সরকারি হিসাবে সীমান্ত হত্যা বেড়েছে ১২ গুণ

এলাচের কেজি ৬০০০ টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক: নানা প্রতিশ্রুতির পরও সীমান্ত হত্যা কমছে না। আর গত তিন বছরের হিসাবে সবচেয়ে বেশি সীমান্ত হত্যা হয়েছে গত বছর (২০১৯) সর্বশেষ দিল্লীতে গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত বৈঠকের পরও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি নেই।

গত ২৫ থেকে ৩০ ডিসেম্বর ভারতের রাজধানী দিল্লীতে বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ে সীমান্ত সম্মেলন হয়। সেখানে হত্যা কমিয়ে আনা নিয়েও আলোচনা হয়। বাংলাদেশ থেকে বিজিবি মহাপরিচালকের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল এবং ভারতের বিএসএফ মহাপরিচালক জোহরীর নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল ওই সম্মেলনে অংশ নেয়।

ঢাকায় ফিরে ২ জানুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম সীমান্ত হত্যা নিয়ে বলেন, এই বিষয়ে বিএসএফ মহাপরিচালকের সঙ্গে আলোচনা করেছি।আমরা আমাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছি। বিএসএফ মহাপরিচালককে আমাকে আশ্বস্ত করেছেন। ওনারা এ বিষয়ে আরও সতর্ক ও সজাগ থাকবেন। যেন সীমান্তের এই অনাকাঙ্খিত হত্যাকা- এভয়েড করা যায়।

তিনি জানান, ২০১৯ সালে সীমান্তে ৩৫ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। কিন্তু বিএসএফ-এর হিসেবে এই সংখ্যা আরো কম। আর সরকারি হিসেবে ২০১৮ সালে সীমান্তে তিনজন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। ২০১৭ সালে ১৭ জন। কিন্তু বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা আরো বেশি। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের(আসক) হিসেবে ২০১৯ সালে সীমান্তে ৪৩ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে গুলিতে ৩৭ জন এবং নির্যাতনে ছয় জন। আহত হয়েছেন ৪৮ জন। অপহৃত হয়েছেন ৩৪ জন। ২০১৮ সালে নিহত হয়েছেন ১৪ জন। আর ২০১৭ সালে ২৪ জন। সরকারি হিসাব ধরলে ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে সীমান্ত হত্যা বেড়েছে ১২ গুণ। আর বেসরকারি হিসাবে তিনগুণের বেশি।

সীমান্ত হত্যা কমিয়ে আনতে বাংলাদেশ ও ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই প্রতিশ্রুতি শুধু সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মহাপরিচালক পর্যায়েই রাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায় থেকেও দেয়া হয়েছে। সীমান্তে প্রাণঘাতী বা ‘লিথাল উইপন’ ব্যবহার না করার ব্যাপারেও দুই দেশ প্রতিশ্রুতবদ্ধ। ২০১৮ সালের এপ্রিলে ঢাকায় দুই দেশের সীমান্ত সম্মেলনেও এই সিদ্ধান্তের কথা বলা হয়। কিন্তু তা বাস্তবে কার্যকর হচ্ছে না। সীমন্তে বিএসএফ-এর হাতে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা বাড়ছেই।

পশ্চিমবঙ্গ-ভিত্তিক ভারতীয় মানবাধিকার সংগঠন, মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের (মাসুম) প্রধান জানায়, আগে বিএসএফ বলতো আমাদের ওপর আক্রমন করতে এলে আমরা আত্মরক্ষার্থে গুলি করেছি। লাশ ফেরত দিতো। এখন আর তাও বলেনা। গুলি করে হত্যার পর লাশ নদীতে ফেলে দেয়। ফেরতও দেয় না।

সে জানায়, ভারত তো একটা হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। তারা তো সীমান্ত হত্যা বন্ধ করবেনা। সীমান্তে মুসলমানদের মারছে। আর ঠেলে বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে। আমরা প্রতিটি ঘটনার প্রতিবাদ করছি। কিন্তু ভারত হত্যা করবেই সে থামবে না। তারা মারছে তো মারছেই। কিন্তু বাংলাদেশের দিক দিয়ে শক্ত কোনো প্রতিবাদ দেখতে পাচ্ছিনা। মেরে দিচ্ছে কোনো বিচার নাই।