শেয়ারবাজারে অনিয়ম: ছয় প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

১০ বছর পর শেয়ারবাজারে টানা চাঙাভাব

নিউজ ডেস্ক : শেয়ারবাজারে অনিয়মের দায়ে ৬ প্রতিষ্ঠানকে ১ কোটি ৭২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

এর মধ্যে ইনটেক লিমিটেডের ৪ পরিচালকের ২৫ লাখ টাকা করে ১ কোটি টাকা, এমআই সিমেন্টের ৫ পরিচালকের ১০ লাখ টাকা করে ৫০ লাখ, আল ফারুক ব্যাগের ১০ লাখ টাকা, প্রতিষ্ঠানটির ২ ইস্যু ম্যানেজার বিএমএসএল ইনভেস্টমেন্ট ও আইআইডিএফসি ক্যাপিটালের ৫ লাখ করে ১০ লাখ টাকা এবং আর্টিসান চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

বিএসইসির কমিশন সভায় বুধবার এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

জানা গেছে, আল ফারুক ব্যাগস ভিন্ন নিরীক্ষকের পরিবর্তে বিধিবদ্ধ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান আর্টিজান চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের মাধ্যমে কর্পোরেট গভর্ন্যান্স কোড পরিপালন সনদ দিয়েছে।

আইপিও সংক্রান্ত আর্থিক বিবরনীতেও এ তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আর এ কোম্পানির ইস্যু ম্যানেজার বিএমএসএল ইনভেস্টমেন্ট ও আইআইডিএফসি ক্যাপিটাল এবং কোম্পানি আইপিও প্রসপেক্টাসে সব তথ্য যথাযথ আছে মর্মে ঘোষণাপত্র এবং ডিউ ডিলিজেন্স সনদ দিয়েছে।

এর মাধ্যমে ইস্যু ম্যানেজার, নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মূল কোম্পানি পাবলিক ইস্যু রুলসের ১৬ ধারা এবং কমিশনের নির্দেশনা লঙ্ঘন করেছে। এ কারণে আল ফারুক ব্যাগসকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

এছাড়া ইস্যু ম্যানেজার বিএমএসএল ইনভেস্টমেন্ট ও আইআইডিএফসি ক্যাপিটালকে ৫ লাখ টাকা করে এবং নিরীক্ষা আর্টিসানকে প্রতিষ্ঠানকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

ইনটেক লিমিটেড ব্যবসা ভিন্নখাতে সম্প্রসারণের তথ্য বার্ষিক সাধারণ সভায় সাধারণ এজেন্ডার অধীনে আলোচনা করেনি। এছাড়া কোম্পানির রিসোর্ট প্রজেক্ট শুরুর করার বিষয়ে বিধি মোতাবেক মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করেনি।

একইসঙ্গে মৎস্য খাতে ব্যবসা শুরু সম্পর্কে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করেনি এ প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি বিভিন্ন নতুন খাতে বিনিয়োগ করা এবং বিনিয়োগ ফেরত আনা সম্পর্কে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিতটি নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা লঙ্ঘন করেছে। এজন্য কোম্পানির প্রত্যেক পরিচালককে (স্বতন্ত্র ও মনোনীত পরিচালক ব্যাতীত) ২৫ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। বর্তমানে কোম্পানির পর্ষদে ৪ জন পরিচালক রয়েছে। ফলে এদের মোট জরিমানার পরিমাণ দাঁড়াবে ১ কোটি টাকা।

অন্যদিকে এমআই সিমেন্ট ২০১৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে ‘কারেন্ট অ্যাকাউন্ট উইথ দ্য সিস্টার কনসার্ন’ হিসাব শিরোনামে ৭০ কোটি ৪০ লাখ টাকা দেখিয়েছে।

যা প্রকৃতপক্ষে ইস্যুয়ার কোম্পানির সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুদবিহীন ঋণ হিসেবে দেয়া হয়েছে। ওই ঋণ দেয়ার আগে কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভায় অনুমোদন নেয়া হয়নি।

এছাড়া কোম্পানির পূর্ববর্তী বছরগুলোর নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনেও বর্ণিত হিসাব শিরোনামে সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুদবিহীন ঋণ দেয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়।

ওই সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো ইস্যুয়ার কোম্পানির পরিচালকদের শতভাগ মালিকানাধীন রয়েছে। এ ধরনের কাজের মাধ্যমে এমআই সিমেন্ট কমিশনের নির্দেশনা লঙ্ঘন করেছে।

এ লঙ্ঘনের জন্য কোম্পানিটির প্রত্যেক পরিচালকে (স্বতন্ত্র ও মনোনীত পরিচালক ব্যতীত) ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এতে বর্তমানে কোম্পানির ৫ জন পরিচালকের জরিমানার পরিমাণ দাঁড়াবে ৫০ লাখ টাকা।