শবে বরাতে হালুয়া-রুটি প্রস্তুত ও বিতরণ করার সঠিক ইতিহাস

শবে বরাত এলেই মুসলিমদের ঘরে ঘরে চলে ভিন্ন আয়োজন। ইবাদত বন্দেগীর পাশাপাশি মেহমানদারি, আপ্যায়নের প্রস্তুতিও চলে সমানতালে। শব বরাত উপললক্ষে হালুয়া রুটি বা গোস্ত রুটি তৈরি করে নিজের পরিবারকে নিয়ে খাওয়া ও প্রতিবেশিদের খাওয়ানো এটা শুধু বাংলার ঐতিহ্য নয়, বরং যুগে যুগে আরব দেশ থেকেই এই রেওয়াজ চলে আসছে।

পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে মুসলিম দেশগুলোতে যে হালুয়া-রুটি বা গোস্ত রুটির ব্যাপক প্রচলন রয়েছে তার পিছনে ইতিহাস রয়েছে।

এতে উল্লেখ করা হয়েছে, পূর্ববর্তী যামানায় বর্তমানের মতো বাজার, বন্দর, হোটেল-রেস্তোরাঁ ইত্যাদি সর্বত্র ছিল না। তখন মানুষ সাধারণত সরাইখানা, লঙ্গরখানা, মুছাফিরখানা ইত্যাদিতে সফর অবস্থায় প্রয়োজনে রাত্রিযাপন করতেন। অর্থাৎ মুসাফিরগণ তাদের সফর অবস্থায় চলার পথে আত্মীয়-স্বজন বা পরিচিত জনের ঘর-বাড়ি না পেলে সাধারণত সরাইখানা, মুসাফিরখানা ও লঙ্গরখানায় রাত্রিযাপন করতেন। আর এ সমস্ত মুসাফিরখানা, লঙ্গরখানা ও সরাইখানার দায়িত্বে যারা নিয়োজিত থাকতেন তারাই মুসাফিরদের খাবারের ব্যবস্থা করতেন।

বিশেষ করে মুসাফিরগণ উনারা পবিত্র লাইলাতুল বরাত শরীফ উনার মধ্যে যখন উল্লিখিত স্থানসমূহে রাত্রি যাপন করতেন তখন উনাদের মধ্যে অনেকেই রাত্রিতে ইবাদত-বন্দেগী করতেন ও পরের দিন রোযা রাখতেন। যার কারণে উল্লিখিত স্থানসমূহের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিগণ উনারা খাবারের ব্যবস্থা করতেন যাতে মুসাফিরদের রাত্রে ইবাদত-বন্দেগী করতে ও দিনে রোযা রাখতে অসুবিধা না হয়।

আর যেহেতু হালুয়া-রুটি ও গোশত-রুটি খাওয়া সুন্নত, সেহেতু উনারা হালুয়া-রুটি বা গোশত-রুটির ব্যবস্থা করতেন। এছাড়াও আরবীয় এলাকার লোকদের প্রধান খাদ্য রুটি-হালুয়া বা রুটি-গোশত। উনারা ভাত, মাছ ইত্যাদি খেতে অভ্যস্ত নন। সেখান থেকে পর্যায়ক্রমে লাইলাতুল বরাত উপলক্ষে হালুয়া-রুটির প্রচলন আমাদের দেশে ছড়িয়ে পড়ে।