সিনহা হত্যা: পঞ্চম দফায় সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে

নিউজ ডেস্ক: সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার ২০তম সাক্ষী বেবী বেগমকে আসামির আইনজীবীর জেরার মধ্য দিয়ে পঞ্চম দফায় প্রথম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম জানান, রোববার সকাল সোয়া ১০টায় জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে এ বিচারকাজ শুরু হয়।

এর আগে গত ২৩ থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত মামলার প্রথম দফার সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এতে সাক্ষ্য দেন মামলার বাদী ও সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস এবং ২ নম্বর সাক্ষী ঘটনার সময় সিনহার সঙ্গে একই গাড়িতে থাকা সঙ্গী সাহেদুল সিফাত। পরে দ্বিতীয় দফায় ৪ দিনে চারজন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। তৃতীয় দফায় তিন দিনে পর্যন্ত ৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। মামলায় চতুর্থ দফায় দুই দিনে ছয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। পঞ্চম দফায় ২১তম আসামিসহ মামলার আরও ৬৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে।

রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে মামলার ১৫ আসামিকে প্রিজন ভ্যান করে কড়া পুলিশ পাহারায় আদালতে আনা হয়।

পিপি ফরিদুল বলেন, মামলায় সাক্ষ্যদানের জন্য ৮৩ জন সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত ৫৯ জনকে আদালত নোটিশ দিয়েছিলেন। গত ২৩ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া সাক্ষ্যগ্রহণের চতুর্থ দফা পর্যন্ত ২০ জনের জবানবন্দি নেওয়া হয়। চতুর্থ দফায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর আসামি পক্ষের আইনজীবীদের জেরা অসম্পূর্ণ থেকে গিয়েছিল। যে কারণে আবারও বেবী বেগমকে জেরা করা হয়। ২২ সেপ্টেম্বর আদালত সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরার জন্য আজকের তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন।

রোববার সকাল সোয়া ১০টায় চতুর্থ দফায় শেষ দিনে ২০তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেওয়া টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের লম্বাবিল এলাকার বাসিন্দা বেবী বেগমকে আসামির আইনজীবীদের জেরার মধ্য দিয়ে আদালতের বিচারকাজ শুরু হয়। বেবী বেগমকে আসামির আইনজীবীদের জেরার পর পঞ্চম দফায় প্রথম দিনে ২১তম সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হবে।

পঞ্চম দফায় প্রথম দিনে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ৯ জন সাক্ষী আদালতে উপস্থিত রয়েছেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী।

গত বছর ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।

এ ঘটনায় গত বছর ৫ আগস্ট সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় লিয়াকত আলীকে। আদালত মামলার তদন্ত ভার দেওয়া হয় র‍্যাবকে।

ঘটনার ৬ দিন পর ওসি প্রদীপ ও পরিদর্শক লিয়াকতসহ ৭ পুলিশ সদস্য আত্মসমপর্ণ করেন। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় একটি এবং রামু থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করেন।

পরে র‍্যাব পুলিশের দায়ের মামলার ৩ সাক্ষী এবং শামলাপুর চেকপোস্টে দায়িত্বরত আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) এর ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। এরপর গ্রেপ্তার করা হয় টেকনাফ থানা পুলিশের সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মাকে। সর্বশেষ গত ২৪ জুন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন টেকনাফ থানার সাবেক এএসআই সাগর দেব।

গত বছর ১৩ ডিসেম্বর র‍্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের তৎকালীন দায়িত্বরত সহকারি পুলিশ সুপার খাইরুল ইসলাম ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।