবনধারণের জন্য ন্যূনতম জীবিকার ব্যবস্থা করাও সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। সরকারের কথিত যে সিদ্ধান্তটির দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে ৫৭ নং ওয়ার্ডের কমিশনার ওই গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন, সেটিরও কোনো খবর অন্য কোথাও পাওয়া যায়নি।

নোটিশদাতা বলেন, ওয়ার্ড কমিশনারের সেই সিদ্ধান্তের কারণে হাজার হাজার মালিক-শ্রমিক ও তাদের পরিবারগুলোর অসহায় পরিস্থিতিতে তিনি অত্যন্ত ব্যথিত ও সংক্ষুব্ধ হয়েছেন। এই অবস্থায় এই নোটিশ পাওয়ার ২ (দুই) কার্যদিবসের মধ্যে ওয়ার্ড কমিশনারকে সরকারের সেই সিদ্ধান্তপত্রটি প্রকাশ করতে বলা হয়েছে – যার দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে তিনি ওই গণবিজ্ঞপ্তিটি জারি করেছেন। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত মালিক-শ্রমিকদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা কী কী নেয়া হয়েছে এবং কোনো বিকল্প ব্যবস্থা না নিয়ে থাকলে কেন নেয়া হয়নি – সেটার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে নোটিশে। ক্ষতিগ্রস্ত মালিক-শ্রমিকদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা নিতে না পারলে গণবিজ্ঞপ্তিটি প্রত্যাহার করে ৫৭ নং ওয়ার্ডের হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ সব ধরনের খাবারের দোকান পুনরায় খুলে দিতে লিগ্যাল নোটিশটিতে আহবান জানানো হয়েছে।