শরীয়ত বিরোধী মন্তব্য করায় জাফর ইকবালকে লিগ্যাল নোটিশ

ষ্টাফ রিপোর্টার :  গত ২৬ এপ্রিল বিডি নিউজ ব্লগের মতামত বিভাগে প্রকাশিত জাফর ইকবালের লিখিত “প্রিয় নুসরাত” প্রবন্ধে সম্মানিত শরীয়ত বিরোধী মন্তব্য করায় (মঙ্গলবার) রেজিষ্ট্রীডাকে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশটি পাঠান দৈনিক আল ইহসান ও মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকার সম্পাদক আল্লামা মাহবুব আলমের পক্ষে সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবি ব্যারিষ্টার এডভোকেট এবিএম গোলাম মোস্তফা তাজ।
নোটিশে বলা হয়, অধ্যাপক জাফর ইকবালের লিখিত ‘প্রিয় নুসরাত’ প্রবন্ধের এক পর্যায়ে সে তার নিজ জীবনের কটি ঘটনা উল্লেখ করে এবং নিজস্ব মন্তব্য প্রকাশ করে, যাহা সম্পূর্নভাবে শরীয়ত বিরোধী এবং নোটিশদাতাসহ অপরাপর দ্বীনদার মুসলমানগণের দ্বীনি অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে।
পবিত্র কুরআন শরীফে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চই মহান আল্লাহ পাক তিনি সব বিষয়ের উপর পূর্ণ ক্ষমতাবান। সুবাহানাল্লাহ! কাজেই মহান আল্লাহ পাক তিনি শুধু একজন বান্দার নয়, বরং সমূদ্বয় সব বান্দার। তিনি নিমিষেই ক্ষমা করার অধিকারী।
পবিত্র কুরআন শরীফে মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “কিন্তু যারা তওবা করে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের গুনাহকে নেকী দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” [পবিত্র সূরা ফুরকান, পবিত্র আয়াত শরীফ: ৭০] সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য যদি কেউ বান্দার হক্ব নষ্ট করে আর সত্যিকারের তওবা করে তবে মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজের থেকেই সেই ক্ষতিগ্রস্থ বান্দাকে খুশি করার ব্যবস্থা করেন। আর তওবা তাকেই বলে যখন বান্দা সত্যিকার অর্থেই অনুতপ্ত হয় এবং সেগুনাহ আর না করার ইচ্ছা করে।
পবিত্র কুরআন শরীফে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হে হাবীব সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপনি বলুন, হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজেদের উপর বাড়াবাড়ি করেছ তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত থেকে নিরাশ হয়োনা। অবশ্যই মহান আল্লাহ পাক তিনি সকল পাপ ক্ষমা করে দেন। নিশ্চিই তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (সূরা আল জুমার, পবত্রি আয়াত শরীফ: ৫৩)
আর পবত্রি হাদীস শরীফে ইরশাদ মুবারক করা হয়েছে, “তোমরা প্রত্যেকে গুনাহগার। উত্তম গুনাহগার হলো যে বেশি বেশি তাওবা করেন” এবং হাদীস শরীফে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “আল্লাহ পাক তিনি উনার বান্দার গুনাহকে এমনভাবে ক্ষমা করেন যেন বান্দা নিষ্পাপ শিশুর মত হয়ে যায় অর্থ্যাৎ তার যেন কোন গুনাহক্ষতাই ছিলনা। এমনকি মহান আল্লাহ পাক বান্দার ঐ গুনাহকে নেকীতে পরিনত করে দেন।” মুলত মহান আল্লাহ পাক কুল-কায়িনাত সমস্ত কিছুর মালিক এবং তিনি অসীম ক্ষমতাশীল এবং অসীম দয়ালূ সুতরাং আল্লাহ পাক সমস্ত কিছুই করতে পারেন। সুতরাং গুনাহ ক্ষমার বিষয়ে জাফর ইকবালের মনগড়া মন্তব্য সম্পূর্নরুপে শরীয়ত বিরোধী এবং বিভ্রান্তিকর।
আগামী তিন দিনের মধ্যে জাফর ইকবালকে তার শরীয়ত বিরোধী বক্ত্যেব প্রত্যাহার করে উক্ত ব্লগেই পুনরায় সঠিকভাবে তার লেখঅ প্রকাশ করার এবং ভবিষ্যতেও উক্ত বক্তব্য/মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে নোটিশে জানানো হয়।
জাফর ইকবালের করা উক্ত মন্তব্যটি হলো, “বেশ কয়েক বছর আগে একবার একটি ঈদে ও জামাতে লক্ষ্য করেছি। নামাজ শেষে দোয়া করার সময় ইমাম সাহেব খোদার কাছে প্রার্থনা করলেন- খোদা যেন উপস্থিত সবার সব গুনাহ মাফ করে দেন। একজন মানুষ অনেক বড় একটি অপরাধ করার পর তার যদি সব গুনাহ মাফ হয়ে যায়, তার নিশ্চয়ই বিবেকের যন্ত্রাণা থাকে না। শুধু তাই নয় পরকালে নরক যন্ত্রণা নিয়েও তার কোনো ভয় থাকে না। তবে আমি শুধু গুনাহ্ মাফ করে দেওয়ার প্রার্থনার কথা লিখতে বসিনি। এরপর তিনি খোদার কাছে যে প্রার্থনা করলেন সেই কথাটি শুনে আমি রীতিমত চমকে উঠলাম। তিনি খোদা কাছে প্রার্থনা করলেন, খোদা যেন সেখানে উপস্থিত সবার গুনাহ্কে সওয়াবে পরির্বতন করে দেন। আমি নিশ্চিত সেখানে উপস্থিত যারা ছিল তাদের ভেতর যে যত বড় অপরাধী তার মুখে তত বড় আনন্দের হাসি ফুটে উঠেছিল? শুধু যে তাদের অপরাধের কোনো দায়-দায়িত্ব নেই তা নয়, যে যত বড় অপরাধ করেছে সে পরকালে তত বড় সৌভাগ্যের অধিকারী হবে। কী আনন্দ! আমি নিশ্চিত এগুলো ধর্মের সঠিক ব্যাখ্যা নয়, যারা সত্যিকারের ধর্ম পালন করেন, ধর্মকে মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করেন তারা এই বিষয়গুলো ঠিকভাবে ব্যাখ্যা করতে পারবেন।”