স্কুলের পাশে বিড়ি-সিগারেট বিক্রি বন্ধের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশে সিগারেট ও তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে তামাক ও মাদকদ্রব্য থেকে মুক্ত করতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে দেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং প্রতিষ্ঠানের পাশে ধূমপান ও তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার, বিক্রি, প্রদর্শন ও বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার পরিবেশ ও শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার, বিক্রি, প্রদর্শন ও বিজ্ঞাপন প্রচারণা বন্ধে দেশে সুনির্দিষ্ট আইনরয়েছে। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ ও শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্য নিরাপদ রাখতে গত বছর উদ্যোগ নেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়। ক্লাসরুমসহ পুরো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও এর আশপাশের এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনের দেয়াল ঘেঁষে মার্কেট না রাখা বিষয়ে পরিপত্র ও নির্দেশনাও জারি করে মন্ত্রণালয়। এ ধারাবাহিকতায় গত বছর ১২ ডিসেম্বর তামাকজাত পণ্য ব্যবহার বন্ধসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরে ও আশপাশে বিক্রি, প্রদর্শন ও বিজ্ঞাপন প্রচারণা বন্ধের আদেশ জারি করা হয়।

আদেশের পর গত ৮ জানুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানকে তা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়।

প্রসঙ্গত, দেশে ধূমপান বা তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আইন রয়েছে। ২০১৩ সালে সংশোধিত ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইনে বলা হয়েছে পাবলিক প্লেসে ধূমপান করলে অনধিক ৩০০ টাকা জরিমানা দিতে হবে। আর পাবলিক প্লেস বলতে আইনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি অফিস, আধা সরকারি অফিস, স্বায়ত্বশাসিত অফিস ও বেসরকারি অফিস, গ্রন্থাগার, লিফট, আচ্ছাদিত কর্মক্ষেত্র, হাসপাতাল ও ক্লিনিক ভবন, আদালত ভবন, বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর, নৌ-বন্দর, রেলওয়ে স্টেশন, বাস টার্মিনাল, বিপণি বিতান, চারদিকে দেয়াল দিয়ে আবদ্ধ রেস্টুরেন্ট, পাবলিক টয়লেট, শিশুপার্ক, মেলা বা পাবলিক পরিবহনে আরোহনের জন্য যাত্রীদের অপেক্ষার জন্য নির্দিষ্ট সারি, জনসাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা সময় সময় ঘোষিত অন্য যেকোনও বা সব স্থানকে বোঝানো হয়েছে।

দেশে এই আইন প্রচলিত থাকলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বা আশেপাশে ধূমপানসহ মাদকদ্রব্যের ব্যবহার বন্ধ হয়নি। এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দেয়াল ঘেঁষে পান সিগারেটের দোকান গড়ে উঠেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশে সিগারেট ও পানের দোকান জমজমাটভাবেই চলছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দেয়ালে লাগানো হয় সিগারেটর বিজ্ঞাপন। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ঘিরে গড়ে ওঠে তামাকজাত পণ্যের ব্যবসা।