হজকেন্দ্রিক ৮ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হাতছাড়া

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি ২০২০ সালের প্রথম ছয় মাসে সীমান্তে ভারতীয় হানাদার বাহিনীর গুলী ও নির্যাতনে বাংলাদেশী নাগরিকদের মৃত্যুর ঘটনা গত বছরের তুলনায় বেড়েছে বলে কয়েকটি সংগঠনের জরিপে দেখা গেছে।

এসব তথ্যে জানা যায়, জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত সীমান্তে ২৫ জন বাংলাদেশী নাগরিক নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২১ জনেরই মৃত্যু হয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা বিএসএফের গুলিতে।
বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই রিপোর্ট তৈরি করেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র বা আসক। গত বছরের প্রথম ছয়মাসে সীমান্তে যতগুলো হত্যাকা- হয়েছে, এই বছরের প্রথম ছয়মাসে সেই সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে জুন মাসের মধ্যে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ১৮ জন বাংলাদেশী নাগরিকের মৃত্যু হয়েছিল, আর নির্যাতনে মারা গেছেন দুই জন।

অথচ ২০২০ সালের প্রথম ছয়মাসে সীমান্তে হত্যাকা-ের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ জনে। অন্যদিকে, ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে সীমান্ত হত্যাকা-র সংখ্যা তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছিল।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালের পুরো সময়টায় ভারতের সীমান্তরক্ষা বাহিনী বা বিএসএফ’র হাতে প্রাণ হারিয়েছিলেন ৩৮ জন বাংলাদেশী যাদের মধ্যে ৩৩ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন গুলিতে, আর বাকি ৫ জনকে নির্যাতন করে মারা হয়।<br>কিন্তু ঠিক এক বছর আগে অর্থাৎ ২০১৮ সালে সীমান্তে বিএসএফ-এর হাতে প্রাণ হারিয়েছেন এমন বাংলাদেশী নাগরিকের সংখ্যা ছিল ১৪ জন। সে হিসাবে মাত্র এক বছরের ব্যবধানে ২০১৯ সালে প্রাণহানির সংখ্যা প্রায় তিন গুণ বেড়ে যায়।চলতি বছরে সবচেয়ে বেশি সীমান্ত হত্যাকা- ঘটেছে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোয়। অন্যদিকে, জুন মাসেই যশোরে বিএসএফের গুলিতে একজন নিহত আর একজন আহত হয়েছেন।

সেখানকার স্থানীয় সাংবাদিক সাজেদ রহমান বলেন, যশোরের বেনাপোল সীমান্তে যে এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নেই কিংবা নদী এলাকা, সেখানেই হত্যাকা-র ঘটনা বেশি ঘটছে।

২০১৯ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জাতীয় সংসদে জানিয়েছিলেন যে গত ১০ বছরে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের হাতে মোট ২৯৪ জন বাংলাদেশী নিহত হন।

বছরভিত্তিক সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ২০০৯ সালে সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের হাতে মারা যান ৬৬ জন বাংলাদেশী, ২০১০ সালে ৫৫ জন, ২০১১ ও ২০১২ সালে ২৪ জন করে, ২০১৩ সালে ১৮ জন, ২০১৪ সালে ২৪ জন, ২০১৫ সালে ৩৮ জন, ২০১৬ সালে ২৫ জন, ২০১৭ সালে ১৭ জন এবং ২০১৮ সালে ৩ জন মারা যান সীমান্তে। তবে বেসরকারি সংস্থাগুলোর হিসাবে সীমান্তে হত্যার সংখ্যা অনেক বেশি।