সেই শ্যামল কান্তির বিরুদ্ধে চার্জগঠন

পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি সহকারী শিক্ষিকা মোর্শেদা বেগমকে এমপিও ভুক্তি করে দেয়ার ভুয়া প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণামূলকভাবে ঘুষ গ্রহণের মামলায় প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে বুধবার চার্জ গঠন করা হয়েছে। আগামী ১২ ডিসেম্বর উক্ত মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
 tribunal
এর আগে শ্যামল কান্তি ভক্তের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান মামলা থেকে শ্যামল কান্তি ভক্তকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করলে উক্ত আবেদন নামঞ্জুর করে দেয় আদালত।
বুধবার নারায়ণগঞ্জ আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-৩ এর বিচারক আকতারুজ্জামান পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে সরকারি শিক্ষিকা মোর্শেদা বেগমের দায়ের করা মামলা শুনানিতে এ নির্দেশ প্রদান করেছেন। শুনানিকালে মামলার বাদী মোর্শেদা বেগম ও আসামি শ্যামল কান্তি ভক্ত উভয়েই উপস্থিত ছিলেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী হিসেবে অ্যাডভোকেট সিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে আরো অংশ নিয়েছে অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল, অ্যাডভোকেট মহসিন মিয়া, অ্যাডভোকেট সুইটি ইয়াসমিন, অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান কাজল সহ অন্যান্যরা। শুনানিতে অংশ নেয়া অ্যাডভোকেট মহসিন মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর এমপিওভুক্ত করে দেয়ার নাম করে শ্যামল কান্তি ভক্ত ইংরেজি শিক্ষক মোর্শেদা বেগমের কাছ থেকে প্রথমে ৩৫ হাজার টাকা উেকাচ গ্রহণ করে। পরবর্তীতে শ্যামল কান্তি ভক্ত আরো ১ লাখ টাকা দাবি করলে মোর্শেদা বেগম তাকে আরো ১ লাখ টাকা সহ মোট ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা প্রদান করেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত শিক্ষক মোর্শেদা বেগমের এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন কোনো স্থানেই প্রেরণ করেনি।
প্রসঙ্গত ধর্ম অবমাননা ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিফাতকে বেদম পিটুনি দিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগে ২০১৬ সালের ১৩ মে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে কান ধরে উঠবসের ঘটনার ঘটে। ওই দিন কয়েক হাজার বিক্ষুদ্ধ নারী-পুরুষ শ্যামল কান্তির ফাঁসির দাবিতে স্কুল মাঠে জড়ো হয়ে শ্যামল কান্তির উপর কয়েক দফায় হামলা চালায়।  ১৩ মে শুক্রবার সকাল ১০ থেকে এ ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আহম্মেদ, বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম, উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা মৌসুমী হাবিব, বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম এ রশিদ, উপজেলা চেয়ারম্যান ও থানা বিএনপির সভাপতি আতাউর রহমান মুকুল, জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের, স্থানীয় চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আ.ক.ম নুরুল আমিন সহ বিভিন্ন প্রশাসনি কর্মকর্তাবৃন্দ। ঘটনার এক পর্যায় বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী হাবিব একাধিকার স্থানীয় সাংসদ সেলিম ওসমানের মোবাইলে ফোন করে তাকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার অনুরোধ করেন। পরবর্তীতে বিকেল ৪টায় সাংসদ সেলিম ওসমান তার ঢাকার বাসা থেকে বন্দর কল্যান্দি এলাকায় ঘটনাস্থলে গিয়ে উপস্থিত হন। সেখানে উপস্থিত হয়ে সাংসদ সেলিম ওসমান বিক্ষুদ্ধ জনতার হাত থেকে শ্যামল কান্তি ভক্তকে উদ্ধার করেন।