বিএনপি-জামাত জোট ইসরাইলের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

নিউজ নাইন২৪, ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিযোগ করেছেন, বিএনপি-জামাত জোট বর্তমান সরকারকে উৎখাতে ইসরাইলের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। তিনি দেশের জনগণকে এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহবান জানান।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামাত এখন এতটাই বেপরোয়া যে, তারা সকলে মিলে এখন আমাকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র করছে। সত্য কোনদিন চাপা থাকে না। তারা (বিএনপি-জামাত) যাদের সাথে হাত মিলিয়েছে তারা প্রতিনিয়তই ফিলিস্তিনে নারী ও শিশু হত্যা করে যাচ্ছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বাংলা প্রবাদ উদ্বৃত করে বলেন-‘রতনে রতন চেনে’।

প্রধানমন্ত্রী গতকাল সন্ধ্যায় লন্ডনের সেন্ট জেমস কোর্ট হোটেলে অবস্থানকালীন সময়ে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন।

ইসরাইলের রাজনৈতিক এবং গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে সরকার উচ্ছেদের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে পুলিশের হাতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী গ্রেফতার হবার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

ষড়যন্ত্রকারীদের দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখার আজবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি জামাত দেশের বিরুদ্ধে যেমন ষড়যন্ত্র করে চলেছে তেমনি ইসলামের বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘কুচক্রী এবং ঘাতকচক্র দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, ইসলামের বিরুদ্ধেও তাদের ষড়যন্ত্র চলছে । তারা আসলে বাংলাদেশ চায় না এবং তারা নিজেদের স্বার্থ ছাড়া আর কিছুই বোঝে না।’

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি জামাত জোট ক্ষমতায় থাকতে অসংখ্য মানুষ হত্যা এবং সীমাহীন দুর্নীতি ও লুটতরাজ করেছে। এখন তাদের সেই চরিত্রের কোন পরিবর্তন হয় নি।

৫ জানুয়ারির নির্বাচন বানচাল এবং সরকার উৎখাতের জন্য গত বছরের প্রথম ৩ মাসে বিএনপি-জামাতের মানুষ হত্যা ও নৈরাজ্যের প্রসংগ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘পোড়া মানুষের লাশের উপর দিয়ে তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যেতে চেয়েছিল।’

তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন ঘোষণা দিয়েছিলেন- সরকার উৎখাত না করে ঘরে ফিরবেন না এবং তার আন্দোলন ছিল, মানুষ হত্যার আন্দোলন।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য থেকে সে সময় সাধারণ মানুষ এমনকি নারী,শিশু,কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী পর্যন্ত রেহাই পায়নি । সেই দুঃসহ পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য বেগম জিয়া আজ পর্যন্ত দেশবাসীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেনি।’

শেখ হাসিনা বলেন, সাধারণ জনগণ বিএপি-জামাতের সেই জঘন্য অপরাধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসীদের পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

তিনি বলেন, সাধারণের প্রতিরোধের মুখে বিএনপি-জামাত তাদের সন্ত্রাস বন্ধ করে লেজ গুটিয়ে পালাতে বাধ্য হয়। পাপ বাপকেও ছাড়েনা, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

বিএনপি-জামাত অপরাধী চক্র ২০১৩ ও ২০১৪ এবং ২০১৫ সালের প্রথম তিন মাসে সারা দেশে প্রকাশ্য দিবালোকে মানুষ হত্যা করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণ কিন্তু এসব হত্যাকান্ডকে সমর্থন করেনি এমনকি আন্তর্জাতিক মহলও না।

দেশের সাস্প্রতিক কিছু গুপ্তহত্যা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন তারা মসজিদের ইমাম,মন্দিরের পুরোহিত, গীর্জার পাদ্রী এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বেছে বেছে খুন করছে।

তিনি বলেন, ‘তারা সম্প্রতি ইউএসএআইডি’র কর্মকর্তা এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা.দিপু মনির কাজিনকে হত্যা করেছে এবং ঘটনাকে অতিরঞ্জিত করেছে।’

বিএনপি-জামাত মানুষ হত্যা ছাড়া আর কিছুই বোঝে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

দেশে য্দ্ধুাপরাধীদের বিচার চলায় এবং একের পর এক রায়ে তাদের ফাঁসি কার্যকর হতে থাকায় একাত্তরের পরাজিত শক্তি মোটেও স্বস্তিতে নেই বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা সারা দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে এবং গণহত্যা চালায় তারাই যুদ্ধাপরাধী হিসেবে আদালতে চিন্থিত হয়েছে এবং বিচারের রায়ে তাদেরই ফাঁসির দন্ড কার্যকর করা হচ্ছে।

যুদ্ধাপরাধীদের বিএনপি-জামাতের মন্ত্রীত্ব প্রদান সম্পর্কে তিনি বলেন, যারা আমাদের রক্ত¯œাত জাতীয় পতাকা এসব মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের হাতে তুলে দিয়েছিল তাদের ও বিচার করা হবে। তারাও সমান অপরাধে অপরাধী।

আমাদের রক্ত¯œাত জাতীয় পতাকাকে পরাজিত শক্তির হাতে তুলে দেয়া চক্রকে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির ঘৃণা করা উচিত উল্লেখ করে এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা এমনভাবে হওয়া উচিত যেন পরাজিত শক্তি এই ঘৃণাটা উপলদ্ধি করতে পারে।’

পঁচাত্তর পরবর্তী স্বৈরশাসকদের ইতিহাস বিকৃতির ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পঁচাত্তর পরবর্তি সময়ে তারা পরাজিত শক্তির সঙ্গে মিলে দেশের গৌরবজ্জ্বল ইতিহাস এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধূলিস্মাৎ করার ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে।’

প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় সরকারের নানাবিধ সাফল্যের তথ্য তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোলমডেল। বাংলাদেশকে এখন আর কেউ অবহেলার চোখে দেখে না।’